কার কবে মৃত্যু হবে, সে কথা কে-ই বা বলতে পারে! কিন্তু আশ্চর্যের কথা হল, এই বিড়ালটি নাকি বুঝতে পারত সেই কথা। অন্তত একশো মানুষের মৃত্যুর আগাম বার্তা দিয়েছিল বিড়ালটি। আর সকলকে চমকে দিয়ে বাস্তব হয়েছিল সবকটি ভবিষ্যদ্বাণীই। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
কথায় বলে, বিড়াল তপস্বী। কিন্তু এই বিড়ালটিকে জ্যোতিষী বললেও ভুল হয় না। কারণ একের পর এক সঠিক ভবিষ্যদ্বাণী করেছে সে। অবশ্য যে কোনও বিষয়ে নয়, কেবলমাত্র মৃত্যুরই আগাম বার্তা দিত বিড়ালটি। কারও মারা যাওয়ার ঘণ্টাকয়েক আগেই নাকি তার পাশে গিয়ে হাজির হত সে। এমন ঘটনা ঘটেছিল প্রায় শ-খানেক মানুষের ক্ষেত্রে। তাঁরা প্রত্যেকেই অসুস্থ ছিলেন। বিড়ালটি তাঁদের পাশে গিয়ে শুয়ে পড়লে সচেতন হয়ে উঠতেন চিকিৎসক ও সেবাকর্মীরাও। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই শেষরক্ষা হয়নি। অন্তত ১০০টি মৃত্যুর ক্ষেত্রে সঠিক ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল অস্কার নামের ওই বিড়ালটি, এমনটাই জানা যায়।
আরও শুনুন: বাড়িতে সাজানো ১৩ হাজার ‘বিড়াল’, আশ্চর্য মিউজিয়াম গড়লেন দম্পতি
আসলে এক চিকিৎসাকেন্দ্রেই থাকত অস্কার। আমেরিকার রোড আইল্যান্ডের ‘স্টিয়ার হাউস নার্সিং অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার’ নামে ওই চিকিৎসাকেন্দ্রে কেবল মানসিক রোগীদেরই চিকিৎসা করা হত। আর সেখানেই, ২০০৫ সালে, রোগীদের থেরাপির অঙ্গ হিসেবেই অস্কার সহ আরও পাঁচটি বিড়ালকে নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু অস্কার যে থেরাপির ক্ষেত্রে খুব একটা সহায়ক ছিল এমনটা বলা যাবে না। এমনিতে কোনও রোগীর ধারেকাছে ঘেঁষতে সে বিশেষ পছন্দ করত না। বরং নিজের মনে থাকাই তার স্বভাব ছিল। ব্যতিক্রম ছিল কেবল একটি ক্ষেত্র। মাঝে মাঝে কোনও রোগীর পাশে গিয়ে সে ঘুমিয়ে পড়ত। কয়েকবার এমন ঘটার পর হাসপাতালের কর্মীরা লক্ষ করেন, কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যু হচ্ছে সেই রোগীদের। জোয়ান টেনো নামে এক চিকিৎসকই প্রথম বিষয়টি নজর করেন। বারবার এমন ঘটতে দেখে তাঁরা সিদ্ধান্তে আসেন যে, কারও মৃত্যুর আগে সে কথা বুঝতে পারে অস্কার।
আরও শুনুন: মৃত্যু হয়েছে মালকিনের, ২০টি পোষা বিড়াল খুবলে খেল মৃতদেহ
‘নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন’-এ লেখা একটি প্রবন্ধে অস্কারের এই অদ্ভুত ক্ষমতার কথা জানিয়েছিলেন ডঃ ডেভিড ডোসা। পরে তাকে নিয়ে একটা গোটা বই-ই লিখে ফেলেন তিনি- ‘মেকিং রাউন্ডস উইথ অস্কার: দ্য এক্সট্রাঅর্ডিনারি গিফট অব অ্যান অর্ডিনারি ক্যাট’। অবশ্য অস্কারের এই ক্ষমতাকে অলৌকিক বলতে আপত্তি করেন কেউ কেউ। তাঁদের মতে, রোগীদের শরীরের মৃত কোশ থেকে নিঃসৃত কোনও জৈব রাসায়নিক পদার্থের গন্ধ পেত বিড়ালটি, আর তার জেরেই এহেন আচরণ করত সে। যদিও সেক্ষেত্রে প্রশ্ন ওঠে, এমন আচরণ অস্কারের সঙ্গী অন্য বিড়ালগুলির ক্ষেত্রে দেখা যায়নি কেন! তাই সব মিলিয়ে, অস্কারের এই ক্ষমতার রহস্য রহস্যই থেকে গিয়েছে।