ধর্মের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে রাজনীতিও। দেখা দিয়েছে প্রাণসংশয়। সেই আশঙ্কা থেকেই এবার খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করতে চাইলেন দক্ষিণ ভারতের এক পুরোহিত। কী বক্তব্য রয়েছে তাঁর? শুনে নেওয়া যাক।
ধর্মের প্রসঙ্গ টেনে বারবার বিভিন্ন বিতর্কে তোলপাড় দেশের রাজনীতি। সেই তালিকায় নয়া সংযোজন তামিলনাড়ু। চলতি বছরে সেখানকার একটি ধর্মীয় প্রথার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সে রাজ্যের শাসকদল ডিএমকে। এই নির্দেশের জের টেনে সুর চড়িয়েছে হিন্দুত্ববাদী দলগুলি। আর এবার সেই সূত্র ধরেই সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার দাবি জানালেন এক পুরোহিত। জানালেন, এই নির্দেশের বিরুদ্ধে কথা বলার দরুন প্রাণসংশয়ের আশঙ্কা করছেন তিনি। আর সেই কারণেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এবার কথা বলতে চান তিনি।
আরও শুনুন: সাম্প্রদায়িক বিভাজনের সামনে ‘ঝুঁকেগা নেহি’, বৃদ্ধার মনোবল দেখে অবাক মহারাষ্ট্র
কী ঘটেছে ঠিক?
জানা গিয়েছে, দক্ষিণ ভারতের মঠ তথা ‘অধীনম’-গুলিতে পালিত হয় এই বিশেষ প্রথাটি, যার নাম ‘পত্তিনা প্রবেশম’। প্রাচীন কাল থেকে চলে আসা এই প্রথার মধ্যে দিয়েই এক অধ্যক্ষের থেকে অন্য অধ্যক্ষের হাতে যায় মঠের প্রশাসনিক দায়িত্ব। রুপোর পালকিতে চড়ে, ভক্তদের কাঁধে চেপে মঠে প্রবেশ করেন নতুন অধ্যক্ষ। নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২২ মে তারিখে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল এই প্রথাটি। কিন্তু মানুষের কাঁধে চেপে আসার এই নিয়মকে মানবাধিকার-বিরোধী বলে এই প্রথার বিপক্ষে সরব হয়েছিলেন যুক্তিবাদী মানুষেরা। আর তাঁদের দাবি মেনেই এই প্রথা বন্ধের পক্ষে রায় দেয় সে রাজ্যের শাসকদল ডিএমকে। সঙ্গে সঙ্গেই এই নির্দেশকে ধর্মের উপরে হস্তক্ষেপ বলে পালটা সুর চড়ায় বিজেপি এবং অন্যান্য হিন্দুত্ববাদী দলগুলি। এই নিয়ে ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক দলগুলির চাপানউতোরে আপাতত সরগরম তামিলনাড়ু। এবার সেই বিতর্কে নয়া মাত্রা যোগ করল ওই পুরোহিতের বক্তব্য।
আরও শুনুন: ভিডিও-সমীক্ষায় ঘোর আপত্তি মসজিদ কমিটির, জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে এবার আসরে বিশ্বহিন্দু পরিষদ
ত্রিচির কাছে অবস্থিত ধর্মপুরম মঠের সাপেক্ষে এই নির্দেশ জারি করেছিল ডিএমকে। এবার আরেকটি মঠ মাদুরাই অধীনম-এর প্রধান পুরোহিত জানালেন, ৫০০ বছরের পুরনো ধর্মপুরম মঠে এই প্রথা চলে আসছে বিগত ৫০০ বছর ধরেই। এমনকি ব্রিটিশ আমলেও এই প্রথা পালন করার অনুমতি পাওয়া গিয়েছিল সরকারের তরফ থেকে। সেই প্রথা বন্ধ করার নির্দেশে ক্ষোভপ্রকাশ করে তাঁর অভিযোগ, মঠের সম্পত্তি ভোগ করছেন ডিএমকে দলের সদস্যরা। তিনি এই নিয়ে মুখ খোলার ফলে তাঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি ওই পুরোহিতের। আর সেই কারণেই সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করতে চান তিনি। ঘটনার জল এবার কোনদিকে গড়ায়, আপাতত সেদিকেই তাকিয়ে তামিলনাড়ুর রাজনৈতিক মহল।