আফগানিস্তান তালিবান দখলে। ফিরছে দুঃস্বপ্নের স্মৃতি। তালিবানি শাসন পৃথিবীর বুকে আবার কোন ক্ষতচিহ্ন বয়ে আনবে, তা দেখিয়ে দেবে ভবিষ্যৎ। তবে, জরুরি প্রশ্নটি হল, আফগানিস্তানের এই পটপরিবর্তনের কী প্রভাব পড়বে ভারতের ক্ষেত্রে? লিখছেন মণিশংকর চৌধুরী।
বিবর্তনের পথে ফের পিছিয়ে গেল আফগানিস্তান। দু’দশকের গণতন্ত্রে ‘মুক্ত হাওয়া’র আস্বাদ পাওয়া আফগানরা আবার সেই তিমিরে। সোভিয়েত পুতুল নাজিবুল্লার নিয়তি এড়িয়ে তাজিকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছেন আশরফ ঘানি। কাবুলের পথে এখন খবরদারি করছে কালশনিকভ হাতে তালিবান জঙ্গিরা। আর কার্যত হাত গুটিয়ে কূটনীতিকদের ‘নিরাপদ’ পলায়নের প্রস্তুতি করছে আমেরিকা। এহেন পরিস্থিতিতে প্রধানত দু’টি প্রশ্নই উঠে আসছে। এক, আফগানিস্তান থেকে কেনই বা হাত তুলে নিল আমেরিকা? এই পরিস্থিতিতে ভারতের উপর কী প্রভাব পড়তে চলেছে?
আরও শুনুন – আবার কি ফিরছে যৌনদাসী প্রথা! অন্ধকার যুগের আতঙ্কে কাঁটা আফগান মহিলারা
প্রথম প্রশ্নের উত্তর খুব সহজ নয়। বিশ্লেষকদের মতে, একাধিক কারণে আফগানিস্তান থেকে ফৌজ ফিরিয়েছে আমেরিকা। আফগানিস্তানে কোনওকালেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে যায়নি আমেরিকা। টুইন টাওয়ার হামলার পর অল কায়দা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে ওয়াশিংটনের হাতে তুলে দিতে চায়নি কাবুলের তালিবান শাসকরা। তাই বিশ্ব সন্ত্রাসবাদের নামে পাহাড়ি দেশটিতে হামলা চালিয়ে তালিবানকে ক্ষমতাচ্যূত করে আমেরিকা। তারপর প্রায় দু’দশক ধরে চলা লড়াইয়ে লাদেন খতম হয়। আল কায়দার কোমরও অনেকটাই ভেঙে যায়। দীর্ঘ আলোচনার পর তালিবানও আল কায়দাকে সামনের সারিতে না-আনার শর্তে রাজি হয়েছে। এর পর তো নতুন করে আমেরিকার কিছু পাওয়ার নেই। এদিকে, কাবুলে হামিদ কারজাইয়ের নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করে আমেরিকা। যার উত্তরসূরী আশরফ ঘানি। ফলে কৌশলগত দিক থেকে আমেরিকার উদ্দেশ্যপূরণ হয়ে গিয়েছে। তবে দুর্নীতিগ্রস্ত এই সরকার আসলে নামেই ছিল গণতান্ত্রিক। আমেরিকা বাইরে থেকে শক্তি প্রয়োগ করে ঘানিকে প্রেসিডেন্টের আসনে বসিয়েছিল। এ নিয়ে আমেরিকার প্রতি বিরূপ মনোভাব তৈরি হয়েছিল আফগানবাসীর।
আরও শুনুন – Sex Slave: যৌনদাসীর দিনরাত, ভয়াবহ অভিজ্ঞতা জানিয়েছিলেন Nadia Murad
প্রশাসনের শীর্ষ স্তরের মানুষেরা তালিবানকে চাইতেন না ঠিকই। কিন্তু পাশাপাশি আমেরিকাকেও পছন্দ করতেন না। তার কারণ, আফগানিস্তান জুড়ে আমেরিকার ক্রমাগত অত্যাচার। অনেক সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে আমেরিকার যুদ্ধংদেহী মনোভাবের কারণে। পাশাপাশি, মিলিশিয়াদের অত্যাচারেও বিরক্ত হচ্ছিলেন আফগানরা। এটা সত্যি যে এই মিলিশিয়া প্রধানরা বা সামন্তরাজারা তালিবানের বিরোধী। কিন্তু তাদের জনসমর্থনে ভাটা পড়েছে। ফলে কার্যত বিনা প্রতিরোধে হেরাত, কান্দাহার, মাজার-ই-শরিফের মতো শহরগুলি দখল করতে সক্ষম হয়েছে জঙ্গিরা।
বাকিটা শুনে নিন প্লে-বাটন ক্লিক করে।