পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে হবে যৌন দৃশ্য। দর্শকদের মনে হবে যেন সত্যি উদ্দাম যৌনতায় মেতে উঠেছেন অভিনেতা অভিনেত্রীরা। অথচ আসল গল্পটা তো অন্য। এইরকম দৃশ্যে ঠিক কী ঘটে রুপোলি পর্দার নেপথ্যে? শুনে নেওয়া যাক।
কেবল পর্ন সিনেমাই নয়, অনেকসময় অন্য সিনেমাতেও দেখা যায় যৌন দৃশ্য। কখনও তার অনেকখানিই ফুটিয়ে তোলা হয় ইশারা ইঙ্গিতে, কখনও আবার খোলামেলা যৌনতাকেই ফুটিয়ে তোলে সেই দৃশ্যগুলি। আগে যেখানে সঙ্গম দৃশ্য বা প্রেমের দৃশ্য প্রতীকী হিসেবে দেখানো হত, এখন তা অনেকটাই সহজ ও বাস্তবসম্মত করে দেখানো হয়। কিন্তু মুশকিল হল, পর্ন সিনেমায় অভিনেতা অভিনেত্রীদের যে মানসিক প্রস্তুতি থাকে, এখানে তো ঠিক তেমন নয়। যা একান্তই বেডরুমের কাজ, সেটিকেই করতে হয় অনেকের চোখের সামনে। ক্যামেরার সামনে। ই সিনেমায় যৌন দৃশ্য যতই জলভাত হয়ে যাক না কেন, ক্যামেরা এবং বাইরের লোকের চোখের সামনে নিজের শরীরকে মেলে ধরতে অস্বস্তিতে পড়েন অনেকেই। আবার পর্ন তারকাদের মতো সরাসরি যৌনতায় লিপ্ত হওয়ার প্রশ্নও নেই। অভিনয়ের মাধ্যমেই ফুটিয়ে তুলতে হয় সমস্ত বাস্তব অনুভূতি। সুতরাং কাজটি খুব একটা সহজ যে নয়, তা বলাই বাহুল্য। তাহলে ঠিক কীভাবে শুট করা হয় এইরকম দৃশ্যগুলি?
সিনে নির্মাতারা জানান, আসলে বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করেই এই দৃশ্যগুলিকে বাস্তবের মতো করে তোলা হয়। যেমন ধরা যাক ‘ফিফটি শেডস অফ গ্রে’ সিনেমার কথাই। সেখানে খোলামেলা যৌনতা দেখানো হয়েছে একাধিক দৃশ্যে। অনেকসময় অভিনেতা অভিনেত্রীদের নগ্নতাও দেখা গিয়েছে এই সিরিজের ছবিগুলিতে। তার অনেকটা অংশ অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু কিছুটা ডিজিটাল ইমেজারি ব্যবহার করেও তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন এই সিনেমার চিত্রগ্রাহক। আবার ‘গার্লস’-এর প্রযোজক জোর দিয়েছেন রিহার্সালের উপরেই। যদিও তারপরেও এইসব দৃশ্য শুট করতে অনেকসময়ই অস্বস্তিতে পড়তে হয় সিনেমার কলাকুশলীদের। আর সেই অস্বস্তি দূর করার জন্যই থাকেন বিশেষ প্রশিক্ষকেরা। এইসব ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে কীভাবে অভিনয় করতে হবে, তা বুঝিয়ে দেন তাঁরা। ভারতীয় সিনেদুনিয়ায় বর্তমানে এই কাজটি করেন আস্থা খান্না। তিনি জানিয়েছিলেন, এইরকম দৃশ্যের জন্য একটি কিট থাকে তাঁর। আর তাতে থাকে মহিলা অভিনেত্রীর শারীরিক উত্তেজনার অভিনয়ের জন্য কৃত্রিম পুরুষাঙ্গ, পুরুষের উত্তেজনার মুহূর্তকে আড়াল করার জন্য অ্যাথলেটিক গার্ড, নগ্ন দৃশ্যে যাতে অভিনেতা অভিনেত্রীদের সম্পূর্ণ নগ্ন না হতে হয় তার জন্য বিশেষ পোশাক, এ ছাড়া মিন্ট ট্যাবলেট, ব্রাশ, ডিওডোরেন্ট স্প্রে, নেল কাটার, মাউথ ফ্রেশনার ইত্যাদি অনেক কিছুই। যখন যা প্রয়োজন হয়, তা ব্যবহার করেই এই দৃশ্যগুলিকে আসলের মতো করে তুলতে সাহায্য করেন তিনি, জানিয়েছিলেন আস্থা।