বিজেপির সুরে সুর মিলিয়ে মাঝে মাঝেই মুসলিমবিদ্বেষের আভাস মেলে কঙ্গনা রানাউতের কথায়। অথচ ব্যক্তিগত জীবনেও কি সেই একই অবস্থান ধরে থাকেন তিনি? কার্যক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, নিজের প্রয়োজনে কিন্তু এক মুসলিম আইনজীবীর উপরেই ভরসা রেখেছিলেন অভিনেত্রী। কী ঘটেছিল ঠিক? শুনে নেওয়া যাক।
একের পর এক বিতর্কে জড়িয়ে বারে বারেই খবরের শিরোনামে উঠে আসেন বলি-অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের আমলে একাধিকবার তিনি খোলাখুলিই সরকারের পক্ষে মুখ খুলেছেন। আর সেই সূত্রেই অনেক সময়ই তাঁর কথায় সাম্প্রদায়িক ইশারাও মিলেছে। এমনকি ‘পাঠান’ ছবির বিপুল সাফল্যের পরও তিনি বলে বসেছিলেন, “এ দেশে খান ও মুসলিম তারকাদের প্রতি ভালবাসার মাত্রা যে একটু বেশি, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।” কখনও ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি, কখনও আবার মুসলিমদের প্রতি খোঁচা, এমন সব টুইট করে বারবার বিতর্কে জড়িয়েছেন এই অভিনেত্রী। কিন্তু মুখে যাই বলুন না কেন, নিজের প্রয়োজনে কোনও মুসলিম ব্যক্তির দ্বারস্থ হতে মোটেও ভাবেন না কঙ্গনা, এমনটাই বলছে তাঁর রেকর্ড। কিন্তু কেন এমন কথা? আসলে বিএমসি-র সঙ্গে গোলমালে জড়ানোর পর যে এক মুসলিম আইনজীবীকেই তাঁর পক্ষে নিয়োগ করেছিলেন কঙ্গনা রানাউত।
আরও শুনুন: দলিত বলে জগন্নাথের সামনে যেতে পারেননি রাষ্ট্রপতি! দাবি নেটদুনিয়ার, সত্যিটা কী?
আসলে কিছুদিন আগে তাঁর পালি হিলের অফিস ভেঙে দিতে তৎপর হয়েছিল বিএমসি। ঘটনার জেরে খোদ মহারাষ্ট্র সরকারের সঙ্গেই আইনি লড়াইয়ের পথে হেঁটেছিলেন অভিনেত্রী। আর সেই সময়েই তিনি নিজের সপক্ষে নিয়োগ করেছিলেন নামী আইনজীবী রিজওয়ান সিদ্দিকি-কে। আর তাতে তাঁর কার্যসিদ্ধিও হয়েছিল বইকি। দুঁদে আইনজীবী রিজওয়ান প্রথমেই বলেছিলেন, কঙ্গনার ন্যায়বিচার পাওয়া উচিত। তাঁর সওয়ালের জোরে প্রথমে অফিস ভাঙার ব্যাপারে একদিনের স্থগিতাদেশ দিয়েছিল বম্বে হাই কোর্ট। আর তারপরে পাকাপাকিভাবে সে বিষয়টির মীমাংসাও হয়ে যায়।
আরও শুনুন: বাকিদের মতো কেন ন্যায্য বিচার পাবেন না মুসলিম নারীরা? ‘এক দেশ এক আইনের’ পক্ষে সওয়াল মোদির
আর এখানেই উঠছে প্রশ্ন। এমনিতে বারে বারেই মুসলিমবিদ্বেষকে উসকে দিয়েছেন কঙ্গনা, এমনকি এই অভিযোগেই একসময় কঙ্গনার বিরুদ্ধে আদালতে একটি পিটিশন জমা করেন কাস্টিং ডিরেক্টর সাহিল আশরাফালি সৈয়দ। কঙ্গনার পুরনো কিছু টুইটের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেছিলেন, একসময় বিএমসির আধিকারিকদের ‘বাবরের সেনা’ বলে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি কঙ্গনা। সাম্প্রদায়িক বিভেদ সৃষ্টি করছেন অভিনেত্রী, এই অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছিল মুম্বইয়ের একটি আদালত। অথচ নিজের প্রয়োজনে যে সেই অবস্থান থেকেই ১৮০ ডিগ্রি সরে যেতে পারেন এই তারকা, মুসলিম আইনজীবীকে নিয়োগের ঘটনায় প্রমাণ হয়ে যায় সে কথাই।