প্রতি রোববার ‘বিফ বিরিয়ানি’। মিলবে বিশ্ববিদ্যালয়য়ের হোস্টেলে। সম্প্রতি এমনই এক বিজ্ঞপ্তি ঘিরে নেটদুনিয়ায় হইচই শুরু হয়েছে। প্রবল আপত্তি জানিয়েছেন হিন্দুত্ববাদীরা। কী দাবি কর্তৃপক্ষের? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
রবিবার দুপুরে জমিয়ে মাংস ভাত! এমন চল অনেক বাড়িতেই রয়েছে। হোস্টেল বা পিজিতেও অনেকসময় রোববারের মেন্যুতে মাংস রাখা হয়। তবে এক্ষেত্রে চিকেনের কদরই বেশি। ব্যতিক্রম আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়। সম্প্রতি সেখানকার এক হোস্টেলের তরফে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এবার থেকে প্রতি রোববার বিফ বিরিয়ানি দেওয়া হবে পড়ুয়াদের!
যোগীরাজ্যের জনপ্রিয় এই মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় এর আগেও বিভিন্ন কারণে শিরোনাম দখল করেছে। তবে এবারের কারণটা বেশ গুরুতর। এমনিতে যোগীরাজ্য সহ দেশের বহু রাজ্যে গোমাংসে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সেই নিয়ে বিতর্কও হয়েছে বিস্তর। কখনও প্রকাশ্যে বিক্রি, কিংবা এই ধরনের অভিযোগে কড়া পদক্ষেপ করেছে সে রাজ্যের প্রশাসন। এমনকি এই অপরাধে রাতারাতি দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, এমন ঘটনাও যোগীরাজ্যে বিরল নয়। অথচ সেখানকার মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়য়ের হোস্টেলেই কিনা দেওয়া হবে গোমাংসের বিরিয়ানি!
:আরও শুনুন:
গোমাংস খাওয়ার বিরোধিতা! মুসলিমদের নিরামিষ খাওয়ার পরামর্শ খোদ মুসলিম আধিকারিকের
নেটদুনিয়ায় ভাইরাল বিজ্ঞপ্তিতে কর্তৃপক্ষের তরফে দুজনের সই। তাতেই বিজ্ঞপ্তিটি ভুল বা ভুয়ো এমনটা ভাবতে পারছেন না কেউ। এমনকি কর্তৃপক্ষের তরফেও সেই দাবি করা হয়নি। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়য়ের মতো এখানেও একাধিক হোস্টেল রয়েছে। তার মধ্যে সুলেমান নামের হোস্টেলের মেন্যুতে এমন বদলের কথা লেখা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। বলা হয়েছে, পড়ুয়াদের দাবি মেনেই এবার থেকে প্রতি রোববার চিকেন বিরিয়ানির বদলে বিফ বিরিয়ানি পরিবেশন করা হবে ওই হোস্টেলে। এই অনুরোধ নাকি দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছিলেন ওই হোস্টেলের পড়ুয়ারা, এমনটাও বিজ্ঞপ্তিতেই লেখা রয়েছে। বাস্তবে তা কতটা সত্যি, সেই খোঁজ কেউ নেননি, তবে এই পদক্ষেপের প্রতিবাদ হয়েছে জোরদার। প্রথম, যেখানে গোমাংস নিষিদ্ধ সেখানে কীভাবে এমন খাবার পরিবেশন হব, দ্বিতীয়ত, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি কোনও হিন্দু পড়ুয়া থাকেন তাহলে সে কীভাবে ওই খাবার খাবে। এইধরনের প্রশ্নই তুলেছেন নেটদুনিয়ার বাসিন্দারা। সরব হয়েছেন মূলত হিন্দুত্ববাদীরাই। এমনকি যোগীরাজ্যের পুলিশকেও এই ঘটনার ব্যাপারে জানানো হয়েছে হিন্দু সংগঠনের তরফে।
:আরও শুনুন:
পরিবেশন করা হচ্ছে গোমাংস, হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের অভিযোগে গ্রেপ্তার রেস্তরাঁর কর্ণধার
বিষয়টা বড় আকার নিতেই পারত, তবে তার আগে তড়িঘড়ি সাফাই দিয়েছে আলিগড় ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, এই বিজ্ঞপ্তিতে প্রিন্টিং মিসটেক হয়েছে, অর্থাৎ ছাপার ভুলে ওমনটা লেখা হয়ে গিয়েছে। কোনওভাবেই মেন্যুতে বদল আনা হবে না, এমনটাই দাবি কর্তৃপক্ষের। তাতেও পালটা কটাক্ষ করেছে হিন্দু সংগঠন। অনেকেই মনে করছেন, চাপের মুখে পড়ে এমন সাফাই দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বাস্তবে তাই কি না, সে নিয়ে প্রশ্ন থাকতেই পারে। তবে আপাতত বিষয়টা নিয়ে চর্চা জারি রয়েছে নেটদুনিয়ায়।