তাঁকে ঘিরে আকর্ষণ ছিল তুঙ্গে। পোশাকি নাম ‘ব্যোম-মিত্র’, তিনিই দেশের প্রথম মহিলা রোবট মহাকাশচারী। কবে তাঁর মহাকাশযাত্রা শুরু হয়, তা নিয়ে কৌতূহলও ছিল তুঙ্গে। এবার মিলল সেই উত্তর। আসুন শুনে নেওয়া যাক।
আকাশছোঁয়ার বাসনা মানুষের চিরকাল। আর তাই ঝুঁকি মাথায় নিয়েই মহাকাশে বারেবার পাড়ি জমিয়েছে মানুষ। জেনে-বুঝে নিতে চেয়েছে মহাবিশ্বের বিস্ময়। সেই অভিযানে নতুন মাইলফলক গড়েছে ভারত। কিছুদিন আগেই চাঁদের ওপিঠে পৌঁছেছিল দেশের চন্দ্রযান। আর এবার মহাকাশে পাড়ি দিতে চলেছে দেশের প্রথম মহিলা রোবট মহাকাশচারী। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং জানিয়েছেন যে, দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান। চলতি বছরেই শুরু হচ্ছে তাঁর মহাকাশযাত্রা।
-: আরও শুনুন :-
চন্দ্রযানের অভাবিত সাফল্যের পর এই মুহূর্তে দেশের বিজ্ঞানীরা তাকিয়ে আছেন ‘গগনযান’ প্রকল্পের দিকে। আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৫-এই সেই প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। পাড়ি দেবেন দেশের মহাকাশচারীরা, তবে, তার আগেই মহাকাশে যেতে চলেছেন এই হিউম্যানয়েড। ইসরোর-র তৈরি এই মহিলা রোবট দেশের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। বিশেষত গবেষকমহলে এবং পড়ুয়াদের মধ্যে তাঁকে ঘিরে দারুণ আগ্রহ। নীল শাড়িতে যখন তিনি প্রকাশ্যে আসেন, তখন থেকেই যাবতীয় কৌতূহল বাসা বেঁধেছিল তাঁকে ঘিরে। বিজ্ঞানীরা তাঁর নাম রেখেছিলেন, ‘ব্যোম-মিত্র’। ‘ব্যোম’ অর্থে মহাকাশ, ‘মিত্র’ অর্থে বন্ধু বা সঙ্গী। অর্থাৎ এই রোবট হল মহাকাশের বন্ধু কিংবা বান্ধবী। সুতরাং তাঁর মহাকাশে পাড়ি দেওয়া ছিল শুধু সময়ের অপেক্ষা। ইসরোর এই বিশেষ রোবটটি অনেকটা মানুষের মতোই অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। তাঁকে সেভাবেই তৈরি করা হয়েছে, যাতে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবও দিতে পারেন। একই সঙ্গে মহাকাশে যাওয়ার দরুণ যে যে বৈশিষ্ট্য দরকার, তা-ও আছে তাঁর মধ্যে। মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং জানিয়েছেন, রোবট-টি প্রায় মানুষের মতোই কাজ করতে পারে মহাকাশে। ‘গগনযান’ প্রকল্পের আগে তাই তাঁকে পাঠিয়েই প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা সেরে নিতে চাইছেন বিজ্ঞানীরা। আসলে, এই মুহূর্তে দেশের বিজ্ঞানীদের ধ্যানজ্ঞান হল ‘গগনযান’ প্রকল্প। দেশের মহাকাশচারীরা পাড়ি তো দেবেনই, তবে, মহাকাশে তাঁদের সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে আগেভাগে ওয়াকিবহাল হওয়া প্রয়োজন। পরিবেশ-পরিস্থিতি, এবং কী কী বিপদের সামনে পড়তে হতে পারে, তা জানা থাকলে সেসব মোকাবিলা করাও অনেক সহজ হবে। ঠিক সেই কাজটি যাতে নিখুঁত ভাবে হয়, তাই-ই নিশ্চিত করতে মহাকাশে যাচ্ছেন ‘ব্যোম-মিত্র’। তাঁর দৌলতেই মহাকাশে যাওয়া ও ফেরার নানা বিষয়গুলি চলে আসবে গবেষকদের নখদর্পণে। আর সেইমতো প্রস্তুতি নিয়েই মহাকাশে পাড়ি দেবেন মহাকাশচারীরা। ২০২৫-এর সেই অভিযানের তাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাই নিতে চলেছেন মহিলা রোবট মহাকাশচারী। আপাতত তাঁর অভিযানের সাফল্যের দিকেই তাকিয়ে বিজ্ঞানীরা।