কত ঘটনা যে ঘটিতে পারে তার ইয়ত্তা নেই! বাড়িতে মাটন রান্না হয়নি তার জন্যেও পুলিশকে ফোন। এমনকী, কলা কিনতে বেরনোর জন্যই দ্বারস্থ সেই পুলিশের। আর কী কী মজার ঘটনা ১০০ ডায়ালের ইতিহাসে? শুনে নেওয়া যাক।
খোসা ছাড়িয়ে ধুয়ে-টুয়ে রাখা। রান্না এই বসবে বলে! মুহূর্তকয়েক চোখের আড়াল হতেই হঠাৎ দেখা গেল বাটি পড়ে আছে, আলু নেই। কে যেন তা নিয়ে হাপিশ হয়ে গিয়েছে। কালবিলম্ব না করে উত্তপ্রদেশের বিজয় বর্মা ফোন করলেন পুলিশকে। কী অভিযোগ? না, আড়াইশো গ্রাম আলু খোয়া গিয়েছে। তদন্ত করতে হবে।
মোটে আড়াইশো আলুর জন্য পুলিশকে ফোন!
তাতে কী! ব্যক্তির দাবি, কোনও কিছু হারিয়ে গেলে পুলিশকেই তো খুঁজে দিতে হবে। খোঁজখবর করে জানা যায়, ব্যক্তিটির নাকি ঈষৎ পানদোষ আছে। তাতে তাঁর পালটা জবাব, তা সারাদিন খাটাখাটনি করে তিনি একটু পান করেন বটে! তবে, তার সঙ্গে তো আলু চুরি যাওয়া আর তা পুলিশকে খুঁজতে বলার মধ্যে কোনও সম্পর্ক নেই। অকাট্য যুক্তি। সাম্প্রতিক এই ঘটনায় নেটদুনিয়ায় মৃদু হাসাহাসি। তবে, ১০০ ডায়াল করে এমন অনেক ‘আজব’ দাবিই জানান সাধারণ মানুষ, সে সব সামলাতে হয় পুলিশকেই।
কীরকম হতে পারে সেই দাবি? যেমন, একবার ফোন করে পুলিশকে কেউ জানিয়েছিলেন যে, ঘরে কলা একেবারে শেষ হয়ে গিয়েছে। একবার কি পুলিশের গাড়ি পাঠানো সম্ভব, যাতে বাড়ির কেউ বেরিয়ে তা কিনে আনতে পারেন। ১০০ তো জরুরি নম্বর, সেখানে কি কেউ কলা কেনার জন্য ফোন করেন! অবাক হয়েছিলেন বিভাগে কর্মরত পুলিশ কর্মচারী। আর একটু খোঁজ নিয়ে জানা গেল, যেহেতু তখন লকডাউন চলছে, ফলে বাইরে বেরনো অসুবিধা। এদিকে বাড়িতে কলা নেই, তা-ও সমস্যাজনক বইকি! অতএব উপায় না দেখে বাড়ির লোকেরা পুলিশে ফোন করাই সমীচিন মনে করেছিলেন।
এরকম কত ঘটনা যে ঘটিতে পারে তার ইয়ত্তা নেই! বছর দুয়েক আগের একটি ঘটনা খবরে এসেছিল। তেলেঙ্গানার এক যুবক পুলিশকে ফোন করে জানায়, তিনি নাকি ভারি বিপদে পড়েছেন! তড়িঘড়ি পুলিশ তাঁর বাড়ি পৌঁছতেই যুবক দাবি তোলে, তাঁকে দু’বোতল বিয়ার এনে দিতে হবে। তখন রাত প্রায় ফুরিয়ে এসেছে। যেহেতু সব দোকান বন্ধ, তাই বাধ্য হয়ে নাকি তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। ওই তেলেঙ্গানাতেই আর একটি ঘটনা ঘটেছিল। হোলির দিন পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়ে ফোন করেন এক ব্যক্তি। কী অভিযোগ? না, তাঁর স্ত্রী কিছুতেই বাড়িতে মাটন রান্না করছেন না।
এরকম ঘটনার শেষ নেই। দাম্পত্য কলহের রেশ এসে পড়ে পুলিশের উপর। একবার এক মহিলা পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কী দাবি? রাস্তায় স্বামীর সঙ্গে তাঁর ঝগড়া হয়েছে। তাই তাঁর ইচ্ছে, পুলিশ যেন তাঁকে বাড়িতে পৌঁছে দেন, কেননা স্বামীর উপরে তিনি মোটেও নির্ভর করতে চান না। হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার দাবি নাকি আকছার আসে পুলিশের কাছে। তবে, শুধু পৌঁছে দিলেই হবে, ঘণ্টা দুয়েক অপেক্ষা করে পুলিশ যাতে রোগীকে আবার বাড়ি ফিরিয়ে দেয়, সেই ইচ্ছেও প্রকাশ করেন কেউ কেউ। এমনকী, পুলিশের কাছে হাসপাতালের বিল মিটিয়ে দেওয়ার দাবিও নাকি জানানো হয়েছে।
তবে, একবার এক বৃদ্ধা অবাক করেছিলেন পুলিশ অফিসারকে। মারাত্মক মাথার যন্ত্রণা বলে তিনি পুলিশকে ফোন করেন। দেরি না করে পুলিশ তাঁর বাড়ি পৌঁছে বুঝতে পারেন, আসলে তিনি এক আত্মীয়ের বাড়ি যেতে চান। তাই পুলিশকে এভাবে ডেকে পাঠিয়েছেন। অসাহয়তা হোক কিংবা ভরসার জায়গা- যা-ই হোক না কেন পুলিশের কাছে দাবি-দাওয়ার শেষ নেই। হাসিমুখে সে সব সামাল দিতেই হয়ে তাঁদেরই।