ঈশ্বরের সন্ধানে আমরা রত। ঈশ্বরকে খোঁজার কথা বলে আমাদের মহাপুরুষগণ। আবার এ-ও তাঁরা বলে থাকেন যে, এ জগৎ ঈশ্বরেরই সৃষ্টি। সাধারণ ভক্তমনে তাই প্রশ্ন জাগে, নিজের সৃষ্টির ভিতরই কেন লুকিয়ে থাকেন ঈশ্বর? আমরা খুঁজে নেব তার উত্তর।
ঈশ্বরলাভেই আমাদের আনন্দ। ঈশ্বরের দর্শন না-পাওয়াই জীবনে প্রকৃত দুঃখ। তাই, যাঁরা জ্ঞানী, তাঁরা বারবার বলেন ঈশ্বরের খোঁজ করতে। বলেন, সাধনার মধ্য দিয়ে তাঁকে লাভ করতে। ভক্তহৃদয় ব্যাকুল হয়ে থাকে ঈশ্বরের জন্য। আর তাঁর মনে প্রশ্ন জন্মায়, যদি ঈশ্বরই এই জগৎ সৃষ্টি করেছেন, এখানে যা কিছু প্রকাশ্য যদি তাঁরই লীলা হয়, তাহলে তিনি নিজেকে লুকিয়ে রেখেছেন কেন? যদি তিনি অপ্রকাশ্য না হতেন, তাহলে তো এত দুঃখ থাকত না।
মহাপুরুষরা বলেন, জগৎ যে দুঃখময়, এই কথাটি সর্বাংশে সত্য নয়। এটিকে অর্ধসত্য বলা যায়। আসলে বলতে হবে, জগৎ সুখদুঃখময়। – সুখং দুঃখম্ ইহোভয়ম্ …
আরও শুনুন: Spiritual: সমস্ত কর্ম ঈশ্বরে অর্পণ করে প্রাত্যহিক জীবনযাপন করবেন কী করে?
সুখ, দুঃখ দুই-ই আছে পাশাপাশি। কোনও একটা আঁকড়ে ধরে তাই পৃথিবীকে দেখতে নেই। বেঁচে থাকার মধ্যেও এক অনির্বচনীয় সুখ আছে। এই যে আমরা কথায় কথায় বলি, মরলে বাঁচি। অর্থাৎ, মরে গিয়েও সেই বেঁচেই তো থাকতে চায় মানুষ। সুখ, দুঃখের পর্দাগুলো যদি আমরা একটু সরিয়ে সরিয়ে দেখি, তাহলেই তাদের প্রকৃত স্বরূপ উপলব্ধি করা যায়। তখন আর জগতকে কেবল দুঃখময় বোধ হয় না।
তবু, যে প্রশ্নটি থেকে যায়, সেটি হল, এতকিছুর পরেও ঈশ্বর কেন আমাদের আড়ালেই থেকে যান? পরম আনন্দময় যদি সামনে থাকতেন, তাহলে তো সুখ-দুঃখের এই দোলাচল আর থাকত না। এ তবে তাঁর কেমন লীলা?
আরও শুনুন: Spiritual: এই জীবনের কর্মফল মানুষকে এই জন্মেই ভোগ করতে হয়
প্রকৃতপক্ষে, এই ‘লীলা’ শব্দের মধ্যেই এর উত্তর যেন লুকিয়ে আছে। লীলা কথার অর্থ খেলা। লোকবৎ তু লীলাকৈবল্যম – অর্থাৎ, লোকে যেমন স্রেফ খেলার আনন্দেই খেলা করে, তার ভিতর তেমন প্রয়োজন থাকে না, এ-ও তেমনই। ঈশ্বরের খেলা। সৃষ্টির আনন্দ। এক থেকে বহু হওয়ার আনন্দ। আবার সেই বহু থেকে নিজেকে লুকিয়ে রাখার আনন্দ। এই হল তাঁর লীলা।
বাকিটা শুনে নিন প্লে-বাটন ক্লিক করে।