প্রিয়তমা পত্নী মমতাজের মৃত্যুর পর তাজমহল বানিয়েছিলেন সম্রাট শাহজাহান। পরে সেই সমাধিমন্দিরেই স্থান হয় তাঁর নিজেরও। মৃত্যুর পরেও একসঙ্গেই থেকে যান এই রাজদম্পতি। সেই একসঙ্গে থাকার ইচ্ছে নিয়েই মৃত্যুর আগেভাগে নিজেদের জন্য সমাধিস্থল বানিয়ে ফেললেন এই দম্পতিও। আসুন, শুনে নেওয়া যাক তাঁদের কথা।
প্রেমের টান একেই বলে! সারাজীবন ধরে এক অপরের সঙ্গে থাকতে চাওয়ার ইচ্ছে জোগায় প্রেম। আর কেবল জীবনে নয়, মৃত্যুর পরেও তো সঙ্গী কিংবা সঙ্গিনীর স্মৃতিকে আঁকড়ে থাকেন অনেকেই। এই দম্পতির গল্পটাও অনেকটা সেরকমই। তবে কেবল অন্যজনের স্মৃতি আঁকড়েই থাকতে চান না তাঁরা। তাঁরা চান, মৃত্যুর পরেও যেন কেউ তাঁদের আলাদা করতে না পারে। আর সেই কারণেই, মৃত্যুর আগেই নিজেদের জন্য সমাধিস্থল বানিয়ে ফেলেছেন এই বৃদ্ধ দম্পতি। তার জন্য নিজেদের সারাজীবনের সঞ্চয় খরচ করে ফেলতেও দ্বিধা করেননি তাঁরা।
আরও শুনুন: ১০০ সন্তানের বাবা হওয়াই লক্ষ্য! ৬০ বছরে ২৬ বার বিয়ে পাকিস্তানের ব্যক্তির
কী ঘটেছে ঠিক?
ওড়িশার সোরি গ্রামের বাসিন্দা লক্ষ্মণ ভুঁইয়া এবং তাঁর স্ত্রী জেঙ্গি। লক্ষ্মণের বয়স আশি পেরিয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে। তাঁর স্ত্রীর বয়সও প্রায় ৭০। কিন্তু এই দুই বয়স্ক মানুষকে দেখাশোনা করারও কেউ নেই। খোঁজখবর রাখেন না ছেলেমেয়েরাও। একে অপরের উপর নির্ভর করেই বেঁচে রয়েছেন এই দম্পতি। আর তাই, মৃত্যুর পরেও এভাবেই একসঙ্গে থেকে যেতে চান তাঁরা। কিন্তু জীবদ্দশায় যারা তাঁদের পাশে নেই, নিজেদের শেষকৃত্যের জন্যও তাদের উপরে নির্ভর করতে চান না এই দম্পতি। তাই নিজেদের পুঁজি ভেঙে, এমনকি জমিজমা বিক্রি করে নিজেদের জন্য সমাধিস্থল তৈরি করেছেন তাঁরা। এমনকি সেরে ফেলেছেন নিজেদের শ্রাদ্ধও। গ্রামবাসীদের সেই উপলক্ষে পেট পুরে ভোজও খাইয়েছেন এই বৃদ্ধ দম্পতি।
আরও শুনুন: কী কাণ্ড! মাছ খেতে গিয়ে বিপত্তি, কাঁটাচামচ কামড়ে ধরল ‘জ্যান্ত মাছ’
বছর কয়েক আগেই নিজেদের শেষকৃত্যের কথা ভেবে এইসব কাজ সেরে রেখেছেন ওই দম্পতি। সমাধিস্থল বানাতে খরচ পড়েছে দেড় লক্ষ টাকা। লক্ষ্মণের সম্বল বলতে ছিল কিছুটা জমি। সমাধিস্থল বানানোর জন্য সেই জমিটুকুই বিক্রি করে দিয়েছিলেন তিনি। আর জমি বিক্রি করে পাওয়া সব টাকা দিয়েই নিজেদের শেষ আশ্রয় গড়েছেন ওই বৃদ্ধ। শাজাহান-মমতাজের মতো রাজকীয় প্রেমের গল্প নয় তাঁদের। কিন্তু একেবারেই সাধারণ দুজন মানুষের পরস্পরকে আঁকড়ে থাকার এই কাহিনিও চমকে দিয়েছে সকলকেই।