ইংল্যান্ডের জাতীয় সংগীত এতদিন ঈশ্বরের কাছে রানির জন্য প্রার্থনা জানিয়ে এসেছে। কিন্তু রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর কি বদলে যাবে দেশের জাতীয় সংগীত? কী জানাচ্ছে ব্রিটেনের রাজকীয় কানুন? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
৯৬ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। রানিকে সম্মান জানিয়েই এতদিন ইংল্যান্ডের জাতীয় সংগীত হিসেবে গাওয়া হয়ে এসেছিল ‘গড সেভ দ্য কুইন’, অর্থাৎ ঈশ্বর রানিকে রক্ষা করুন। রানির দীর্ঘজীবনের জন্যও প্রার্থনা জানাত এই সংগীত। তবে কেবল ইংল্যান্ডেই নয়, বস্তুত ইউনাইটেড কিংডম অর্থাৎ যুক্তরাজ্য এবং এর কয়েকটি প্রাক্তন উপনিবেশের সমন্বয়ে গঠিত মৈত্রী জোটেরও জাতীয় সংগীত হিসেবে প্রচলিত ছিল ‘গড সেভ দ্য কুইন’। এইসব দেশগুলির মধ্যে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জামাইকা, গ্রানাডা, পাপুয়া-নিউগিনির মতো একাধিক দেশ যেমন রয়েছে, তেমনই ১৯৭৭ সাল থেকে এই গানটিকেই নিউজিল্যান্ড তাদের দুই জাতীয় সংগীতের অন্যতম বলে স্বীকৃতি দিয়েছে। যদিও এই গান কার লেখা সে কথা জানা যায় না। তবে গানটিতে সুর দিয়েছিলেন ব্রিটিশ কম্পোজার জন বুল। গোটা গান জুড়েই বস্তুত রানির স্তুতি করা হয়েছে। আর সেই কারণেই, রানির মৃত্যুর পরে দেশের জাতীয় সংগীত কী হবে, তা নিয়ে কৌতূহল জেগেছিল অনেকের মধ্যেই।
আরও শুনুন: তিনশো হিরে খচিত বহুমূল্য প্ল্যাটিনামের নেকলেস! রানিকে উপহার দিয়েছিলেন হায়দরাবাদের নিজাম
কিন্তু ব্রিটিশ রাজনীতি মোতাবেক, জাতীয় সংগীতের একটি নয়, দুটি রূপ রয়েছে। একটিতে যেমন গাওয়া হয় ‘গড সেভ দ্য কুইন’, তেমনই অন্যটির প্রার্থনা, ‘গড সেভ দ্য কিং’। স্কটল্যান্ডের বালমোরাল প্রাসাদে রানি এলিজাবেথের প্রয়াণের পর ‘অপারেশন ইউনিকর্ন’ নামে তাঁর শেষকৃত্যের যে রাজকীয় প্রস্তুতি শুরু হয়েছে, তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ জাতীয় সংগীতের বদল। দীর্ঘদিন পরে কুইন শব্দের পরিবর্তে আবার জাতীয় সংগীতে ফিরে আসতে চলেছে কিং শব্দটি। পদাধিকারবলে রানি এলিজাবেথ ছিলেন ‘চার্চ অব ইংল্যান্ডের’ ধর্মবিশ্বাসের রক্ষক তথা শীর্ষ গভর্নর। সেখানকার ‘বুক অব কমন প্রেয়ার’ নামক প্রার্থনা সংগীতে রানির মঙ্গল কামনা করা হয়েছে। এবার রাজা তৃতীয় চার্লসের জন্য ঈশ্বরের করুণা কামনা করে প্রার্থনা সংগীতে সংশোধন-পরিমার্জনও হবে অপারেশন ইউনিকর্নের মাধ্যমে। সব মিলিয়ে, যে সব সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশ এখনও উইন্ডসর রাজবংশের প্রতীক ব্যবহার করে, রানির মৃত্যুতে পরিবর্তনের হাওয়া লাগছে সেই সব দেশেই।