শীতকাল এলেই খাবারের রুটিনে যোগ হয় বেশ কিছু লোভনীয় পদ। সেইসঙ্গে বাদও যায় কয়েকটা খাবার। যেমন দই। ঠাণ্ডা পড়লেই অনেকে দই খাওয়া সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেন। কারণ, এতে নাকি ঠাণ্ডা লাগার সম্ভাবনা রয়েছে। সত্যিই কি তাই? নাকি শীতকালে দই খাওয়া বন্ধ করলে হিতে বিপরীত হতে পারে? আসুন শুনে নিই।
পরীক্ষা হোক কি ইন্টারভিউ, শুভ কাজে যাওয়ার আগে কপালে দইয়ের ফোঁটা লাগবেই। কিংবা এক ফোঁটা দই মুখে না তুললে চলবেই না। তাতেই নাকি মিলবে ভাল ফল। অনেকেরই দুপুরবেলা আয়েশ করে দই খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। কিন্তু শীতকাল এলেই সেই অভ্যাস কেমন যেন বদলে যায়। খাবারের লিস্টে আর সব কিছু থাকলেও দই এক্কেবারে আউট। কারণ একটাই, ঠাণ্ডা লেগে যাবে।
আরও শুনুন: উৎসবের মরশুমে হাবিজাবি খাওয়া! অজান্তেই যোনির ক্ষতি হচ্ছে? জেনে রাখুন
কিন্তু সত্যিই কি তাই?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন একেবারেই না। বরং দই খেলে শরীর গরম হতে পারে। তবে হ্যাঁ দই খাওয়ার কিছু নির্দিষ্ট সময় আছে। সন্ধ্যেবেলা দই খেলে সমস্যা হতে বাধ্য। কিংবা বেজায় ঠান্ডা লেগেছে এরকম অবস্থায় দই খাওয়া উচিত না। আবার অনেকেরই ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স থাকে। তাঁরাও দই এড়িয়ে চলুন। এমনিতে সকালে জলখাবার খাওয়ার পর দই খেলে সমস্যা তো হবেই না, বরং শরীর ভালো রাখার উপায় হতে পারে দই। দুধ এবং ব্যাকটেরিয়ার যুগলবন্দিতে তৈরি এই খাবার। আর যে ব্যাকটেরিয়া দুধকে দই বানিয়ে ফেলার জন্য দায়ী, তার নাম ল্যাক্টোব্যাসিলাস বুলগেরিকুশ। তা এই দই খাওয়ার ঠিক কী কী উপকারিতা রয়েছে?
আরও শুনুন: শীত পড়তেই শুরু গরম জলে স্নান, শরীরের কী ক্ষতি হচ্ছে জানেন?
প্রথমেই রোগ প্রতিরোধব ক্ষমতার কথা বলতে হয়। দই খেলে শরীরে বিশেষ ইমিউন হরমোন ক্ষরণ হয়। যা আসলে শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এমনটাও বলা হয়, দই খেলে রোগা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সরাসরি মেদ কমানোর সঙ্গে যোগ না থাকলেও, ডায়েটে দই রাখার পরামর্শ অনেক ডাক্তারই দিয়ে থাকেন। কারণ দই হজম বাড়াতে সাহায্য করে। এবার হজম হলেই মেদ জমার সম্ভাবনা কমে। ফলে রোগা হওয়ায় বিশেষ সুবিধা মেলে দই খেলে। এছাড়া এর মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম হাড় শক্ত করতে সাহায্য করে। একইসঙ্গে দই ভিটামিনের গুণ সমৃদ্ধ। যা ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। অনেকে ফেস প্যাক হিসেবেও দই ব্যবহার করেন। তবে শীতকালে ডায়েটে দই রাখার অন্যতম কারণ দই-এর বিশেষ এক গুণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, যেসব খাবার খেলে ঠাণ্ডা লাগার সম্ভাবনা জন্মায়, দই তা অনায়াসে ঠিক করতে পারে। অর্থাৎ দেহের আভ্যন্তরিন তাপমাত্রা সঠিক জায়গায় আনতে দই-এর জুড়ি মেলা ভার। তাই শীত, গ্রীষ্ম হোক বা বর্ষা, দই সারা বছরই খাবারের তালিকায় রাখা যেতে পারে। এতে শরীর খারাপ তো হবেই না বরং ভালো থাকবে।