নানাবিধ ভুয়ো ফোন তো হামেশাই পেয়ে থাকি আমরা। কখনও ব্যাঙ্কের অফিসার সেজে তো কখনও অন্য কেউ। নানা ভাবে টাকা চুরির জন্য পাতা হয় ফাঁদ। হালে তো আবার করোনা-টিকা দেওয়ার নাম করেও প্রতারণার অভিযোগ উঠছে। এমনই এক জালিয়াতের পাল্লায় পড়েছিলেন ৭৩ বছরের বৃদ্ধা। সবটা বুঝতে পেরে নিজেই জালিয়াতদের জন্য পাতলেন ফাঁদ। আর তাতে পড়লও পাখি। কী হল তারপর? শুনে নিন।
মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে দুর্ঘটনা করেছে নাতি। জামিনের জন্য লাগবে কয়েক লক্ষ টাকা। ফোনে কথাগুলো শুনেই বুঝতে পেরেছিলেন বৃদ্ধা, কোথাও একটা তো গড়বড় আছে। তাঁর নাতি রয়েছে ঠিক কথা, তবে তার গাড়ি চালানোর মতো বয়স এখনও হয়নি। সন্দেহ জিইয়ে রেখে কথাবার্তা চালিয়ে যান বৃদ্ধা।
তবে বৃদ্ধার অভিনয় ক্ষমতার প্রশংসা না করলেই নয়। তিনি একাধিক ফোনে দিব্যি উদ্বিগ্ন হওয়ার অভিনয় করে গিয়েছেন। ফোনের ও প্রান্তে থাকা ব্যক্তিটিকে অনুরোধ পর্যন্ত করেছেন, যেন তাঁর নাতির মাকে এ বিষয়ে কিছু জানানো না হয়। তবে মনে মনে বৃদ্ধা পাতছিলেন অন্য ফাঁদ।
আরও শুনুন: বয়স ১০০ ছুঁই ছুঁই, পেশা জুতো সারাই, নেশা কাউন্সেলিং… এই বৃদ্ধকে দেখে বিস্মিত দেশবাসী
কথায় কথায় জালিয়াতদের নিজের বাড়িতে ডেকে পাঠান বৃদ্ধা। উকিল সেজে ফোন করা ব্যক্তিকে জানিয়ে দেন, অমুক দিনে অমুক সময় সে যেন তাঁর বাড়িতে এসে নাতির জামিনের টাকাটি সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। এদিকে, পুলিশকেও গোটা ব্যাপারটি জানিয়ে রেখেছিলেন বৃদ্ধা।
অবশেষে ফাঁদে ধরা দিল পাখি। যথাসময়ে বৃদ্ধার বাড়ির দরজার হাজির হল জালিয়াত। তৈরি ছিলেন বৃদ্ধাও। বাড়ির ভিতরে কোমর বেঁধে রেডি ছিল পুলিশও। আর বাড়ির দরজার ডোরবেলের সঙ্গে লাগানো খুদে ক্যামেরায় রেকর্ড হচ্ছিল সবটা। বৃদ্ধা একটি খামে এমন ভাবে পেপার ন্যাপকিন ভরে রেখেছিলেন, যে দেখে মনে হবে অনেক টাকা রয়েছে সেখানে। আর সেই খামটিই জালিয়াতের হাতে তুলে দেন বৃদ্ধা।
আরও শুনুন: দেশভাগে ছাড়াছাড়ি, কেটে গেছে ৭৪ বছর, এতদিনে দেখা হল ‘হারিয়ে যাওয়া’ দুই ভাইয়ের
তারপর যা হওয়ার, তাই হল। ঠিক সময়ে পুলিশ ঘর থেকে বেরিয়ে এসে পাকড়াও করল জালিয়াতটিকে। আপাতত শ্রীঘরেই রয়েছে ২৮ বছরের ওই যুবক। এর আগেও সে একাধিক প্রতারণা কাণ্ডে জড়িত ছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
সম্প্রতি ঘটনাটি ঘটেছে নিউ ইয়র্কের লং আইল্যান্ডে। সেখানে পুলিশের কল সেন্টারে কাজ করতেন জিন ইবার্ট নামে ৭৩ বছরের ওই মহিলা। এখন অবসর নিলেও পুলিশ মহলে ভালই জানাশোনা রয়েছে জিনের। কিন্তু প্রতারকেরা সম্ভবত তেমন খবরাখবর না নিয়েই মাঠে নেমে পড়েছিল। ফলে তারা বুঝতে পারেনি কার পাল্লায় পড়তে চলেছে। জিনের এই পদক্ষেপের কথা ছড়িয়েছে নেটদুনিয়ায়। এই বয়সে জিন যে সাহস দেখিয়েছেন. তাতে বাহবা জানিয়েছেন বহু নেটনাগরিকই।