চলতি বছরের শেষেই প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অবসর নেবেন ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। তাঁর জায়গায় নতুন করে আসবেন বিচাররপতি। অভিজ্ঞতা এবং বয়সের নিরিখেই শীর্ষ আদালতের বিচারপতিদের মধ্যে একজনকে এই পদ দেওয়া হয়। পরবর্তী প্রধান বিচারপতি তাহলে কে হবেন? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
দেশের শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি। গোটা দেশের আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে কার্যত শেষ কথা বলতে পারেন তিনিই। যে সংবিধান নিয়ে দেশের মানুষ এই মুহূর্তে উদ্বিগ্ন, সেই সংবিধানকে রক্ষা করার মূল দায়িত্ব বর্তায় তাঁর উপরই। সুপ্রিম কোর্টের সেই প্রধান বিচারপতির পদেই এবার বসতে চলেছেন বিচারপতি সঞ্জীব খান্না।
চলতি বছরেই শেষ হচ্ছে বর্তমান প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের মেয়াদ। ২০০২ সালের নভেম্বরে তিনি প্রধান বিচারপতি হয়েছিলেন। বলতে গেলে দেশের একের পর এক ল্যান্ডমার্ক রায় বেরিয়েছে তাঁর হাত থেকেই। চলতি বছরের নভেম্বরে তিনি অবসর নেবেন। শীর্ষ আদালতের নিয়ম অনুযায়ী, অভিজ্ঞতা ও বয়সের নিরিখে বর্ষীয়ান যিনি তিনিই এই পদে আসীন হবেন। সেই হিসাবেই পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হচ্ছেন সঞ্জীব খান্না।
ইতিমধ্যেই তাঁর নাম জানেন দেশের মানুষ। সৌজন্যে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। আবগারি দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হয়ে যিনি প্রায় ৫০ দিন ছিলেন জেলে। সম্প্রতি যে তিনি অন্তর্বর্তী জামিন পেয়েছেন তা মঞ্জুর করেছে শীর্ষ আদালতের দুই বিচারপতির বেঞ্চ। সেখানেই ছিলেন বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। ইভিএম ও ভিভিপ্যাট সংক্রান্ত যে মামলাটি ছিল সাম্প্রতিক রাজনীতির অন্যতম চর্চার বিষয়, তাও শুনেছিলে তিনি। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় সাম্প্রতিক অতীতে যে যে মামলায় পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ তৈরি করেছেন, তার প্রায় প্রত্যেকটিতেই ছিলেন বিচারপতি খান্না। অভিজ্ঞতার নিরিখে তিনিই যে চন্দ্রচূড়ের উত্তরসূরি, তা বলাই যায়।
আরও শুনুন: মোদিকেই চাই! ভোটের আগে ধন্যবাদ জানাতে মিছিল কাশীর মুসলিমদের
বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার জন্ম ১৯৬০-এর ১৪ মে। পারিবারিক দিক থেকে তাঁর বাড়িকে আইনি সংসারই বলা যায়। তাঁর মা ছিলেন অধ্যাপিকা। তবে, বাবা দেবরাজ খান্না দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি হয়েই অবসর নেন। তাঁর কাকা ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি। বিচারপতি সঞ্জীব খান্না প্রথম জীবনে ছিলেন আইনজীবী। ১৯৮৩ সালে শুরু করেন তাঁর আইনি কেরিয়ার। সে সময় ফৌজদারি মামলাও লড়েছেন তিনি। ২০০৫ সালে দিল্লি হাই কোর্টের অ্যাডিশনাল বিচারপতি হন, ২০০৬ সাল থেকেই কাজ করতে শুরু করেন দিল্লি হাই কোর্টেই স্থায়ী বিচারপতি হিসাবে। ২০১৯-এ তিনি শীর্ষ আদালতের বিচারপতি হন। তারপর থেকে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ মামলার সাক্ষী। সুপ্রিম কোর্ট অবজার্ভারের তথ্য বলছে, শীর্ষ আদালতে থাকাকালীন তিনি ৩৫৮টি বেঞ্চে বিচারপতি হিসাবে যোগ দিয়েছেন। প্রায় ৯০টি রায়ে তাঁর ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। সুপ্রিম কোর্টের কলোজিয়ামের নির্ধারিত তালিকা অনুযায়ী তিনিই দেশের প্রধান বিচারপতি হতে চলেছেন। চলতি বছরের শেষের সিকেই পাকাপাকি ভাবে আসতে পারে সেই ঘোষণা।