কৌতুক আর ভারতী যেন সমার্থক শব্দ। টিভির পর্দা থেকে শুরু করে মঞ্চ, সব জায়গাতেই একই রকম সাবলীল তিনি। মন জিতেছেন অসংখ্য দর্শকের। অনেকেই অবশ্য জানেন না, এই ভারতী-ই এককালে ছিলেন জাতীয় স্তরের শুটার। আসুন শুনে নিই, তাঁর জীবনের সেই অজানা গল্প।
টিভির পর্দায় হোক বা মঞ্চ, সব ধরনের জায়গাতেই সমান সাবলীল তিনি। মঞ্চে তিনি এসে দাঁড়ালেই একটুকরো হাসি খেলে যায় দর্শকদের মুখে। তাঁর একেকটা সংলাপ, ছুঁড়ে দেওয়া একেকটা বক্তব্য যেন তির। সেসব এসে বিদ্ধ করে দর্শককে। আর সেই কৌতূকবানে বিদ্ধ দর্শক হাসতে হাসতে লুটিয়ে পড়েন মাটিতে। এত কথা যাঁকে নিয়ে, তিনি আর কেউ নয়, দেশের অন্যতম জনপ্রিয় কৌতুকশিল্পী ভারতী সিং। তা কৌতুকের মঞ্চ হোক বা প্রতিযোগিতার ময়দান, নিশানা কখনও ব্যর্থ হয় না তাঁর। হবেই বা কী করে, তিনি যে জাতীয় স্তরের বন্দুকবাজ।
আরও শুনুন: অনুপ্রেরণা অভিষেক বচ্চনের সিনেমা, বোর্ডের পরীক্ষায় সফল ভাবে উত্তীর্ণ ১২ কয়েদি
অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়ই শুনে। যে ভারতী একেকটা কৌতুক-স্কিট, অভিনয় করে হাজার হাজার দর্শকদের মন জিতে নেন, তার যে এমন একটা দিক রয়েছে তা জানতেন না অনেকেই। তবে সম্প্রতি সহশিল্পী মনীশ পলের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে এমন কথাই জানিয়েছেন বিখ্যাত এই কৌতুকশিল্পী। তথাকথিত নায়িকাসুলভ চেহারার অধিকারী ভারতী নন কোনওদিনই। বরং নিজের সবটুকুকে কীভাবে নিজের শিল্পে ব্যবহার করা যায়, তা তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন বারবার। ভারতে দাঁড়িয়ে কমেডির জগতে যে অনেক কিছুই করতে পারেন মেয়েরা, তা দেখিয়ে দিয়েছেন ভারতী। অনুপ্রাণিত করেছেন আরও অনেক কৌতুকশিল্পীকে। সদ্য তিনি পা রেখেছেন নতুন জীবনে। মা হওয়ার ব্যাপারটি নিয়েও একই রকম স্বপ্রতিভ এই শিল্পী। অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন চুটিয়ে কাজ করেছেন। ছেলে হওয়ার অল্প দিনের মাথাতেই ফের যোগ দিয়েছেন কাজে।
আরও শুনুন: স্তন ছোট বলেই বাদ পড়েছেন সিনেমা থেকে, বলিপাড়ার গুপ্তকথা ফাঁস করলেন রাধিকা
এ হেন ভারতীর কৌতুকশিল্পী হিসেবে পথচলাটা শুরুটা কিন্তু হয়েছিল আকস্মিকই। একটা সময় পুনেতে পঞ্জাবের হয়ে জাতীয় স্তরের তীরন্দাজ ও শুটার ছিলেন ভারতী। কলেজেও ভর্তি হন স্পোর্টস কোটাতেই। তবে আজকের ভারতী হয়ে ওঠার পিছনে রয়েছে বেশ লড়াইও। আর্থিক অবস্থা ততটাও ভাল ছিল না কোনওদিনই। ভাই-বোনকে নিয়ে পরিবার টানতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হত ভারতীর মাকে। সেই সময় সরকারি কোটায় বিনামূল্যে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা পেতেন ভারতীর মতো খেলোয়াড়েরা। তা ছাড়া দৈনিক ১৫ টাকা করে ভাতাও পেতেন তাঁরা। সেই টাকা কোনও মতে জমিয়ে তুলে দিতেন পরিবারের হাতে। সেখান থেকেই একদিন লাফটার চ্যালেঞ্জের জন্য সুযোগ পেয়ে যান ভারতী। তার আগে অবশ্য থিয়েটারও করেছেন কিছু দিন। ‘লাফটার শো’ থেকেই দারুণ পরিচিতি পেয়ে গেলেন তিনি। ব্যস, আর ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক শো-তে অভিনয় করেছেন। পেয়েছেন সঞ্চালনার সুযোগও। সেখানেও মানুষের মন জিতে নিয়েছেন তিনি। আসলে জাতীয় স্তরে খেলাধূলার সেই সব দিনগুলোই আজও তাঁকে সব রকম পরিস্থিতিতে লড়ে যাওয়ার শক্তি জোগায়, জানিয়েছেন তুখোড় এই কৌতুকাভিনেতা।