নায়কের কাঁধে ভর করেই চলে একটা সিনেমা। নায়িকা সেখানে একটি চরিত্র মাত্র। সুতরাং সমান বেতনের প্রশ্নই নেই, বরং বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া উচিত নায়কেরই। বলিউডের বেতন বৈষম্যের পক্ষে দাঁড়িয়ে এহেন সওয়াল এক অভিনেত্রীরই। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
‘সিটাডেল’-এ অভিনয়ের জন্য অভিনেতাদের সমান পারিশ্রমিক পেয়েছেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া জোনাস। আর এই কথা প্রকাশ্যে আসতেই অস্বস্তিতে পড়েছে বলিউড। কারণ হিন্দি ছবির দুনিয়া যে বরাবরই অভিনেতা আর অভিনেত্রীদের মধ্যে বেতনের দিক দিয়ে বড়সড় বৈষম্য জারি রেখেছে, তা তো আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু সেই প্রসঙ্গেই এবার বলিউডকে খানিক স্বস্তি দিলেন অভিনেত্রী আমিশা প্যাটেল। এই ইস্যুতে মুখ খুলে কার্যত বলিউডের ওই পুরোনো অভ্যাসের পক্ষেই সাফাই দিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, নায়কদের জোরেই সিনেমা চলে। সুতরাং তাঁদের বেশি টাকা পাওয়ার অধিকার আছে বইকি। আমিশার বক্তব্য, নায়িকারা বড়জোর একইরকম সুযোগসুবিধার দাবি করতে পারেন, কিন্তু একই পারিশ্রমিকের দাবি তাঁরা করলে বোকামি হবে। শুধু বলিউড কেন, হলিউডেও অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের পারিশ্রমিকেও বৈষম্য রয়েছে বলেই দাবি আমিশার। অর্থাৎ প্রিয়াঙ্কার বক্তব্যকে যে তিনি বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন না, সে কথাই বুঝিয়ে দিয়েছেন এই অভিনেত্রী।
আরও শুনুন: একটা গানের জন্য নেন ৩ কোটি! অরিজিৎ বা সোনু নন, দেশের এই গায়ক কে জানেন?
আসলে বলিউডের বেতন বৈষম্য নিয়ে এই প্রথম কথা উঠছে না। রুপোলি দুনিয়ার ঝাঁ চকচকে আস্তরণের আড়ালে এই দিকটি প্রকট হয়ে উঠেছে বারে বারেই। পরিশ্রমের ধরন যতই এক হোক না কেন, নায়কদের বেশি পারিশ্রমিক দেওয়াই বি-টাউনের অলিখিত নিয়ম। সেখানে শাহরুখ খান, অক্ষয় কুমার, সলমন খানরা কাজ করেন ৯০-১০০ কোটি টাকা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে। সুপারস্টারদের কথা যদি ছেড়েও দেওয়া যায়, হাল আমলের রণবীর কাপুর, রণবীর সিং, সিদ্ধার্থ মালহোত্রারাও ২০ থেকে ৫০ কোটির বৃত্তে ঘোরাফেরা করেন অনায়াসেই। এমনকি বক্সঅফিসে ভুলভুলাইয়া ২-এর নজরকাড়া সাফল্যের পর কার্তিক আরিয়ানের মতো নবাগত অভিনেতাও সিনেমা প্রতি ৩৫-৪০ কোটি টাকা দাবি করছেন বলে শোনা গিয়েছিল। কিন্তু যতই একার কাঁধে গোটা একটা সিনেমা টেনে দেওয়ার ক্ষমতা থাকুক না কেন, দীপিকা, আলিয়া, করিনাদের পারিশ্রমিকের গণ্ডি কমবেশি ১০ থেকে ১৫ কোটির মধ্যেই। এমনকি বেশি পারিশ্রমিক চেয়েছেন অভিনেত্রীরা, এই মর্মে একাধিকবার ট্রোলড হতেও দেখা গিয়েছে তাঁদের। স্বামী রণবীরের সমান পারিশ্রমিক চেয়ে বনশালীর ‘বৈজু বাওরা’ ছবি থেকে বাদই পড়ে গিয়েছেন দীপিকা। কিন্তু সহঅভিনেত্রীদের পাশে না দাঁড়িয়ে বলিউডের এই নিয়মকেই এবার সমর্থন জানালেন আমিশা।
আরও শুনুন: মুখেই হিন্দুপ্রেম! স্বার্থ মেটাতে মুসলিম উকিলের কাছেই ছুটেছিলেন কঙ্গনা
অভিনেত্রীর আরও দাবি, নায়কের কাঁধেই সিনেমার পুরো ভার থাকে। নায়িকারা সেখানে গুরুত্বপূর্ণ পার্শ্বচরিত্র মাত্র, এমনটাই মনে করেন তিনি। নায়িকাকেন্দ্রিক ছবি যদি হয়ও, সেগুলি ব্যবসার দিক থেকে রীতিমতো পিছিয়ে আছে এখনও, সাফ দাবি আমিশার। যদিও ‘গাঙ্গুবাই’, ‘হাইওয়ে’, ‘রাজি, ‘মণিকর্ণিকা’, ‘কুইন’, ইদানীং কালে এমন অনেক ছবিই বক্স অফিসে চুটিয়ে ব্যবসা করেছে। আবার বাণিজ্যিক ভাবে সফল না হলেও ‘ছপক’, ‘লিপস্টিক আন্ডার মাই বুরখা’-র মতো ছবিগুলির গুরুত্ব কি এড়িয়ে যাওয়া যায়? কিন্তু বলিউডে ক্রমশ যে অভিনেত্রীদের গুরুত্ব বেড়েছে, সে বিষয়টিকে নাকচ করে অভিনেত্রীদের কম পারিশ্রমিক পাওয়ার পক্ষেই সওয়াল করলেন আমিশা প্যাটেল।