আপাতদৃষ্টিতে উদ্দাম নাচের সঙ্গেই যেন মানায় এই গান। ‘আরআরআর’ সিনেমায় ‘নাটু নাটু’ গানের দৃশ্যায়নও হয়েছে সেইভাবেই। কিন্তু সেইটুকুই কি এই গানের বক্তব্য? নাকি অন্য কিছু বলতে চেয়েছে এই গান? অস্কার জয়ের পর সামনে এল সে কথাই। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
প্রথমে গোল্ডেন গ্লোব, তারপর অস্কার। বিশ্বের মঞ্চে পরপর সেরার সম্মান জিতে নিল ‘আরআরআর’ সিনেমার গান ‘নাটু নাটু’। জনপ্রিয় গানটির নাচের তালে মেতে উঠেছে অস্কারের মঞ্চও। কিন্তু ‘নাটু নাটু’ কি শুধু নাচের গান? কী অর্থ রয়েছে এই শব্দবন্ধের, অস্কার জয়ের পর জানালেন মূল গানটির গীতিকার চন্দ্র বোস। এই গানের দ্রুত ছন্দের আড়ালে যে অন্যরকম এক কাহিনি লুকিয়ে রয়েছে, সে কথা জানিয়েছেন গানটির সুরকার এম এম কিরাবাণী এবং ‘আরআরআর’ সিনেমার পরিচালক রাজামৌলিও।
ঠিক কী অর্থ রয়েছে এই গানটির?
আরও শুনুন: ‘তোমরা ভারতে বসবাসের যোগ্য নও’, বন্ধুর ‘বাক্যবাণ’ ভুলতে পারেননি নাসিরুদ্দিন শাহ
‘নাটু নাটু’ গানটির কথা লিখেছেন যিনি, সেই গীতিকার চন্দ্র বোস বলেছেন, তাঁর ছোটবেলার স্মৃতি থেকেই লেখা এই গান। তিনি জানিয়েছেন, ‘নাটু’ কথার অর্থ গ্রাম্য এবং অকৃত্রিম। আসলে যা কিছু গ্রাম থেকে উঠে আসা, তার মধ্যে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখা শৌখিনতা সেভাবে থাকে না। তা মনের ভাবকে অনেক স্পষ্ট এবং খোলাখুলি প্রকাশ করে। তাতে লেগে থাকে মাটির গন্ধ। আর সেই কারণেই নাগরিক জীবন তাকে চট করে মেনে নিতে পারে না। সিনেমায় ‘নাটু নাটু’ গানের দৃশ্যায়নেও দেখা গিয়েছে এমনই ভাবনা। সেখানে ব্রিটিশদের এক শৌখিন পার্টিতে দেশি মানুষের নিজের সুর, নিজের কথা, নিজস্ব ছন্দকে এই গানের মধ্যে দিয়ে তুলে ধরেছিলেন দুই নায়ক, রাম চরণ তথা আল্লুরি সীতারাম রাজু ও এনটিআর জুনিয়র তথা কোমারাম ভীম। ব্রিটিশদের সঙ্গে এ দেশের মানুষের লড়াইকে কেন্দ্র করেই যে সিনেমা তৈরি হয়েছে, সেখানে এই গানটি নিছক গান হয়ে আসেনি, বরং তা হয়ে উঠেছে সেই লড়াইয়েরই এক অন্যরকম হাতিয়ার। পরিচালক রাজামৌলি সাফ বলছেন, দর্শকের কাছে এই গানের সিকোয়েন্সটি হয়তো স্রেফ নাচ-গানের দৃশ্য, কিন্তু কাহিনির বিচারে এটিও আদতে যুদ্ধেরই ছবি। আর সেই বিষয়টিকে ধরতেই এই দ্রুত তালের অবতারণা, বলছেন সুরকার কিরাবাণী। এই গানের কথাতেও জুড়ে রয়েছে সেই মাটির গন্ধ। ছোটবেলায় গ্রামে বড় হওয়ার যে স্মৃতি, তাই তাঁকে এই গান লেখার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে বলে জানিয়েছেন এই গানের গীতিকার চন্দ্র বোস।