ইন্ডিয়া নামে আপত্তি, কিন্তু হিন্দু বলে পরিচয় দিতে আপত্তি নেই? দুই শব্দের উৎস মনে করিয়ে দিয়ে গেরুয়া শিবিরকে একহাত নিলেন শশী থারুর। ঠিক কী বলেছেন তিনি? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
ইন্ডিয়া বনাম ভারত। দেশের নামবদল নিয়ে বিতর্ক ঘনিয়ে উঠেছে দেশের রাজনীতিতে। সংঘের তরফে এমনিতেই ইন্ডিয়া নাম নিয়ে বিরোধিতা ছিল, বর্তমানে বিজেপি সরকারও সেই পথেই হাঁটছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। অথচ সংঘ এবং বিজেপি, দুই পক্ষই যে হিন্দু ধর্ম এবং হিন্দুত্ববাদের পক্ষে সওয়াল করে থাকে, সে কথা তো অজানা নয়। আর এই প্রসঙ্গেই এবার গেরুয়া শিবিরকে সরাসরি তোপ দাগলেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর। মনে করিয়ে দিলেন, ইন্ডিয়া আর হিন্দু- এই দুই শব্দেরই উৎস আদতে একই। দুটি শব্দই এসেছে সিন্ধু থেকে। সুতরাং একটি পরিচয় নিয়ে আপত্তি করলে অন্য পরিচয়টি নিয়েও আপত্তি করতে হয় বলেই মত থারুরের।
আরও শুনুন: মহিলা ভোট টানতে সংরক্ষণের ‘ললিপপ’ ধরাচ্ছে বিজেপি! মধ্যপ্রদেশে তোপ কংগ্রেসের
এমনিতে সঙ্ঘ পরিবার বরাবরই ‘ইন্ডিয়া’ নামটিকে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার প্রতীক বলে চিহ্নিত করেছে। ভারতীয় সংবিধান যা-ই বলুক না কেন, আরএসএস নেতাদের যুক্তি, ব্রিটিশদের দেওয়া ওই নাম ‘অখণ্ড ভারত’-এর ধারণার পরিপন্থী। আর বিরোধী জোটের নামে ‘ইন্ডিয়া’ শব্দটি ব্যবহার হওয়ার পর থেকেই উসকে উঠেছে দেশের নামবদলের জল্পনা। দেখা যাচ্ছে, বারেবারেই দেশকে ভারত বলেই সম্বোধন করছেন মোদি সরকারের নেতামন্ত্রীরা। জি-২০ সমাবেশের আগে রাষ্ট্রপতি ভবনের পাঠানো চিঠিতে ‘ইন্ডিয়া’-র পরিবর্তে ‘ভারত’ লেখা হয়েছিল। এমনকি সমাবেশেও প্রধানমন্ত্রী মোদির সামনের ফলকে লেখা ছিল ‘ভারত’। সম্প্রতি রাষ্ট্রসংঘে বক্তৃতা রাখতে গিয়েও দেশকে ভারত বলেই উল্লেখ করেছেন বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর। সেই ইস্যুতেই এবার গেরুয়া শিবিরকে বিঁধলেন কংগ্রেস নেতা।
আরও শুনুন: সহায় স্বয়ং মনমোহন সিং! মুসলিম প্রশ্নে প্রাক্তনের উক্তিতেই কংগ্রেসকে মাত দিচ্ছেন মোদি
সম্প্রতি নিজের একটি বইয়ের কন্নড় অনুবাদ প্রকাশ করতে গিয়েই এই প্রসঙ্গ তোলেন থারুর। ঘটনাচক্রে ওই বইয়ের নাম ‘হোয়াই আই অ্যাম আ হিন্দু’, অর্থাৎ ‘আমি হিন্দু কেন’। কিছুদিন আগেই সনাতন ধর্ম প্রসঙ্গে হিন্দু ধর্ম কী এবং কাদের হিন্দু বলা উচিত- তা নিয়ে চাপানউতোর শুরু হয়েছিল। এ নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন খোদ যোগী আদিত্যনাথও। এবার এ নিয়ে ব্যাখ্যা দিলেন শশী থারুরও। তাঁর মতে, আসলে ধর্মের কারণে নয়, সিন্ধু উপত্যকায় বসবাসের কারণেই সেখানকার বাসিন্দাদের হিন্দু বলে ডাকা শুরু হয়েছিল। আর এই সিন্ধু নদ থেকেই ইন্ডিয়া নামটিও এসেছে। কিছুদিন আগে পাকিস্তানের একটি সংবাদমাধ্যমেও ইন্ডিয়া নামের উপর পাকিস্তানের অধিকার দাবি করে বলা হয়, ইন্ডিয়া নামটি আদতে ইন্ডাস বা সিন্ধু উপত্যকার প্রভাবে এসেছে। দুই নামের একই উৎসের কথা মনে করিয়ে দিয়েই এবার বিজেপিকে একহাত নিলেন শশী থারুর।