সঙ্গী পছন্দে অভিনবত্ব। ভিন্ন রুচিতে মজেছেন আখিকা কিম্বা ব্লুমেরা। চলুন, শুনে নিই ঠিক কী ঘটলো।
প্রেমের ফাঁদ পাতা ভুবনে, কখন কে ধরা পড়ে কে জানে? ভুবন জুড়ে ভুবনমোহিনী কিন্তু পেতে রেখেছেন তাঁর জালটি। আর সে পথে কে যে কখন ধরা দেবে তা কিন্তু সে নিজেও জানে না। এই যেমন ধরুন জাপানের আখিকো, তিনি কি আদৌ জানতেন, শেষমেশ তিনি কিনা পড়বেন একজন অশরীরীর প্রেমে? কী ভাবলেন, ভুল শুনছেন! আরে না না।
বছর চল্লিশের আখিকো কন্ডো তাঁর প্রেমিকা হিসেবে নির্বাচন করেছেন এক অশরীরীকে। সে কিন্তু কোনও ভূত-প্রেত অথবা দৈত্য-দানো নয়। এই অশরীরী হল একজন কাল্পনিক চরিত্র। কীভাবে করলেন তিনি এই অসাধ্যসাধন, কীভাবেই বা তা প্রকাশ্যে এল? জানা গিয়েছে, আখিকো ছ’বছর আগে বিয়ে করেছেন,কাল্পনিক চরিত্র হাতসুনে মিকোকে। জাপানের ভোকলয়েড সফটওয়্যার দ্বারা পরিচালিত মিকো হল ভিডিও গেমের একটি চরিত্র। শুধু বিয়ে নয়, তাঁদের ছ-বছরের দাম্পত্যের বিবাহবার্ষিকীর মুহূর্ত পালনের খবর তিনি জানিয়েছেন সমাজমাধ্যমে।
তবে কি এবার সঙ্গী অথবা সঙ্গিনী নির্বাচনের জন্য মানুষ ঝুঁকে পড়ছে এআই-এর দিকে? ঠিক এরকমই প্রশ্ন উঠে আসে বটে। তবে মনস্তত্ত্বের পরিভাষায় এই বিচিত্র রুচিকে বলা হয় ‘ফিক্টোসেক্সচুয়াল’। বিজ্ঞান বলছে, ফিক্টোসেক্সচুয়ালিটি হল মানব যৌনতারই একটি প্রকারভেদ। নিজের মধ্যে ডুবে থাকা কিছু হাতে গোনা মানুষের যৌনতা তৈরি হয় কাল্পনিক চরিত্রদের আশ্রয় করে।
এ যদি অবাক করা কাণ্ড হয়, তাহলে আর এক দাম্পত্যের কথা শোনা যাক।
ইউটিউবার আইভি ব্লুমকে আমরা অনেকেই চিনি। তিনি প্রেমে পড়েছেন একটি গাছের। সম্পর্কের গভীরতার কথা তিনি তাঁর চ্যানেলের ভিডিওতেই প্রকাশ করেছেন। শুধু তাই নয়। একান্তে যাপন করছেন দু’জনের ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত। গাছের সঙ্গে কথোপকথনের জন্য তিনি গাছের সঙ্গে জুড়েছেন এ-আই। অর্থাৎ কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা। এর ফলে ব্লুম চাইলে গাছটি তাঁর সঙ্গে কথাও বলতে পারবে। দাম্পত্যে খানিক আলাপচারিতা না হলে চলে!
আরও শুনুন: বিয়ে করতেই ভয়! এই ফোবিয়াকে কী বলে জানেন?
ব্লুম অথবা আখিকোর কর্মকাণ্ড খানিক তাজ্জব করে বইকি। কিন্তু মুখোমুখি এনে দাঁড় করিয়ে দেয় আর এক গূঢ় প্রশ্নের। সম্পর্কের উষ্ণতায় মানুষের প্রয়োজন কি তবে ফুরিয়ে এল? নাকি মানুষের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়েই মানুষ সঙ্গী হিসাবে বেছে নিচ্ছে মানুষের বদলে অন্য কাউকে, এমনকী কাল্পনিক চরিত্রকেও! হয়তো এই ধরনের ‘দাম্পত্যের’ সংখ্যা বেশি নয়, তবু নিজেদের স্বার্থেই মানুষ বোধহয় এ প্রশ্ন কিছুতেই এড়িয়ে যেতে পারে না।