হাত থেকে ফোন পড়ে গিয়ে স্ক্রিনের একেবারে দফারফা। অথবা সাধের আই প্যাডটি ব্যাগ গলে মাটিতে, তারপর থেকেই স্ক্রিন কালো হয়ে গেছে! এইসব দিন আর দেখতে হবে না। সম্প্রতি কলকাতার বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন এমন এক প্রযুক্তি, ভাঙা ফোনের স্ক্রিন জুড়বে নিমেষেই। কী সেই প্রযুক্তি?
খেতে খেতে এক হাতে ফোন ঘাঁটছেন, অথবা অন্যমনস্ক হয়ে ফোন দেখতে গিয়ে আচমকা হাত থেকে ফোন সটান মাটিতে। আর এই ‘পপাত চ মমার চ’ হলেই অনেকেরই বুকের মধ্যে ছ্যাঁত করে ওঠে। ফোনের স্ক্রিনটা আর আস্ত রয়েছে তো! ফোন পড়লেই কোম্পানির ফোনের স্ক্রিন টুকরো টুকরো। পুরনো দিনের টিভি স্ক্রিনের মতো ফোনের ডিসপ্লে হয় ঝিরঝির করে, অথবা ফোনের স্ক্রিন কালো হয়ে বন্ধ করে দেয় কাজ। অনেক সংস্থা আবার ফোনের এই স্ক্রিন ভেঙে যাওয়ার সমস্যা থেকে গ্রাহকদের সুরাহা দিতে রেখেছেন স্ক্রিনের ইনস্যুরেন্স স্কিম। কিন্তু এরকম কোনও প্রযুক্তি যদি আসে, হাতের ফোন পড়ল মাটিতে, স্ক্রিন ফাটল বা ভাঙল কিন্তু আবার খানিক পর নিজে থেকেই জুড়ে গেল। শুনতে অবাক লাগলেও এমন প্রযুক্তি কয়েকজন বিজ্ঞানীর মাধ্যমে আবিষ্কার হয়েছে এই বাংলাতেই। আইআইএসইআর বা ‘ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন এন্ড রিসার্চ’ এবং আইআইটি বা ‘ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ টেকনলজি’ খড়গপুরের বিজ্ঞানীদের যৌথ গবেষণায় তৈরি হয়েছে এই প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তির পোশাকি নাম ‘সেলফ হিলিং ক্রিস্টাললাইন ম্যাটেরিয়াল’। ফোন পড়লে যেমন স্ক্রিন ফাটবে, এই বিশেষ প্রযুক্তির মাধ্যমে আবার জুড়েও যাবে।
আরও শুনুন – থর মরুভূমির বুকে স্কুল, অথচ নেই কোনও Air Conditioner!
বিজ্ঞানীদের এই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে, ‘আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর সায়েন্স’-এর ‘অ্যাডভান্সমেন্ট অফ সায়েন্স’ জার্নালে। গবেষণার প্রধান ছিলেন প্রফেসর সি মাল্লা রেড্ডি, সঙ্গে ছিলেন তাঁর অধীনস্থ একটি দল। গবেষণার মূল কেন্দ্র ছিল কলকাতার আইআইএসইআর। শুধু মোবাইলে নয় যে কোনও স্ক্রিনযুক্ত গ্যাজেটে স্ক্রিন ভাঙা থেকে জোড়া এই প্রযুক্তিতে কোনও ব্যাপার নয়। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, স্ক্রিনের অতিস্ফটিক উপাদান ভেঙে টুকরো হয়ে যাওয়ার পর, সেটা নিজে নিজেই কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আবার জুড়ে যাবে। শুধু তাই নয়, এতটাই নিপুণভাবে আগের মতো হয়ে যাবে, দেখে বোঝাই যাবে না, যে স্ক্রিন কখনও ভেঙেছিল। এই মেরামতির প্রক্রিয়ার প্রযুক্তি নাম, ‘হানিবি উইং-লাইক মোশন’।
আরও শুনুন – যেমন Breast তেমন Tax, প্রথার নামে দেশের মেয়েদের সইতে হত যৌন হেনস্তাও
সেলফ্ রিপেয়ার্ড এই গ্লাসগুলি একটু অন্য ধরণের। আর যে পদ্ধত্তিতে মেরামত হয় তার নাম, ‘পাইজোয়েলেক্ট্রিসিটি’। এই রিপেয়ারিং এর সময়ে মেকানিক্যাল এনার্জি স্বয়ংক্রিয় ভাবেই পরিণত হবে তড়িৎ শক্তিতে। গবেষণায় প্রকাশিত, ‘পাইজোয়েলেক্ট্রিসিটি’ মানুষ বা অন্য প্রাণীদের শরীরে উপস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি। এর মাধ্যমেই প্রাকৃতিকভাবে মানুষ বা অন্য প্রাণীরা নিজেদের শরীরের নানা কাটা ছেঁড়া বা অন্য ক্ষত প্রাকৃতিক নিয়মে মেরামত করে। বিজ্ঞানীদের দাবী সেই থেকেই তাঁরা এরকম এক আবিষ্কারের কথা ভাবতে শুরু করেন, এবং অনুপ্রেরণা মেলে।
বাকিটা শুনে নিন প্লে-বাটন ক্লিক করে।