ডিমে মজুত ক্যালশিয়াম, আয়রন, মিনারেল, প্রোটিন। থাকে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, যা বিভিন্ন জটিল রোগ প্রতিরোধ করে। অনেকেই মনে করেন ডিম খাওয়া হার্টের পক্ষে ভালো নয়। ভাবেন, যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, ডিম খেলে তাঁদের রক্তচাপ বাড়ে। আদতে কোনটা মিথ্ আর কোনটা ঠিক, শুনে নিন।
আমাদের বেঁচে থাকার জন্য বিশেষ দরকার প্রোটিনের। এই করোনাকালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বারবার বলছেন, প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার কথা। সেই তালিকায় অবশ্যই রয়েছে ডিম। কিন্তু কোন ডিম ভালো! হাঁসের ডিম নাকি মুরগির ডিম। হাঁসের ডিমের ক্ষেত্রে সমস্যা, দুটো। দাম বেশি। বাজারে মেলেও কম। মুরগির ডিম একেবারেই সহজলভ্য।
আরও শুনুন: Chocolate খাবেন না ঠিক করেছেন! এর উপকারিতা কী জানেন?
আগে এই দুইয়ের মধ্যে প্রোটিনের ভাগ কোনটায় কতটা , তা দেখে নেওয়া যাক। মুরগির ডিমে একশ গ্রামে প্রোটিন থাকে ১৩.৩ গ্রাম, আর হাঁসের ডিমে একশ গ্রাম পিছু ১৩.৫ গ্রাম। একেবারেই উনিশ বিশ। হাঁসের ডিমে মুরগির ডিমের তুলনায় থাকে সামান্য বেশি ক্যালরি। ডিমের কুসুমে থাকে ভিটামিন এ, কোলেস্টেরল, ক্যালশিয়াম এবং ফসফরাস। ভিটামিন-এ চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এই জন্য মা ঠাকুমারা বলতেন, ডিম খেলে চোখের জ্যোতি বাড়ে। ডিমে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ আয়রন। তাই রক্তাল্পতা দূর করতে এর জুড়ি মেলা ভার। উপস্থিত ক্যালশিয়াম এবং ফসফরাস সাহায্য করে হাড়ের গঠনে। উপস্থিত অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সাহায্য করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে। ক্যান্সার আক্রান্ত বা ডায়ালিসিসের রোগীদের ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
আরও শুনুন: Alcohol: সুরাপানে দূরে যায় রোগ, তবে মানতেই হবে এই শর্ত
প্রতিটি খাবারের মধ্যে থাকা প্রোটিনের থাকে বায়োলজিক্যাল ভ্যালু। সোজা করে বলতে গেলে একটা খাবার খেলে তার মধ্যের কতটা প্রোটিন শরীর নিতে পারে বা নেবে, সেই হচ্ছে সেই খাবারের বায়োলজিক্যাল ভ্যালু। ডিমের এই ভ্যালু হল ছিয়ানব্বই শতাংশ, অর্থাৎ ডিমের ৯৬ শতাংশ প্রোটিন শরীর গ্রহণ করে। সেখানে যদি রোজ মাছ বা মাংস খান, তাদের বায়োলজিক্যাল ভ্যালু যথাক্রমে ৮০ এবং ৭৪। দামের দিক থেকে মাছ এবং মাংসের সঙ্গে ডিমের তুলনাই চলে না। ফলে বোঝাই যাচ্ছে ডিম রয়েছে অনেকটাই এগিয়ে।
এবার আসা যাক বাচ্চাদের ডিম খাওয়ার কথায়। বাচ্চাদের বয়স ছয় মাস পেরোলে দিনে একটা করে ডিমের কুসুম তাকে খাওয়ানো যেতে পারে। তবে এই বয়সের বাচ্চাদের কিছুতেই সাদা অংশ দেওয়া যাবে না। সাদা অংশ খেলে হজমের সমস্যা হয়। বাচ্চার বয়স এক পেরলে খাওয়ানো যায় গোটা একটা ডিম। বয়স চার পেরলে সকাল সন্ধে দুটো ডিম খাওয়ানো যেতেই পারে। তবে বাচ্চার ডিম খেলে অ্যালার্জি হচ্ছে কি না বা অন্য কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না সে বিষয়ে নেওয়া উচিত, শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ।