সাধারণ একজন কেরানি ছিলেন আম্বেদকর, এহেন মন্তব্য করেই এবার বেকায়দায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের প্রাক্তন নেতা। বেফাঁস মন্তব্যের জেরে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলেন তিনি। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
বাবাসাহেব আম্বেদকরকে নিয়ে বেফাঁস মন্তব্যের জেরে এবার গ্রেপ্তার বিশ্ব হিন্দু পরিষদের প্রাক্তন নেতা। দলিত সমাজের মুক্তির জন্য নিরন্তর আন্দোলনের পাশাপাশি দেশের সংবিধানটিও গড়ে উঠেছিল যে আম্বেদকরের হাত ধরে, তাঁকেই তাচ্ছিল্যভরে কেরানি বলে সম্বোধন করেছিলেন ওই নেতা। জাতপাত নিয়ে নিজের বক্তব্যে তির্যক কথা বলতে গিয়ে তিনি বলে বসে, আম্বেদকর আসলে একজন কেরানি, টাইপিস্ট এবং প্রুফরিডার ছিলেন। আর এই বিতর্কিত মন্তব্যের জেরেই সরগরম হয়ে ওঠে নেটদুনিয়া। বিক্ষোভের জল গড়ায় প্রশাসন পর্যন্ত। শেষমেশ ঘটনায় পদক্ষেপ করে পুলিশ। গ্রেপ্তার হন ওই হিন্দুত্ববাদী নেতা।
কী ঘটেছে ঠিক?
আরও শুনুন: Sanatana Dharma: হজে যাওয়া মুসলিমদের পরিচয় হিন্দুই, বিস্ফোরক যোগী আদিত্যনাথ
সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় একটি ভিডিও। সেখানেই বক্তব্য রাখতে দেখা যায় ওই নেতাকে। আরবিভিএস মানিয়ান নামে চেন্নাইয়ের ওই নেতা আগে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তামিলনাড়ু শাখার সহসভাপতি ছিলেন। এই ভিডিওটিতে দেখা যায়, তথাকথিত নিম্নবর্গ এবং দলিতদের প্রতি বেশ তাচ্ছিল্যই ছুড়ে দিচ্ছেন তিনি। তিনি বলেন, অনেকেই বলে থাকেন আম্বেদকর আমাদের সংবিধান দিয়েছেন। তাঁরা ক্রমাগত আম্বেদকরকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েও থাকেন। কিন্তু আম্বেদকর আসলে একা কিছুই করেননি। এই নিয়ে প্রচুর আলাপ আলোচনা চলেছিল। এরপর সমস্ত সংবিধানের খসড়া টাইপ করেন একজন স্টেনোগ্রাফার। তারও পরে একজনকে দেখে নিতে হয়েছিল যে সেই মুদ্রণে কোথাও কোনও ভুল রয়ে গেল কি না। আর সেই কাজই আম্বেদকর করেছিলেন। অর্থাৎ যাঁকে সংবিধানের জনক বলা হয়ে থাকে, তাঁকে ঘুরিয়ে টাইপিস্ট এবং প্রুফরিডার বলে বসেন ওই নেতা।
এহেন মন্তব্য করে আম্বেদকরকে অপমান করেছেন ওই নেতা, এই মর্মে সরব হয়ে ওঠেন নেটিজেনদের একাংশ। বিক্ষোভের ঝড় বইতে থাকে সোশাল মিডিয়ায়। অবশেষে পুলিশের কাছেও অভিযোগ দায়ের করা হয়। আর সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই পেনাল কোডের একাধিক ধারায় ওই নেতার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে চেন্নাই পুলিশ। গোষ্ঠীহিংসায় উসকানি দেওয়া, অশান্তি ছড়ানো এবং তফশিলি ও উপজাতি আইনের প্রযোজ্য ধারায় দায়ের হয়েছে মামলা। আপাতত ওই নেতাকে গ্রেপ্তার করেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টায় চেন্নাইয়ের পুলিশ প্রশাসন।