কোনও মুসলিম ব্যক্তিকে দিয়ে খাবার পাঠানো যাবে না, ফুড ডেলিভারি অ্যাপে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। আর এই দাবি ঘিরেই সম্প্রতি শোরগোল পড়েছে নেটদুনিয়ায়। এহেন মানসিকতার বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রও। কী ঘটেছে ঠিক? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
সাম্প্রদায়িক অসহিষ্ণুতার প্রশ্নে বারেবারেই উত্তাল হয়ে উঠেছে দেশ। এবার সেই ইস্যুতেই নয়া সংযোজন হায়দরাবাদের এই ঘটনা। কোনও মুসলিম ব্যক্তিকে দিয়ে খাবার পাঠানো যাবে না বলে ফুড ডেলিভারি অ্যাপে সাফ জানিয়েছিলেন সেখানকার এক ব্যক্তি। আর সে কথা প্রকাশ্যে আসতেই উসকে উঠেছে বিতর্ক। এহেন কাজকে ‘বেআইনি’ বলে তোপ দেগেছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রও।
আরও পড়ুন: স্ত্রী মানেই চিরকালের ঝামেলা! এমনটাই ভাবে তরুণ প্রজন্ম, পর্যবেক্ষণ কেরলের আদালতের
এর আগেও একাধিকবার মুসলিম ডেলিভারি বয়কে নাকচ করা, তাদের থেকে খাবার না নেওয়ার মতো ঘটনার মুখোমুখি হয়েছে দেশের ফুড ডেলিভারি সংস্থাগুলি। সম্প্রতি এক ফুড ডেলিভারি অ্যাপের মাধ্যমে খাবার অর্ডার করেছিলেন হায়দরাবাদের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি। কিন্তু সেখানে বাড়তি নির্দেশ হিসেবে তিনি স্পষ্ট লিখে দিয়েছিলেন, যে, কোনও মুসলিম ডেলিভারি বয়ের হাত থেকে খাবার নিতে রাজি নন তিনি। আর সেই মেসেজের স্ক্রিনশটই কোনও ভাবে ছড়িয়ে পড়ে নেটদুনিয়ায়। এরপরেই তেলেঙ্গানার স্টেট ট্যাক্সি অ্যান্ড ড্রাইভারস জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি-র চেয়ারম্যান শেখ সালাউদ্দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, “আমরা এখান থেকে শ্রমিকদের সরবরাহ করি যাতে সব ধর্মের মানুষকে খাবার সরবরাহ করা যায়, সে তিনি হিন্দু মুসলিম খ্রিস্টান শিখ যাই হোন না কেন!” সরাসরি ওই ফুড ডেলিভারি সংস্থার কাছে এই ঘটনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আরজি জানান তিনি। এবার কার্যত একই দাবি জানালেন লোকসভার তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রও। তাঁর মতে, কেউ এ ধরনের বিদ্বেষমূলক আচরণ করলে তাদের নাম প্রকাশ্যে আনা উচিত। তিনি ওই নির্দিষ্ট সংস্থাটির কাছেই আবেদন জানিয়েছেন, তাদের তরফে এ জাতীয় উপভোক্তাদের বরাবরের মতো বাতিল করা উচিত। পাশাপাশি এহেন দাবিকে ‘চূড়ান্ত বেআইনি’ বলে চিহ্নিত করে মহুয়া এও বলেছেন, পুলিশের কাছে এই মর্মে অভিযোগ জানানো উচিত ওই সংস্থাটির। তাঁর বক্তব্য, আগে মানুষের মনে মনে যেসব বাতিক ছিল, বর্তমানে তা সংখ্যাগুরুর বক্তব্য হয়ে প্রকাশ্যেও ছড়িয়ে পড়ছে। আর এইভাবেই ঘৃণা আর বিদ্বেষ একরকম করে মান্যতা পেয়ে যাচ্ছে সমাজে। সেই প্রবণতাটিকেই আসলে আশঙ্কাজনক, এই ইস্যুতে এমনটাই জানিয়েছেন মহুয়া-সহ আরও অনেকে।