বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ ফেরৎ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে একটি পক্ষ। মসজিদ চত্বরটি আদতে কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের অংশ বলে দাবি করে সেখানে শৃঙ্গারগৌরীর পুজোআচ্চা করার অনুমতি চেয়েছেন পাঁচ মহিলা। এই নিয়ে আবেদনও জমা পড়েছে আদালতে। ইতিমধ্যেই মসজিদে সমীক্ষারও নির্দেশ দেয় আদালত। তা নিয়ে বিতর্কে উত্তাল দেশ। তবে এরই মধ্যে শোনা গিয়েছে, সেই আবেদন প্রত্যাহারের পথে হাঁটতে চলেছেন মামলাকারীরা। যদিও সেই গুজব কার্যত উড়িয়ে দিয়েছেন চার আবেদনকারী। কী বলছেন তাঁরা? আসুন, শুনে নিই।
জ্ঞানবাপী মসজিদ না শৃঙ্গার গৌরীর মন্দির, এ নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। দিন কয়েক আগেই আদালতের নির্দেশে মসজিদে সমীক্ষা ও ভিডিওগ্রাফির কাজ সারা হয়েছে। মসজিদের ভিতরে সমীক্ষা করতে দেওয়া নিয়ে প্রাথমিক ভাবে যথেষ্ট আপত্তি জানিয়েছিল মসজিদ কমিটি। ফলে বিষয়টি নিয়ে ভালই অশান্তি হতে পারে বলে আঁচ করেছিল প্রশাসন। জোরাল করা হয়েছিল নিরাপত্তাও। তবে আশার কথা, তেমন কিছুই ঘটেনি। বরং গত শুক্রবার মসজিদে ঢুকে সুষ্ঠু ভাবেই সমীক্ষা ও তথ্য সংগ্রহের কাজ সারেন আইনজীবীরা।
আরও শুনুন: লাউডস্পিকারে আজানের পালটা হনুমান চালিশা পাঠ, অশান্তির আশঙ্কা কর্নাটকে
কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের একটি অংশ দখল করে গড়ে তোলা হয়েছিল ওই মসজিদ। এমনই অভিযোগ তুলে বহু দিন ধরেই সরব বহু হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের আমলেই গড়ে ওঠে ওই মসজিদ। ওই জমিতে আদতে ছিল শৃঙ্গার গৌরীর প্রার্থনাস্থল। সেই জায়গা ফেরত চেয়েই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে একটি পক্ষ। সেই মামলার শুনানিতে মসজিদ সমীক্ষার নির্দেশ দেয় আদালত।
ব্যাপারটি নিয়ে বিতর্ক গড়িয়েছে অনেক দূর। আদালতের নির্দেশ সংবিধানের পরিপন্থি বলেও মন্তব্য করেন AIMIM নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। সম্প্রতি শোনা যাচ্ছিল, ওই মামলা প্রত্যাহার করে নিতে চলেছেন চার মামলাকারী। বিশ্ব বৈদিক সনাতন সঙ্ঘের প্রধান জীতেন্দ্র সিংহ সম্প্রতি তেমনটাই জানিয়েছিলেন। তবে সেই গুজব কার্যত সোমবার উড়িয়ে দিয়েছেন তাঁরা।
আরও শুনুন: মন্দির সজ্জায় সাভারকরের ছবি! বিতর্কে উত্তাল কেরল
জ্ঞানবাপী মসজিদের ওই অংশটিতে শৃঙ্গার গৌরী, গণেশ, হনুমান ও শিবের বাহন নন্দীর নিয়মিত পুজো ও আচার পালনের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন পাঁচ মহিলা। সীতা সাধু, মঞ্জু ব্যাস, রেখা পাঠক, লক্ষ্মী পাঠক এবং রাখী সিংহ, এই পাঁচ জনে মিলেই ওই আবেদন দাখিল করেন আদালতে। সীতা, মঞ্জু,রেখা ও লক্ষ্মী সম্প্রতি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। সেখানেই তাঁরা সাফ জানিয়ে দেন, আবেদন প্রত্যাহারের প্রশ্নই নেই। এই মামলার শেষ দেখে ছাড়বেন তাঁরা।
যদিও সেই সাংবাদিক সম্মেলনে হাজির ছিলেন না পঞ্চম আবেদনকারী রাখী। তবে রেখা জানান, রাখীর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। মামলা প্রত্যাহারের ব্যাপারে কিছু বলেননি তিনি। হঠাৎ করে মামলা প্রত্যাহারের খবর কেন রটল, তা ভেবে কুলকিনারা পাচ্ছেন না তাঁরা। এ বিষয়ে জীতেন্দ্র সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।