সম্প্রতি একের পর এক স্পাই থ্রিলার আসছে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে। যেখানে সিক্রেট এজেন্টদের সাহসী কাজকর্ম একেবারে মন্ত্রমুগ্ধ করছে দর্শককে। বলার দরকার নেই যে, এ শুধু গল্পকথা নয়। বরং এই ধরনের কাহিনির প্রেরণা বাস্তবের মানুষই। অর্থাৎ, কেবল সিনেমায় নয়, দুর্ধর্ষ এজেন্টরা ঘুরে বেড়ান বাস্তবেও। শুনে নিই সেরকমই একজন ভারতীয় অফিসারের কথা।
তাঁকে সর্বকালের অন্যতম সেরা ‘র’ অফিসার হিসেবে গণ্য করা হয়। পাকিস্তানে বসে রীতিমতো পাকিস্তানকে ঘোল খাইয়েছিলেন তিনি। নিজেকে পরিচয় আড়াল করে আমৃত্যু সেবা করেছিলেন দেশের। নাম রবিন্দর কৌশিক। সিনেমা অর্থাৎ স্পাই থ্রিলারে যেরকম এজেন্টদের দেখা যায়, তার থেকে অনেক গুণ রোমহর্ষক ছিল এই রবিন্দর কৌশিকের জীবন।
আরও শুনুন: চাকরিপ্রার্থী কি মিথ্যে বলছেন? স্রেফ একটা প্রশ্ন, তাতেই বোঝা হয়ে যায় সবকিছু
একসময় থিয়েটার ভালোবাসতেন রবিন্দর। ঝকঝকে তরুণ। নানারকম চরিত্রে সেজেগুজে অভিনয় করায় বেশ ঝোঁক ছিল। আর এই গুণটিই চোখে পড়ে যায় ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা ‘র’-এর অফিসারদের। ডাক পড়ে কৌশিকের। তখন তাঁর বয়স মোটে ২৩। সেই শুরু। গুপ্তচর সংস্থার সঙ্গে সেই যে গাঁটছড়া বাঁধা হয়েছিল কৌশিকের, আমৃত্যু তা ছিন্ন হয়নি।
আরও শুনুন: সোনালি রাংতায় মোড়া শিশুশ্রমিকের যন্ত্রণা, স্বাদের আড়ালে লুকিয়ে চকোলেট ইন্ডাস্ট্রির রূঢ় বাস্তব
যেতে হবে পাকিস্তানে। তাই প্রশিক্ষণের গোড়ায় তাকে শেখানো হয় উর্দু। এ ছাড়া ইসলাম ধর্মের রীতিনীতি গভীর মনোযোগের সঙ্গে শিখতে থাকেন তরুণ কৌশিক। একদিন যাবার ডাক এল। রবিন্দর কৌশিকের নতুন নাম হল নবি আহমেদ শাকির। নতুন নামে নতুন পরিচয়ে তিনি গেলেন পাকিস্তানে। আর ভারতে তাঁর অস্তিত্ব একরকম রাতারাতি ‘নেই’ হয়ে গেল। কোথাও যেন আর খুঁজে পাওয়া যাবে না রবিন্দর কৌশিক নামে কোনও যুবককে।
পাকিস্তানে গিয়ে শুরু হল নতুন জীবন। করাচির বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন। পরে যোগ দেন পাক সেনাবাহিনীতে। এমনকী সেখানে পদোন্নতি হয়ে মেজর হন তিনি। কেউ ঘুণাক্ষরেও জানতে পারেননি যে তিনি ভারতের স্পাই। যত দিন যায় ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন কৌশিক। তাঁর পাঠানো এক একটি তথ্য দেশকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। দেশের প্রতিরক্ষা মহলে তাঁর নাম হয়ে যায় ‘দ্য ব্ল্যাক টাইগার’। শোনা যায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী স্বয়ং নাকি তাঁকে এই নাম দিয়েছিলেন। ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৩- পর্যন্ত কৌশিকের পাঠানো গুরুত্বপূর্ণ ইনফর্মেশন ভারতকে বহু বহু ক্ষেত্রে বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচতে সাহায্য করে।
শুনে নিন বাকি অংশ।