মসজিদে লাউডস্পিকার ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক বাড়ছে বিভিন্ন রাজ্যে। উত্তরপ্রদেশ থেকে মহারাষ্ট্র এই নিয়েই চলছে তুমুল রাজনৈতিক বিতণ্ডা। সম্প্রতি এই প্রসঙ্গেই এক নেত্রীর মন্তব্য আবার চর্চায় উঠে এসেছে। তিনি দাবি করেছিলেন, মসজিদে লাউডস্পিকারের ব্যবহার নিয়ে আপত্তি তুললে, মুসলিম মহিলারা মন্দিরের সামনে বসে কোরান পাঠ করবেন। তাঁর এহেন মন্তব্যের জন্য ওই নেত্রীর বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে এফআইআর। ঠিক কোন প্রেক্ষিতে তাঁর এই বক্তব্য? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ধর্মস্থানে লাউডস্পিকারের ব্যবহার নিয়ে আপত্তি যত বাড়ছে, তত এই প্রসঙ্গে বিভিন্ন মন্তব্য ধেয়ে আসছে নানাদিক থেকে। যা ক্রমশ আপত্তিকর জায়গায় পৌঁছে যাচ্ছে বলেই ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে পুলিশকে। সম্প্রতি আলিগড় পুলিশের নজরে আসে এক নেত্রীর বক্তব্য। তাঁর দাবি, তিনি সমাজবাদি পার্টির মহিলা শাখার সদস্য। রুবিনা খানম নামে ওই নেত্রী আগেও বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। সাম্প্রতিক ইস্যুতেও তাঁর মন্তব্যে বাড়ল বিতর্কের আঁচ।
আরও শুনুন: বেহাল অর্থনীতির হাল ফেরাতে দেশে আয়োজন মহা কুবের যজ্ঞের
সম্প্রতি এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, মন্দির ও মসজিদে দীর্ঘদিন ধরেই লাউডস্পিকার ব্যবহার করা হয়। পৃথক সম্প্রদায়ের মানুষ তাঁদের ভিন্ন ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়েই থাকেন। এ নিয়ে এতদিন কোনও সমস্যা হয়নি। তাঁর দাবি, পুরোটা ধর্মীয় বিশ্বাসের ব্যাপার। যদি কেউ তাতে আঘাত হানার চেষ্টা করেন তাহলে তাঁরা চুপ করে বসে থাকবেন না। পালটা দিয়ে তাঁর দাবি, এরকম চলতে থাকলে মুসলিম মহিলারা শান্তিপূর্ণ ভাবে মন্দিরের সামনে বসে কোরান পাঠ করবেন। জানা যাচ্ছে, আলিগড়েই হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের তরফে লাউডস্পিকারে হনুমান চালিশা পড়ার আবেদন জানানো হয়েছিল। তার জবাবেই এই মন্তব্য করেন নেত্রী। তাঁর দাবি, হিন্দুদের মন্দিরেও তো লাউডস্পিকারে ভজন চলে। তাতে তো ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা আপত্তি জানান না। তাহলে মসজিদে লাউডস্পিকারের ব্যবহার নিয়ে কেন আপত্তি? প্রশ্ন রুবিনার। আক্ষেপ করে নেত্রী জানিয়েছিলেন, মসজিদে লাউডস্পিকারের ব্যবহার নিয়ে যেন যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। রমজান মাসে মুসলমানদের ধর্মীয়-সংস্কৃতিতে বাধা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এইসব করা হচ্ছে বলে দাবি তাঁর। রুবিনার বক্তব্য মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায় নেটদুনিয়ায়। পরে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। এদিকে সমাজবাদী পার্টির তরফে এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, রুবিনা তাঁদের দলের নেত্রী নন।
আরও শুনুন: সাম্প্রদায়িক অশান্তির জেরে শ্রীলঙ্কার থেকেও বেহাল হতে পারে দেশের অর্থনীতি, আশঙ্কা সঞ্জয়ের
আলিগড়ের পাশাপাশি মহারাষ্ট্রেও ধর্মস্থানে লাউডস্পিকারের ব্যবহার নিয়ে চলছে চাপানউতোর। সেখানে তর্ক বেধেছে শিব সেনা ও মহারাষ্ট্র নবনির্বাণ সেনার মধ্যে। যোগীরাজ্যে আবার নিদান দেওয়া হয়েছে, লাউডস্পিকারের আওয়াজ যেন ধর্মস্থান চত্বরের বাইরে না বেরোয়। সব মিলিয়ে ধর্মস্থানে লাউডস্পিকারের ব্যবহারকে কেন্দ্র করে এই মুহূর্তে দেশের জনমত যে প্রায় দু-ভাগে বিভক্ত, তা বলাই যায়। আর সেই প্রেক্ষিতেই ধেয়ে আসছে একাধিক মন্তব্য যা বাড়িয়ে দিচ্ছে বিতর্ক। সুর চড়িয়েছেন রাজ ঠাকরে, আদিত্য ঠাকরে কিংবা সঞ্জয় রাউতের মতো নেতারাও। রুবিনার মন্তব্য সেই তালিকাতেই নয়া সংযোজন।