রেললাইনে চলবে, আবার প্রয়োজন বুঝে নেমে আসতে পারবে বাস রাস্তাতেও। এমন আশ্চর্য গাড়ি দেখেছেন? কী ভাবছেন, কোনও কল্পবিজ্ঞানের গল্প কিংবা হলিউডের ভিএফএক্স দেওয়া সিনেমার কথা বলছি! একেবারেই নয়। এমনই গাড়ি এবার চলবে শহরের রাস্তায়। ইতিমধ্যেই পরীক্ষামূলক ভাবে চালানো হয়ে গিয়েছে এই গাড়ি। এমন গাড়ি নিশ্চই চড়ে দেখতে চান আপনিও? কোথায় মিলবে এমন গাড়ি জানতে চান তো? আসুন, এই আশ্চর্য গাড়ির হালহদিশ জেনে নেওয়া যাক।
দেখতে সাধারণ মিনিবাসেরই মতো। শহরের রাস্তাঘাটে দিব্যি বাসের মতোই চলবে এই গাড়ি। তবে রেললাইনে নামিয়েই দেখুন না এই গাড়িকে। সেখানেও দেখাবে ম্যাজিক। আস্ত একখানা বাস, দিব্যি হয়ে যাবে ট্রেন।
কী ভাবছেন? ছিল রুমাল, হয়ে গেল বেড়াল। অনেকটা সেরকমই। এ বার রাস্তায় চলবে এমনই ডুয়াল-মোড ভেহিকেল বা ডিএমভি। ইতিমধ্যেই পরীক্ষামূলক ভাবে চালিয়ে দেখা হয়ে গিয়েছে গাড়িটি। এ বার শুধু জনসাধারণের জন্য চালু হওয়ার অপেক্ষা।
আরও শুনুন: ভাঙা খেলনা ফেলনা নয়, তা দিয়েই তৈরি হচ্ছে পশুদের জন্য হুইলচেয়ার
এটিই নাকি পৃথিবীর প্রথম ডুয়াল মোড ভেহিক্যাল। বানিয়ে ফেলেছেন জাপানের একটি গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থা। সেখানকার কাইও শহরে প্রথমবার আত্মপ্রকাশ করবে এই নয়া প্রযুক্তির গাড়ি। জাপান সরকারের তরফে সরকারি ভাবে চালু করা হল গাড়িটি।
ভাবছেন তো, একটাই গাড়ি কী ভাবে একই সঙ্গে রাস্তা ও রেললাইনে চলবে!
সেখানেই তো রয়েছে প্রযুক্তির খেলা। গাড়িটির প্রস্তুতকারক সংস্থা জানিয়েছে, গাড়িটির চাকায় একই সঙ্গে রয়েছে রাবারের টায়ার, যা সাধারণ বাস রাস্তায় যানটিকে চলতে সাহায্য করবে। আবার রয়েছে স্টিলের তৈরি চাকাও, যা রেললাইনে উঠলে রাবারের টায়ারকে ঢেকে সামনের দিকে বেরিয়ে আসবে। ফলে রাস্তায় ও রেললাইনের ট্র্যাকে সমান দক্ষতায় এগিয়ে যেতে পারবে এই ডুয়াল মোড বাহনটি।
আরও শুনুন: স্বয়ংক্রিয় মোডে চলল গাড়ি, চালকের আসনে বসেই সন্তানের জন্ম দিলেন মালকিন
রেললাইনে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ছুটতে পারবে এই গাড়ি। এক বারে ২১ জনের মতো যাত্রী বহনে সক্ষম এই ডিএমভি। জাপানের প্রত্যন্ত জায়গাগুলি, যেখানে বাসা বা ট্রেন কোনও একটা চলাচলের সুবিধা নেই, সে সব জায়গায় যাতায়াতে বাসিন্দাদের বিশেষ সাহায্য করবে গাড়িটি। যাত্রীদের বারবার বাস বা ট্রেন ভেঙে ভেঙে যেতে হবে না। বয়স্কদের ক্ষেত্রে তো বিশেষ সুবিধা হবে বলেই মনে করছে জাপানের পরিবহণ দপ্তর। পাশাপাশি পর্যটকদের টানতেও সাহায্য করবে এই আকর্ষণীয় বাহনটি।
দক্ষিণ জাপানের শিকোকু উপকূল-সংলগ্ন এলাকাতেও ডিএমভি চানানোর পরিকল্পনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের। সেখানকার দারুণ ভিউ যাত্রীদের জন্য উপরি পাওনা হবে বলেও মনে করা হচ্ছে। এতে পর্যটন শিল্পও আরও লাভের মুখ দেখবে। তবে শুধু জাপানে নয়, এমন একটা গাড়ি যদি সত্যিই পৃথিবী জুড়ে চলতে শুরু করে, তবে তা আক্ষরিক অর্থেই হয়ে উঠবে বৈপ্লবিক।