নিয়োগ দুর্নীতিতে একাধিক হেভিওয়েট গ্রেপ্তার নিয়ে সাম্প্রতিক কালে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। জেলের ভিতরে কীভাবে দিন কাটছে এই নেতা-আধিকারিকদের, তা নিয়ে খবর ভেসে আসে মিডিয়াতেও। কিন্তু জানেন কি, কোনও অপরাধ না করেও, স্রেফ শখের বশেই কয়েদি হয়ে যেতে পারেন আপনিও? কীভাবে? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
জেলের অন্ধকার ছোট্ট কুঠুরিতে কীভাবে দিন কাটে বন্দিদের, তা নিয়ে গল্প কিংবা সিনেমায় অনেক কথা শোনা যায়। কিন্তু বাস্তবে জেলের ভিতরটা ঠিক কেমন, সে বিষয়ে চক্ষুকর্ণের বিবাদ ভঞ্জন করতে চান? মাত্র ৫০০ টাকার বিনিময়েই মিলতে পারে সেই সুযোগ। কোনোরকম এফআইআর বা আদালতের রায় ছাড়াই জেলবন্দির জীবন কাটাতে পারেন আপনি।
আরও শুনুন: সহকর্মীর সঙ্গে সঙ্গমে লিপ্ত হয়েই মৃত্যু ব্যক্তির, কবরে ‘লম্পট’ লিখে দিলেন স্ত্রী
আজ্ঞে হ্যাঁ, যে কোনও সাধারণ মানুষকে কয়েদির জীবন কাটানোর সুযোগ দেয় দেশের কয়েকটি জেল। তবে মাত্র ২৪ ঘণ্টার জন্য। কারাবাসের অভিজ্ঞতা আসলে ঠিক কেমন, প্রত্যক্ষভাবে সে কথা জানলে অপরাধের প্রবণতা কমতে পারে। এমন ভাবনা থেকেই এহেন উদ্যোগ নিয়েছে জেল কর্তৃপক্ষ। শোনা যায়, একই কারণে পড়শি দেশ চিনেও সরকারি আধিকারিক এবং অন্যান্য ব্যক্তিদের নিয়মিত জেলে নিয়ে গিয়ে বন্দিদের দুরবস্থা চাক্ষুষ করানো হয়। এ দেশে প্রথমবার এমন উদ্যোগ নেওয়া হয় তেলেঙ্গানা রাজ্যের সাঙ্গারেড্ডি জেলে। এই জেলের সকল বন্দিকে অন্য জেলে সরিয়ে দেওয়ার পর ২০১৬ সালে ফাঁকা জেলটিকে একটি হেরিটেজ মিউজিয়ামের রূপ দেওয়া হয়। নিজাম প্রথম সালারজং-এর তৈরি করা দুশো বছরেরও বেশি পুরনো এই জেলটিকে ঘিরেই এরপর এহেন উদ্যোগ নিয়েছিলেন কারা দপ্তরের অধিকর্তা।
‘ফিল দ্য জেল’ নামের এই কর্মসূচিতে গোটা একটা দিন জেলে কয়েদির জীবন কাটাতে পারেন কোনও ব্যক্তি। মাত্র ৫০০ টাকার বিনিময়ে। জেলের কড়া অনুশাসনে একজন সশ্রম কারাদণ্ডের আসামির দিন যেভাবে কাটে, সেইভাবেই থাকতে হবে তাঁকে। সকালে জেলে ঢোকার সময়েই জেলের লকারে জমা দিতে হবে নিজের সঙ্গে থাকা যাবতীয় জিনিসপত্র। সঙ্গে রাখা যাবে না ফোনও। জেল থেকেই দেওয়া হবে কয়েদির পোশাক, খাওয়ার থালাবাসন, কম্বলের মতো প্রয়োজনীয় কয়েকটি জিনিস। ২৪ ঘণ্টার জন্য তাঁর ঠিকানা হবে অপরিসর একটি ঘর, ঘরের মধ্যেই রয়েছে খোলা শৌচালয়। এই নিঃসঙ্গ যাপন বেশিক্ষণ সহ্য করতে না পেরে দিন ফুরোনোর আগেই জেল থেকে মুক্তি পেতে চান অনেকে। সেক্ষেত্রে দিতে হবে আরও ৫০০ টাকা জরিমানা।
আরও শুনুন: বিজেপিকে টক্কর দিতে হাতিয়ার গরুই, প্রতিশ্রুতি পূরণের দাবিতে হাজার হাজার গরু ছাড়া হল গুজরাটের রাস্তায়
প্রথমে তেলেঙ্গানায় এহেন উদ্যোগ নেওয়া হলেও পরবর্তী কালে দিল্লির তিহার জেল, মহারাষ্ট্রের ইয়েরওয়াডা জেল, উত্তরাখণ্ডের হলদওয়ানি জেলও এই কর্মসূচিতে শামিল হয়েছে। এই অভিজ্ঞতা যে কোনও মানুষকেই অনেক বেশি সচেতন করে তুলবে, এমনটাই আশা সংশ্লিষ্ট মহলের।