পকেটে পয়সা নেই, এদিকে নিশ্চিন্তে হোটেলে রাত কাটাচ্ছেন যুবক। কেউ টাকা পয়সা চাইছেও না। একবার নয়, প্রায় ৩০০ হোটেলে এমনভাবে রাত কাটিয়েছেন ওই যুবক। কিন্তু কেন তাঁর কাছে কেউ টাকার দাবি করে না? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
কথায় বলে, বুদ্ধি যার বল তার। ঠিক সময় ঠিক জায়গায় বুদ্ধি কাজে লাগাতে পারলে, সব কাজ সহজ হয়ে যায়। এই যুবকও তেমনটাই করেছিলেন। তবে তাঁর উদ্দেশ্য মোটেও সৎ ছিল না। তাই শেষমেশ ধরা পড়তেই হয়। কিন্তু ততদিনে মনের সাধ মিটিয়ে নিয়েছেন তিনি।
:আরও শুনুন:
বাচ্চা কোলে সাহায্যের জন্য হাত বাড়ালেন মহিলা, হঠাৎ কন্ডোম এগিয়ে দিলেন ডাক্তারবাবু
ঠিক কী করেছেন?
তেমন কিছুই না, স্রেফ বিনে পয়সায় নামীদামী হোটেলে রাত কাটিয়েছেন। কোনও জায়গাতেই টাকা দিতে হয়নি তাঁকে। বরং কিছু কিছু হোটেলের তরফে টাকা পেয়েছেন ওই যুবক। এমনিতে এমন সুযোগ ইউটিউবাররা পেয়ে থাকেন। বদলে সেই হোটেলের হয়ে প্রচার করতে হয় তাঁদের। এই যুবক তেমন কিছু না করেই বিনামূল্যে হোটেলে থাকার সুযোগ পেয়েছেন। অন্তত ৩০০ হোটেলে এইভাবে রাত কাটিয়েছেন তিনি। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে, কোন ক্ষমতার বলে এমনটা করলেন? সহজ কথায় বললে, বুদ্ধির জোরে এমনটা করেছেন ওই যুবক।
ঘটনা চিনের। এমনিতেই সে দেশের মানুষজন পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাকে আলাদা গুরুত্ব দেয়। সেকথা এই যুবক ভালমতো জানেন। রাস্তাঘাটেও এতটুকু নোংরা থাকে না। কেউ নোংরা ফেললে দিতে হয় জরিমানা। যেখানে রাস্তাঘাট এত পরিষ্কার, সেখানে হোটেল রুমও ঝাঁ-চকচকে হওয়াই স্বাভাবিক। অতিথিরা যদি কোনওভাবে হোটেলের ঘরে নোংরা খুঁজে পান, তাহলে ক্ষমা চাইতে বাধ্য থাকে হোটেল কর্তৃপক্ষ। এই বিষয়টাকেই হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগান ওই যুবক। অন্যান্য অতিথির মতো তিনিও স্বাভাবিক ভাবেই হোটেলে চেক-ইন করতেন। প্রথমে টাকা দেওয়ার প্রয়োজন নেই, বেছে বেছে এমন হোটেলেই পা রাখতেন। এরপর ঘরে ঢুকেই চুপিসাড়ে নোংরা করে ফেলতেন সেই জায়গা। অল্প সময়ে ঘর অগোছালো করা সম্ভব নয়, তাই পকেটে ভরে ব্যবহৃত নোংরা কন্ডোম আর মরা আরশোলা নিয়ে যেতেন তিনি। একটু সুযোগ পেলেই সেসব ছড়িয়ে দিতেন হোটেল ঘরের ইতিউতি। এরপর শুরু হত আসল খেলা! চূড়ান্ত নাটকীয়তার সঙ্গে হোটেলের ম্যানেজারকে ডেকে পাঠাতেন ওই যুবক। নোংরার দিকে ইঙ্গিত করে প্রশ্ন করতেন, এইসব কেন পরে আছে? এমন একটা পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করতেন, যাতে মনে হয় বিষয়টা সত্যি সত্যিই হয়েছে। ঘাবড়ে গিয়ে সব দায় মেনে নিত হোটেল কর্তৃপক্ষও। সঙ্গে সঙ্গে ওই ঘর পরিষ্কার করে দেওয়া হত, সেইসঙ্গে জরিমানা হিসেবে যুবকের হোটেলে থাকার ভাড়া মুকুব হয়ে যেত। কোথাও আবার আলাদা করে টাকাও দেওয়া হত ওই যুবককে, পাছে তিনি বাইরে গিয়ে হোটেল সম্পর্কে খারাপ কিছু না বলেন!
:আরও শুনুন:
‘ডিজিটাল কন্ডোম’ শুনে চমকে উঠলেন! ঘুরছে হাতে হাতে, কীভাবে কাজে লাগে জানেন?
কিন্তু যতই বুদ্ধি করে হোক, ব্যাপারটা লোক ঠকানো। তাই বেশিদিন জালিয়াতি চালিয়ে যেতে পারেননি ওই যুবক। হাতেনাতে ধরা পড়েন কোনও এক হোটেলে। বিষয়টা জানাজানি হতেই, শোরগোল পড়ে যায়। এতদিন যেসব হোটেলে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন ওই যুবক, তাঁরাও এগিয়ে আসেন। যুবকের বিরুদ্ধে জমা পড়ে একগুচ্ছ অভিযোগ। সেসবের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। একটু খোঁজ করতেই দেখা যায়, যুবকের ব্যাগে অসংখ্য নোংরা কন্ডোম আর মরা আরশোলা রাখা আছে। জেরার পর বিষয়টা মেনে নেন ওই যুবকও। আইনি পথে চলছে তাঁর বিচার। কিন্তু যেভাবে বুদ্ধি করে বিনে পয়সায় রাত কাটিয়েছেন ওই যুবক, তাতে অবাক হয়েছেন সকলেই।