রাবণের বিরুদ্ধে যে সম্মুখ সমরে নেমেছিল জটায়ু আর তার দাদা সম্পাতি, সে কথা তো সকলেই জানে। কিন্তু সে তো রামায়ণের কাহিনি। বাস্তবে মানুষের উলটো পক্ষে যুদ্ধ করতে দাঁড়িয়েছে পাখি, এমন কথাও কি শুনেছেন কখনও? না না, গল্প নয়, বিশ শতকে সত্যিই ঘটেছিল এমনই আজব কাণ্ড। আসুন, শুনে নেওয়া যাক এই অদ্ভুত যুদ্ধের কাহিনি।
মহাভারতের যুদ্ধের সাক্ষী ছিল ভূশণ্ডি কাক, এমন কথা শোনা যায় বটে। আর রামায়ণে তো সরাসরি মানুষ আর পাখির যুদ্ধই বেধেছিল। সীতাকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার সময় মরণপণ লড়াই করে রাবণকে বাধা দিয়েছিল জটায়ু। কিন্তু সে তো ছিল একা। তা ছাড়া এসবই তো মহাকাব্যের উদাহরণ। কিন্তু মানুষের বিরুদ্ধে দল বেঁধে যুদ্ধ করছে পাখিরা, আবার প্রয়োজনমতো বদলে নিচ্ছে রণকৌশল, এমন কথা তো ভাবতেও পারা যায় না। অথচ সেই অবিশ্বাস্য ঘটনাই ঘটেছিল গত শতকে। কীভাবে? তাহলে খুলেই বলা যাক।
আরও শুনুন: কেবল শান্তির দূত নয়, বিশ্বযুদ্ধে গুপ্তচরের কাজও করেছিল পায়রা
এমু পাখির নাম শুনেছেন নিশ্চয়ই? এরা উটপাখিরই জাতভাই। উড়তে পারে না, তবে দৌড়তে পারে দিব্যি। ওজনে প্রায় চল্লিশ কেজি, এবং উচ্চতার দিক থেকে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম পাখি। উনিশ শতক অব্দি অস্ট্রেলিয়াতে এমু শিকার নিষিদ্ধ ছিল, ফলে বিশ শতকে এদের সংখ্যা খুব বেড়ে গিয়েছিল। ১৯৩২ সালে এমুর সংখ্যা কমানোর জন্য উদ্যোগ নেয় সরকার। আর সেখান থেকেই যুদ্ধের সূচনা।
আরও শুনুন: স্রেফ একটি কুকুরের কারণেই দুই দেশের মধ্যে হল রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, জানেন এই ঘটনা?
আসলে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ তখন সবে শেষ হয়েছে। যুদ্ধফেরত সৈন্যরা বেকার। চার বছরের ভয়াবহ যুদ্ধের ফলে জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া। এই পরিস্থিতিতে সেনাদের বিকল্প জীবিকা হিসেবে কৃষিকাজে নিযুক্ত করেছিল অস্ট্রেলিয়া সরকার। কিন্তু আবাদি জমির পরিমাণ কম, অনেক ফসলের চাষ করতে না পারা, সব মিলিয়ে এই প্রকল্প লাভজনক হয়নি। অনেকেরই প্রচুর আর্থিক লোকসান হয়। এমুদের আটকানোর জন্য যে তারকাঁটার বেড়া দেওয়া হয়, সে ব্যবস্থা করাও সকলের পক্ষে সম্ভব হচ্ছিল না। ফলে চাষের জমিগুলি প্রায় কুড়ি হাজার এমুর জন্য মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়েছিল। তাদের জ্বালায় মাঠে ফসল রাখাই যেত না। গাদাবন্দুক দিয়ে এই বিরাট বাহিনীর মোকাবিলা করা সম্ভব নয় বুঝে সরকারের কাছে মেশিনগান দাবি করে সৈন্যরা।
শুনে নিন বাকি অংশ।