চাকরি না পেলে ছোটবেলার প্রেমিকাকে বিয়ে করতে পারব না! চাকরির আবেদনে এমনটাই লিখেছেন এক যুবক। স্বাভাবিকভাবেই যা দেখে হাসির রোল উঠেছে নেটদুনিয়ায়। কিন্তু আদৌ কি এই কাতর আর্জি কৌতুকের বিষয়? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
চাকরিটা আমি পেয়ে গেছি বেলা শুনছো?… অঞ্জন দত্তের এই গান শোনেননি এমন বাঙালি যুবক খুঁজে পাওয়া কঠিন। সেকালে তো বটেই, এই গানের প্রাসঙ্গিকতা আজও কিছুমাত্র কম নয়। কারণ চাকরির সঙ্গে প্রেম টিকে থাকার সম্পর্ক চিরন্তন। তা আগামীদিনেও কতটা বদলাবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে!
আরও শুনুন: ঈশ্বরকে নিয়ে ঠাট্টা করা যায় বইকি! যুক্তি দিলেন খোদ ধর্মগুরু
গায়ক তাঁর বেলাকে শেষমেশ ফোনে পেয়েছিলেন কি না তা অনেকেরই জানা নেই। কিন্তু বাস্তবে এমন অনেক বেলা যে ফোনের ওপারে চিরকালের মতো হারিয়ে গিয়েছেন, তা নিশ্চিতভাবে বলা যায়। স্রেফ একটা চাকরি ছিল না বলে ছোটবেলার প্রেমকে বিদায় জানাতে বাধ্য হয়েছেন অনেকে। যখন কাঙ্খিত চাকরি জুটেছে তখন সেই প্রেমিকা অন্য কারও গল্পের নায়িকা। খুঁজলে দেখা যাবে সেই নায়কও হয়তো অন্য কোনও স্বপনচারিনীকে হারিয়ে চাকরির জোরে ঘরণী করেছেন কারও হারিয়ে যাওয়া প্রেমকে। মোটের উপর বিষয়টা এই যে, চাকরি না করলে প্রেম টিকিয়ে রাখা কঠিন। অনেকসময় প্রেমিকার বাবা রীতিমতো শর্ত চাপিয়ে দেন, এত টাকা মাইনে চাকরি না হলে সেই ছেলের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেবেন না। তর্কের খাতিরে অনেকেই প্রশ্ন তুলতে পারেন, আজকের দিনে দাঁড়িয়েও মেয়েদের এভাবে পণ্য করা যায়? একেবারেই না। তবু সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেক ‘বাবা’-ই এই ধারণা মেনে চলেন। কখনও বিদ্রোহী হয়ে ওঠে মেয়ে নিজেও। প্রেমিকের সঙ্গে নিজের সিদ্ধান্তে বেরিয়ে পড়ার দুঃসাহসও দেখায়, তাও সবার জীবন ওরকম সিনেমার মতো হয় না। তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, চাকরি নেই তো প্রেমও নেই।
আরও শুনুন: শুধু খাবার পৌঁছানো নয়, প্রয়োজনে করবেন চিকিৎসাও, ডেলিভারি কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ সংস্থা
সম্প্রতি এমনই এই ঘটনা নেটদুনিয়ায় হইচই ফেলে দিয়েছে। তেমন অসাধারণ কিছু নয়। গল্পে, সিনেম্য আখচার এমনটাই দেখা যায়। কিন্তু বাস্তবেও এমনটাই হচ্ছে দেখে, বেশ উত্তেজনা ছড়িয়েছে অনেকের মনে। ঘটনা বলতে চাকরির আবেদনে লেখা এক যুবকের কাতর আর্তি। তাঁর ছোটবেলার প্রেম সম্পর্কে। সংস্থার তরফে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কেন নিজেকে এই পদের জন্য যোগ্য মনে করেন আপনি? এর উত্তরেই যুবকের দাবি, চাকরিটা না পেলে তাঁর ছোটবেলার প্রেমিকার সঙ্গে বিয়ে হবে না। কারণ, প্রেমিকার বাবা এমনই শর্ত দিয়েছেন। চাকরি পেলে তবেই বিয়ে, নাহলে নয়। এমন উত্তর দেখে চমকেছেন সংস্থার আধিকারিকরাও। এই উত্তর নেটদুনিয়ায় ছড়িয়েও পড়েছে দ্রুত। সেখানেই উঠেছে হাসির রোল। কেউ কেউ সহানুভূতি জানিয়েছেন ঠিকই। তবে এই ঘটনাকে বেশিরভাগই রসিকতার উপাদান হিসেবে দেখছেন। আর সেখানেই থেকে যাচ্ছে কিছু প্রশ্ন। চাকরি অবশ্যই অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। সুতরাং প্রেমিকার বাবা যদি চাকরির দাবি করেও থাকেন তাতে তাঁর কোনও দোষ নেই। সমস্যাটা হল, বিয়ের ক্ষেত্রে এমন শর্ত চাপিয়ে দেওয়ায়। সেখানে প্রেমের মূল্য সম্পূর্ণভাবে উধাও হয়ে যায়। ভালোবাসার অনুভূতির কার্যত কোনও দাম থাকে না। পাশাপাশি নেটদুনিয়ায় এই নিয়ে যে মশকরার আবহে তৈরি হয়েছে, তাও কতটা যুক্তিযুক্ত সেই প্রশ্ন উঠতেই পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। সবাই তো এক নন। তাই নেটদুনিয়ার একাংশ যুবকের পক্ষেও কথা বলেছেন। তাঁদেরও দাবি প্রায় এক, কারও কাতর আর্তি কখনই রসিকতার উপাদান হতে পারে না।