কলকাতা থেকে লন্ডন। প্রায় ৮০০০ কিলোমিটারের এই দূরত্ব পাড়ি দিতে আগে জলপথ ছাড়া উপায় ছিল না। এখন এসেছে আকাশপথ, অর্থাৎ প্লেন। কিন্তু যদি বলা হয় স্থলপথেও পৌঁছানো সম্ভব কলকাতা থেকে লন্ডনে? এমনকি এককালে সম্ভব হয়েও ছিল এমনটা?
ভলভো বাসের আরামদায়ক যাত্রায় দূরপাল্লার গন্তব্যে পাড়ি দিয়েছি আমরা অনেকেই। এমনকি কলকাতা থেকে পড়শি বাংলাদেশেও বাস চলাচল রয়েছে। তা বলে সুদূর বিলেত? অর্থাৎ কিনা লন্ডন? তাও বাসে চড়ে? মাঝখানের এতশত দেশ, নদীনালা, সাগর পেরিয়ে? না, গল্প বলছি না মোটেও। কারণ ঠিক এই কাজটাই এককালে সম্ভব করেছিল ইন্ডিয়া ম্যান।
আরও শুনুন: জঞ্জাল ফেলার জন্য কলকাতায় তৈরি হয়েছিল রেলপথ, একসময় চলত ‘ধাপা মেল’
সে আবার কে? দাঁড়ান, বলছি।
‘ইন্ডিয়া ম্যান’ হল সেই বাসটি, যা যাতায়াত করত লন্ডন থেকে কলকাতা আর কলকাতা থেকে লন্ডনে। আজ থেকে ষাট বছরেরও বেশি সময় আগে চালু হয়েছিল এই স্থলপথে যাত্রা। ১৯৫৭ সালের ১৫ এপ্রিল লন্ডনের ভিক্টোরিয়া কোচ স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু ইন্ডিয়া ম্যানের। বাসটি দিনের বেলায় চলত, আর যাত্রীদের বিশ্রামের সুবিধার জন্য রাতে থামত কোনও হোটেলে। ফ্রান্স, ইতালি, যুগোস্লাভিয়া, বুলগেরিয়া, তুরস্ক, ইরান এবং পাকিস্তান হয়ে ভারতে প্রবেশ করে ইন্ডিয়া ম্যানের বাস। কলকাতায় এসে বাসটি পৌঁছেছিল জুন মাসের ৫ তারিখে। গন্তব্যে পৌঁছে বাসের ড্রাইভার এবং মালিক গ্যারো ফিশার জানিয়েছিলেন, গড়ে ২০০ কিলোমিটার পথ টানা বাস চালাতেন তিনি। ফের কলকাতা থেকে যাত্রা করে একই বছরের ২ আগস্ট লন্ডনে পৌঁছেছিল ইন্ডিয়া ম্যান।
আরও শুনুন: ৫১টি টিকি সংগ্রহ করেছিলেন হুতোম প্যাঁচা, উপাধি পেলেন ‘টিকি কাটা জমিদার’
অসওয়াল্ড জোসেফ এবং গ্যারো ফিশারের তত্ত্বাবধানে চালু হওয়া এই বাস সার্ভিসটি সেসময় বেশ জনপ্রিয়ও হয়েছিল। ২০ জন যাত্রী নিয়ে প্রথম যাত্রা করে বাসটি। তাঁদের মধ্যে ৭ জন রাউন্ড ট্রিপ নিয়েছিলেন, অর্থাৎ ফিরতি বাসে পুনরায় লন্ডনে ফিরে যান। বলাই বাহুল্য, টিকিটের দাম নেহাত কম ছিল না। লন্ডন থেকে কলকাতা যেতে যাত্রীদের গুনতে হত ৮৫ পাউন্ড, আর ফিরতি পথের ভাড়া ছিল ৬৫ পাউন্ড।
শুনে নিন বাকি অংশ।