কোটি কোটি টাকা খরচে তৈরি হয়েছে অযোধ্যার রামমন্দির। যার জন্য দিনরাত এক করে পরিশ্রম করেছেন দেশের হাজার হাজার শিল্পী। তাঁদের অনেকেই এবার বিদেশে কাজের বরাত পাচ্ছেন। ঠিক কোন কাজের জন্য ভিনদেশে ডেকে পাঠানো হচ্ছে শিল্পীদের? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
লোকসভা ভোটের আগে অযোধ্যায় রামমন্দির প্রতিষ্ঠা। শুধু ভারত নয়, সারা বিশ্বেই সাড়া ফেলেছে এই মন্দির নির্মাণ। মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াইয়ের ইতিহাস তো বটেই, সেই সঙ্গে মন্দিরের কারুকাজও মুগ্ধ করছে সকলকে। আর সেই কাজের নেপথ্যে থাকা শিল্পীদেরও খ্যাতি ছড়াচ্ছে সারা বিশ্বে।
রাম মন্দির প্রতিষ্ঠার সময়ই সামনে এসেছিল খরচের হিয়াস। জানা গিয়েছিল, মোট ১৮ হাজার কোটি টাকা খরচে তৈরি হচ্ছে এই মন্দির। যদিও সম্পূর্ণ মন্দির তৈরি হতে এখনও ঢের বাকি। স্রেফ গর্ভগৃহ এবং তৎসংলগ্ন কিছু অংশ তৈরি হয়েছে। সেখানেও চমকের অন্ত নেই। সোনার দরজা থেকে ঝাঁ চকচকে শ্বেত পাথরের অন্দরমহল, রামমন্দিরের অন্দরসজ্জা অবাক হয়ে দেখেছে গোটা বিশ্বের মানুষ। এক টুকরোও লোহা ব্যবহার হয়নি এই মন্দির নির্মানে। অথচ আগামী ১০০০ বছরেও মন্দিরের এতটুকু ক্ষতি হবে না বলেই দাবি কর্তৃপক্ষের। আর এইসব কাজ দক্ষ শিল্পীর হাত ছাড়া কি সম্ভব! একেবারেই নয়। রাম মন্দির তৈরিতে নিযুক্ত ছিলেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের শিল্পীরা। যাঁদের কদর এখন গোটা বিশ্বে।
মন্দির নির্মান শিল্প মোটেও সহজ ব্যাপার নয়। এই কাজ অনেকেরই পারিবারিক ব্যবসা। তবে এর জন্য পড়াশোনাও করতে হয় রীতিমতো। দেশের যে কোনও আর্ট কলেজেই এই পাঠ দেওয়া হয়। তবে তামিলনাড়ুর গর্ভমেন্ট কলেজ অফ আর্কটেকচার অ্যান্ড স্কাল্পচার গোটা দেশের মধ্যে বিখ্যাত। এখানকার প্রাক্তন পড়ুয়ারা বিশ্বের নানা প্রান্তে মন্দির তৈরির বরাত পান। সুদূর আফ্রিকা থেকে ব্রিটেন ঘেঁষা শহরের শেষপ্রান্তে মন্দির তৈরির প্রয়োজন হলে তাঁদেরই ডেকে আনা হয়। তাঁদের দাবি, রামমন্দির নির্মানের পর গোটা বিশ্বেই মন্দির তৈরির প্রবণতা বেড়েছে। কিছুদিন আগে সৌদি আরবেও তৈরি হয়েছে বিরাট এক হিন্দু মন্দির। স্রেফ হিন্দু নয়, বৌদ্ধ, জৈন মন্দিরও তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন প্রদেশে। কোনও ক্ষেত্রে সাধারণ বাড়ি বানিয়ে দায়সারা কাজ হচ্ছে না। একেবারে মন্দিরের আদলে গড়া হচ্ছে নতুন নির্মান। অন্দরসজ্জার জন্যও বিশেষ অনুরোধ আসছে বলেও জানিয়েছেন আর্ট কলেজের প্রাক্তনিরা। সবমিলিয়ে রামমন্দির তৈরির পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মন্দির তৈরির পরিমান বেড়ে যাওয়ায় তাঁরা বেজায় খুশি। যেখানে আইআইটির মতো প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারাও কাজের জন্য দিশাহারা হচ্ছেন। সেখানে মন্দির নির্মান শিখেই মোটা টাকা রোজগার করছেন এই কলেজের পড়ুয়ারা। সবমিলিয়ে রামমন্দির তৈরিকে সামনে রেখেই রোজগারের নতুন দিশা খুঁজে পাচ্ছেন দেশের ভাস্কররা।