মেয়েরা আবার গোয়েন্দা হয় নাকি? হয় বইকি। কেবল সাহিত্যের পাতায় নয়, বাস্তবের মাটিতেও মেয়ে গোয়েন্দার দেখা মেলে। শোনা যাক ভারতের প্রথম মেয়ে গোয়েন্দার গল্প।
কেউ বলে ‘দেশি শার্লক’। কেউ আবার বলে ‘লেডি জেমস বন্ড’। এসব শুনতে ভালই বাসেন রজনী পণ্ডিত। হাজার হোক, শুরুর পথটায় তো এমন প্রশংসা খ্যাতির বান ডাকেনি। আজ এত ঝড়ঝাপটা পেরিয়ে এসে এটুকু শোনার হক তাঁর আছে বইকি।
আরও শুনুন: Stereotype ভাঙছে মেয়েরা, সমাজের ভাবনায় কি আসবে পরিবর্তন?
কে এই রজনী পণ্ডিত? ইনি ভারতের প্রথম মহিলা গোয়েন্দা। আচ্ছা, গোয়েন্দার পেশায় মেয়েদের কথা কি চট করে ভাবা যায়? বরং গোয়েন্দা বললেই বুদ্ধিতে সাহসে শক্তিতে ভরপুর কোনও পুরুষের ছবি চোখে ভেসে ওঠে। রজনী পণ্ডিত এই ছকটাই ভেঙে দিয়েছেন। অথচ ভাঙার কাজটা খুব একটা সহজ ছিল না। মহারাষ্ট্রের থানে জেলায় একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে রজনীর জন্ম। যেসব পরিবারে বরাবর পড়াশোনা এবং নিশ্চিত চাকরিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। রজনীর ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম কিছু ঘটেনি। মুম্বইয়ের রূপারেল কলেজে মারাঠি সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করার পর একটি বেসরকারি সংস্থায় যোগ দিয়েছিলেন রজনী। কিন্তু কাজটা মোটেও তাঁর মনঃপূত হচ্ছিল না।
আরও শুনুন: বুক ফাটলে এখন মুখও ফোটে, মেয়েদের প্রতিবাদের মঞ্চ Social Media
বলে নেওয়া ভাল, রজনীর বাবা ছিলেন পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর। মহাত্মা গান্ধিকে হত্যার তদন্ত করেছিলেন যাঁরা, তিনিও তাঁদের একজন। হয়তো বাবাকে দেখেই, রজনীর মধ্যে রহস্যভেদ করার একটা আগ্রহ ছোটোবেলা থেকেই তৈরি হয়ে গিয়েছিল। কলেজে পড়তে পড়তেই তিনি একটি কেস সমাধান করে ফেলেছিলেন। তাঁর মতে, সেটিই তাঁর জীবনের প্রথম কেস। যদিও সে কেস কেউ তাঁকে দেয়নি, বা কোনও পারিশ্রমিকও জোটেনি। উলটে অকথা-কুকথা শুনতে হয়েছিল।
ব্যাপারটা আর কিছুই নয়, কলেজের এক সহপাঠীর আচার-আচরণ অস্বাভাবিক লাগছিল বলে তিনি মেয়েটি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। মেয়েটিকে অনুসরণ করে বিভিন্ন জায়গাতেও যান। ক্রমে বুঝতে পারেন মেয়েটি দেহব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু রজনী যখন মেয়েটির পরিবারকে এসব জানান, তারা তাঁকে বিশ্বাস করতেই চায়নি। কিন্তু রজনীও হাল ছাড়ার পাত্রী নন। তিনি এবার প্রমাণ জোগাড় করতে উঠেপড়ে লাগেন। শেষমেশ মেয়েটির বিভিন্ন কার্যকলাপের ছবি তুলে, সেইসব প্রমাণ নিয়েই সটান হাজির হন তার বাবার কাছে।