কৃষকদের দিল জিততে অসফল হলেন স্বয়ং দিলজিৎ দোসাঞ্ঝ। এবারে কৃষকদের মন-কি-বাত যেন শুনতেই পেলেন না তিনি। মোদির সাথে দিলজিৎ সাক্ষাৎকারে কেন চটে গেলেন কৃষকরা? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
দিল জিততে তিনি ওস্তাদ, তবে এবার কৃষকদের মন-কি-বাত যেন শুনতেই পেলেন না দিলজিৎ দোসাঞ্ঝ। বছরের শুরুটা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পাশে দাঁড়িয়ে। সেই সাক্ষাৎ এবার উসকে দিল কৃষকদের ক্ষোভ। তাঁদের সাফ কথা, যদি কৃষকদের প্রতি তিনি সত্যিই দরদী হন, তাহলে তাঁদের পাশেই থাকতেন। প্রধানমন্ত্রীর পাশে কেন? প্রশ্ন তুললেন কৃষক নেতারা।
যে দেশ দ্রুত গড়িয়ে যাচ্ছে এআই সভ্যতার দিকে, সেই দেশে আজও চলছে কৃষক-আন্দোলন। নরেন্দ্র মোদি সরকারকে বারবার চিন্তায় ফেলেছে কৃষকদের এই সংগঠিত আন্দোলন। ২০২১ সালে তার জেরেই বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে হয়েছিল কেন্দ্রকে। তার পরেও অবশ্য আন্দোলন চলছে। ন্যায্য দাবি আদায়ে পথে নামাই যে পথ, তা বারবার দেখিয়েছেন দেশের অন্নদাতারা। কৃষকনেতা দাল্লেওয়াল চালিয়ে যাচ্ছেন অনশন। সম্প্রতি এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখেও পড়েছে কেন্দ্র। আর সেই নিরিখেই দিলজিতের অবস্থানে ক্ষুব্ধই হয়েছেন কৃষকরা। ২০২০ সালে এই আন্দোলন যখন রূপ পাচ্ছিল, তখন কৃষকদের পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছিলেন দিলজিৎ। কৃষকদের দাবি কেন মেনে নেওয়া হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁর ইনস্টাগ্রামে। এই মুহূর্তে দিলজিৎ তরুণদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। তাই তাঁর কথার আলাদা গুরুত্ব আছে। দেশের তরুণ প্রজন্মও জানতে পারছে, কৃষকদের দাবির কথা। তাঁদের দুরবস্থার কথা।
আরও শুনুন: প্রধানমন্ত্রিত্বের মেয়াদ পূরণ হবে না মোদির! মন কু গাইছে, বলছেন শিবসেনার সঞ্জয়
সেই পর্ব এখন অতীত। কৃষকদের অবস্থার যে এখনও পরিবর্তন হয়নি, আন্দোলনের ধারাবাহিকতাই সে সাক্ষ্য দিচ্ছে। তবে চার বছর পরে সেই দিলজিৎ বছর শুরু করলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে। তিনি গায়কের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। জানিয়েছেন, দিলজিতের মতো গ্রাম থেকে উঠে আসা কেউ যখন আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নিজের জায়গা করে নেন, তখন মুগ্ধ হতে হয়। অন্যদিকে দিলজিৎ জানিয়েছেন, প্রায়শই বলা হয়ে থাকে যে, ‘মেরা ভারত মহান’; তবে দেশের বাইরে যখন তিনি গিয়েছেন, আর এ কথা শুনেছেন, তখনই প্রকৃত পক্ষে অনুধাবন করেছেন এ-কথার অর্থ। প্রধানমন্ত্রী আর দিলজিতের সাক্ষতের ছবিও ছড়িয়ে পড়েছে নেটদুনিয়া। চার বছরে কি তাহলে বদলে গেলেন দিলজিৎ? কৃষকদের বক্তব্যের অভিমুখ যেন এদিকেই। তাঁদের বক্তব্য, দিলজিৎ তো শম্ভু সীমান্তে এসে কৃষকদের সঙ্গে দেখা করতে পারতেন! তাঁদের সমর্থন জানাতে পারতেন, যেমনটা তিনি আগে করেছিলেন। বদলে তিনি যেভাবে প্রধানমন্ত্রীর পাশে গিয়ে দাঁড়ালেন, তাতে তাঁর আগের অবস্থান নিয়েই যেন সন্দেহ জাগছে।
দিলজিৎ কি সত্যি বদলে গিয়েছেন? উত্তর দেবে সময়। তবে আপাতত দেশের মন জিতলেও, কৃষকদের দিল জিততে যে তিনি ব্যর্থ, তা নিয়ে কোনও সন্দেহই নেই।