অরুণ যোগীরাজ কে, তা হয়তো কদিন আগেও অনেকেই জানতেন না। কিন্তু এখন আর সে কথা বলার উপায় নেই। রাম মন্দির উদ্বোধনের আবহে দেশজোড়া চর্চায় এবার উঠে এল তাঁর নামও।
যে রাম মন্দির ঘিরে এতদিনের সাজো সাজো রব, সেই মন্দিরে প্রতিষ্ঠা পাচ্ছেন কোন রামলালা? জানার জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনছিল গোটা দেশ। শেষ মুহূর্তে বিবেচনায় এসেছিল রামলালার তিন মূর্তির কথা। সেখান থেকে বাছাই করে শেষ পর্যন্ত সিলমোহর পড়েছে অরুণ যোগীরাজের তৈরি করা মূর্তিটিতে। শিল্পীর ছবি এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে চূড়ান্ত ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী। আর তারপরেই চর্চায় উঠে এসেছেন অরুণ যোগীরাজ।
আরও পড়ুন: রামের মঙ্গলকামনায় পুজো দেবেন মদ ও মাংস দিয়ে, গঙ্গার কাছে মানত সীতার
অরুণ যোগীরাজ কে, তা এমনিতে হয়তো অনেকেই জানেন না। তবে শিল্পী ভাস্করদের মধ্যে তিনি যথেষ্ট পরিচিত। কর্নাটকের মহীশূরের এই বাসিন্দা উঠে এসেছেন ভাস্করদের পরিবার থেকেই। পাঁচ প্রজন্ম ধরেই মূর্তি বানানোর কাজ করে আসছেন তাঁরা। যদিও অরুণ নিজে এমবিএ ডিগ্রিধারী। কিছুদিন বেসরকারি সংস্থায় চাকরিও করেছেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বংশের পেশাতেই ফিরে আসেন তিনি। ২০০৮ সালে ভাস্কর হিসেবে শুরু করেন কাজ। আর তারপর এই পরিচয়েই সকলের নজর কেড়ে নিয়েছেন কর্নাটকের এই শিল্পী।
এর আগেও একাধিকবার নতুন পালক যোগ হয়েছিল তাঁর মুকুটে। নয়াদিল্লির কর্তব্যপথে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর যে ৩০ ফুটের মূর্তি স্থাপিত হয়েছে, তা অরুণেরই তৈরি করা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও একটি ফুট দুয়েকের নেতাজি মূর্তি গড়ে উপহার দিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, কেদারনাথে আদি শঙ্করাচার্যের ১২ ফুটের একটি মূর্তি এবং মহীশূরে হনুমানের ২১ ফুটের মূর্তিও গড়েছেন এই শিল্পী। আগেই তাঁর প্রতিভার প্রশংসা শোনা গিয়েছিল খোদ প্রধানমন্ত্রীর গলায়। এরপর রাম মন্দিরে রামলালার মূর্তি গড়ার দায়িত্বও আসে তাঁরই হাতে। মূর্তি নির্মাণের জন্য গত ছ-মাস ধরে অযোধ্যাতেই রয়েছেন অরুণ। এমনকি বাড়িতে যখন এই মূর্তি নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন, নিজের মাকেও তা দেখাননি তিনি। একাগ্র আর একাকী সাধনা দিয়েই রামলালার মূর্তি নির্মাণ করেছেন এই শিল্পী।
আরও পড়ুন: Ramayana: রামায়ণের আদিতে ছিলই না লক্ষ্মণরেখা! কোথা থেকে এল এই গল্প?
চব্বিশের ভোটযুদ্ধকে নজরে রেখে যে রাম মন্দির নির্মাণে জোর দিয়েছে গেরুয়া শিবির, সেই মন্দিরের প্রাণকেন্দ্র রামলালার মূর্তিই। সারা দেশের গোটা শিল্পীমহলের মধ্যে থেকে যে অরুণের তৈরি করা মূর্তিটিই সেখানে বেছে নেওয়া হল, তাকে দুর্লভ সম্মান বললে বাহুল্য হয় না। আর সেই সূত্রেই এবার দেশজোড়া চর্চায় ঠাঁই করে নিলেন কর্নাটকের এই ভাস্কর।