কুম্ভমেলায় অ-হিন্দুদের প্রবেশ নিষিদ্ধ হোক। এমনই দাবি তুলল অখিল ভারতীয় আখরা পরিষদ। হিন্দু সংগঠনের দাবি, মেলায় দোকানও দিতে পারবেন না অ-হিন্দুরা। ঠিক কেন এমন দাবি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
মুখের মিল থাকলে বলা হয়, কুম্ভ মেলায় হারিয়ে যাওয়া ভাই বোন। জনপ্রিয় এই প্রবাদ কুম্ভ মেলার অসম্ভব ভিড়কেই ইঙ্গিত করে। সেখানে কে হিন্দু, কে নয়, সে খোঁজ করতে যান না কেউ। তবে এমনটা আর চলবে না। হিন্দুদের উৎসবে অ-হিন্দুরা কেন থাকবে? সরাসরি এই দাবি তুলেছে অখিল ভারতীয় আখরা পরিষদ। নবরাত্রি বা গণেশপুজোর সময় এমন আগেও তুলেছে হিন্দু সংগঠন। এবার তালিকায় কিম্ভ মেলা। সেখানেও নিষিদ্ধ হোক অহিন্দু প্রবেশ। এমনটাই চাইছেন তাঁরা।
আরও শুনুন:
প্রতিবাদী অভিনেতা কিংবা সর্বস্বত্যাগী আধ্যাত্মিক বক্তা, নেটিজেনের চাহিদাতেই ভ্রান্তিবিলাস?
পৌষ পেরিয়ে মাঘ। সন্ধিক্ষণের দিনটি সংক্রান্তি। পঞ্জিকায় একেই বলা হচ্ছে মকর সংক্রান্তি। এই দিন থেকেই শুরু কুম্ভ মেলা। মূল আকর্ষণ গঙ্গা স্নান। দেশের মোট চার জায়গায় কুম্ভ মেলা হয়। তার মধ্যে হরিদ্বার এবং প্রয়াগ সবথেকে জনপ্রিয়। প্রতি ১২ বছর ছাড়া হয়, পূর্ণ কুম্ভ। তবে এমনিও প্রতিবছর ওই নির্দিষ্ট সময় মেলা বসে। গোটা দেশের সাধু-সন্তরা এখানে এসে ভিড় জমান। সাধারণ মানুষও আসেন। সবমিলিয়ে বিশাল এক জনঅরণ্য তৈরি হয়। সেখানে কে কোন ধর্মের সেই ভেদ থাকে না। কেউ আসেন পুণ্যের লোভে। কেউ আসেন ব্যবসার টানে। তবে এখানেই এবার দাড়ি টানতে চাইছেন দেশের কিছু হিন্দু সংগঠন। তাঁদের দাবি, মেলায় স্রেফ হিন্দুরা আসুন। তাঁরাই ব্যবসা করুন। কোনওভাবে অ-হিন্দু কেউ মেলায় এলে চলবে না। এতে ধর্মক্ষুন্ন হওয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। সুর মিলিয়েছেন মেলায় স্নান করতে আসা সাধুরাও। দাবি প্রায় এক। অ-হিন্দু কাউকে মেলায় দেখতে চাইছেন না তাঁরা। কিন্তু এতবড় মেলা, সেখানে কে আসবে, কে থাকবে তা আগে থেকে বোঝা কঠিন। কেউ পরিচয় লুকিয়েও আসতেই পারেন। তাই মূলত ব্যবস্থা করা হচ্ছে দোকান দেওয়া নিয়ে। মেলায় কারা দোকান দেবে সেসব আগে থেকে ঠিক করে নিতে হয়। সেখানেই কড়া নজর রাখা হচ্ছে দোকানির ধর্ম পরিচয়ে। হিন্দু না হলে এক চিলতে জমিও পাওয়া যাবে না। ব্যবসার অনুমতি তো দূর অস্ত। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও কুম্ভ মেলার প্রস্তুতি শুরু করেছে যোগীরাজ্যের প্রশাসন। তার আগে হিন্দু সংগঠনের এই দাবি নতুন চর্চা শুরু করেছে।
আরও শুনুন:
অপরাধীও পণ্য! বিকোচ্ছে, লরেন্স বিষ্ণোইয়ের ছবি দেওয়া টি-শার্ট, সরগরম নেটদুনিয়া
তবে এমনটা নতুন কিছু নয়। কয়েক মাস আগেই কানওয়ার যাত্রা উপলক্ষ্যে ফতোয়া জারি হয়েছিল যোগীরাজ্যে। রাস্তার ধারে থাকা দোকানগুলিকে দোকানির নাম লিখতে বাধ্য করা হয়েছিল। আদালতের নির্দেশে সে ব্যবস্থা বদলায়। এছাড়া নবরাত্রির গরবাতেও অ-হিন্দুদের প্রবেশ নিষেধের দাবি তুলে বিতর্কে জড়িয়েছেন হিন্দু নেতারা। এবার কুম্ভ মেলা ঘিরে একই দাবি তাঁদের। জোড়া হয়েছে সেই সনাতন ধর্মের প্রসঙ্গই। পাছে কারও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত পৌঁছয়, তাই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে কুম্ভ মেলা কমিটি।