বাচ্চাদের অদ্ভুতুরে কাণ্ড অনেকসময়ই আমাদের তাজ্জব করে দেয়। কখনও কখনও তা বেশ অস্বস্তিরও কারণ হয় বড়দের জন্য। কখনও আবার না বুঝে না শুনে এমন কাজকর্ম তারা করে বসে যা বিপদ ডেকে আনে। তেমনই দুঃসাহসীক কাজ করে ফেলেছে বছর নয়েকের এই খুদেও। বিমানে চড়ে একা একা চলে এসেছে সে প্রায় ৩ হাজার কিলোমিটার। তাও আবার বিনা টিকিটে! শুনে নিন খুদের সেই দুঃসাহসী কাণ্ডের কথা।
আজকাল কমবেশি সব বাচ্চাই যাকে বলে টেক স্যাভি। মোবাইল থেকে অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স জিনিস চালাতে ছোট থেকেই ওস্তাদ তারা। কেউ মায়ের ফোন থেকে এক ক্লিকে লক্ষাধিক টাকার আসবাবপত্র কিনে ফেলছে, তো কেউ আবার বিপদে আপদে মোবাইল ফোন থেকে ডেকে ফেলছে পুলিশকে। ইউটিউব দেখে শিখে ফেলছে অনেকেই অনেক কিছু। সব মিলিয়ে এখনকার বাচ্চারা যেন একটু বেশিই স্মার্ট। আজ যার গল্প আপনাদের শোনাব, তিনিও কিছু কম যান না। বাড়িতে কাউকে কিচ্ছু না জানিয়ে প্রায় ৩ হাজার কিলোমিটার রাস্তা সে সফর করেছে একা একা। তাও আবার বিনা টিকিটে। আর এই কাজে তাঁকে সাহায্য করেছে নাকি গুগল। কী ভাবে? আসুন শুনে নেওয়া যাক সেই গল্পই।
আরও শুনুন: মোবাইল নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি, লক্ষাধিক টাকার আসবাব অর্ডার করল খুদে! তারপর…
শনিবার বেশ ভোর ভোরই বিছানা ছেড়েছিল ৯ বছরের এই খুদে। তার পরেই হঠাৎ করে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় সে। প্রাথমিক ভাবে তার মা ভেবেছিলেন, বাড়ির আশপাশেই কোথাও রয়েছে সে। কিন্তু অনেকক্ষণ কেটে যাওয়ার পরেও ছেলেকে দেখতে না পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন বাড়ির লোকেরা। শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। পুলিশেরও দ্বারস্থ হন বাড়ির লোকেরা।
ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপূর্ব ব্রাজিলের মানাউসে। সেখানেই থাকত ইমানুয়েল মারকিউস নামে ওই খুদে। এদিকে ছেলেকে দীর্ঘক্ষণ খুঁজে না পেয়ে রীতিমতো কান্নাকাটি জুড়ে দেন ইমানুয়েলের মা ড্যানিয়েল।
আরও শুনুন: কার্টুন দেখে পুলিশকে ফোন করতে শেখা, মায়ের প্রাণ বাঁচাল ৩ বছরের খুদে
অবশেষে জানা যায়, বিমান ধরে সাও পাওলোর একটি শহরে এসে হাজির হয়েছে ইমানুয়েল। আর এই এতটা রাস্তা সে যাত্রা করেছে বিনাটিকিটে। সেখানে নাকি খুদের বেশ কয়েক জন আত্মীয়স্বজন থাকেন। জানা গিয়েছে, তাঁদের সঙ্গে দেখা করতেই সাও পাওলোয় চলে এসেছিল সে। ভাবছেন নিশ্চয়ই, বিমানবন্দরের এত নিরাপত্তা সত্ত্বেও কীভাবে সম্ভব হল এই ঘটনা। তা অবশ্য এখনও জানা যায়নি।
পুরো ঘটনাটির তদন্ত করতে সিসিটিভি ফুটেজ চেক করছে মানাউস বিমানবন্দর। কীভাবে নিরাপত্তা এড়িয়ে কোনওরকম কাগজপত্তর ছাড়াই এতটা পথ একা একা সে যাত্রা করল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি স্থানীয় পুলিশও বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করেছিল, বাড়িতে সমস্যার কারণেই পালিয়ে এসেছে শিশুটি। পরে অবশ্য জানা গিয়েছে, তেমন কিছু নয়। সাও পাওলোয় আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতেই বিমানে চেপে বসেছিল ওই খুদে।
একরত্তি ছেলের এমন সুঃসাহসীক বুদ্ধি দেখে তাজ্জব হয়ে গিয়েছেন নেটনাগরিকেরা। কোথা থেকে পেল সে এমন বুদ্ধি? ইমানুয়েলের বাবা-মা এ বিষয়ে আলোকপাত করতে পারেননি বটে। তবে জানা গিয়েছে, এর জন্য সে নাকি সাহায্য নিয়েছিল গুগলের। গুগলের দ্বারস্থ হয়ে সে জানতে চেয়েছিল, কী ভাবে কারওর চোখে না পড়ে, বিনা টিকিটে বিমানযাত্রা করা যায়? আর গুগল যে এ বিষয়ে তাকে সদুত্তর দিয়েছিল, তা তো খুদের কাণ্ডকারখানা দেখেই দিব্যি বোঝা যাচ্ছে।