যিনি যে ধর্মাবলম্বীই হোন না কেন, দেশবাসীর জন্য কেন অভিন্ন দেওয়ানি বিধি থাকবে না? এ প্রশ্ন উঠলেই অনেকে এর বিরোধিতা করেন। আর সেই বিরোধিতা আসে মূলত ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের থেকেই। তবে এবার এক মুসলিম নেতা জানালেন, এর প্রতিবাদের তাঁরা আন্দোলন করবেন না। পথেও নামবেন না। কেন গড় মুসলমানদের থেকে ভিন্ন মত পোষণ করছেন তিনি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
দেশে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি লাগু হওয়ার প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতাই করেছে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড। সংগঠনের সাফ দাবি, এই বিধি অপ্রয়োজনীয়, বাস্তবজ্ঞানবর্জিত এবং দেশের জন্য তা ক্ষতিকরই। মনে করা হয়, সামগ্রিক মুসলমান সমাজের মানসিকতার প্রতিফলনই উঠে এসেছে সংগঠনের এই বিবৃতিতে। তবে, এই একই মনোভাবের শরিক হয়য়েও অভিন্ন দেওয়ানি বিধি লাগুর বিরোধিতা করে পথে নামতে নারাজ জামিয়াত প্রধান আরশাদ মাদানি। তাঁর অবস্থান বেশ অন্যরকম। তিনি জানাচ্ছেন, বিরোধিতা করলেও তা নিয়ে কোনও বিরোধী আন্দোলন সংগঠিত করে পথে নামতে নারাজ তিনি।
আরও শুনুন: কেদারনাথ মন্দিরের গর্ভগৃহে টাকার বৃষ্টি, মহিলার বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় নেটদুনিয়ায়
অথচ অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড কড়া ভাষায় অভিন্ন দেওয়ানি বিধির বিরোধিতাই করেছিল। সংগঠনের মতে, মুসলিম সমাজে যে নিয়ম চলে আসছে তা কোরান অনুসরণ করেই। তা পালটানোর অনুমতি মুসলমানদেরও নেই। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হলে সমাজে অনর্থক বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে। কোনও সংবেদনশীল সরকারই এ নিয়ে তাই এগোবেন না বলেই মত ছিল সংগঠনের। জামিয়াত প্রধান যে সে মতের বিরোধিতা করছেন তা নয়। অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে তিনি স্বাগতও জানাচ্ছেন না। তাঁর মতে, মুসলিম সমাজে ১৩০০ বছর ধরে যে নিয়ম চালু আছে তা থেকে সরে আসার কোনও মানে হয় না। স্বাধীনতার পর থেকে দেশের কোনও সরকারই তা চালু করেনি, এবং এর কোনও দরকার আছে বলেও তিনি মনে করেন না। তা সত্ত্বেও অভিন্ন দেওয়ানি বিধির প্রতিবাদে তিনি পথে নামছেন না।
আরও শুনুন: ছোটো জামা পরলে প্রবেশ নিষেধ, ফতোয়া জারি শিমলার শতাব্দীপ্রাচীন মন্দিরে
এক্ষেত্রে তাঁর যুক্তিটা অবশ্য বেশ আলাদা। তাঁর দাবি, এ নিয়ে মুসলিমরা যত বিরোধিতা করবেন, ততই হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যে দূরত্ব ক্রমশ বাড়বে। তাঁর ইঙ্গিত, এই ধরনের বিধি চালু করার নেপথ্যে কিছু অসৎ উদ্দেশ্যও কাজ করতে পারে। যত আন্দোলন হবে, হিন্দু-মুসলমানের ভেদ যত বাড়বে, তত সেই উদ্দেশ্য পূরণ হবে। অর্থাৎ বিভাজনের রাজনীতির প্রসঙ্গই টনেছেন তিনি। আর তাই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি সমর্থন না করলেও, এ নিয়ে পথে নামতে একেবারেই নারাজ জামিয়াত প্রধান।