তাঁরা নিজগুণে অনন্যা। না, সাফল্যের বিন্দু স্পর্শ করার যাত্রাপথে কেউ তাঁদের জন্য ফুল বিছিয়ে রাখেননি। বরং পদে পদে ছিল প্রতিকূলতার কাঁটা। তবু আত্মবিশ্বাসে ভর করে তাঁরা পৌঁছেছেন সাফল্যের শীর্ষবিন্দুতে। গতে বাঁধা পথ ছেড়ে নিজেরাই তৈরি করে নিয়েছেন নিজেদের সফল যাত্রাপথ। আআন্তর্জাতিক শ্রমজীবী নারী দিবস উপলক্ষে সংবাদ প্রতিদিন শোনো স্যালুট জানায় সেইসব নারীদের। সেরকমই একজন সফল নারী পৌলমী নাগ। তাঁর সাফল্যের উড়ানের গল্প শুনলেন চৈতালী বক্সী।
কথা বলে যাওয়া জরুরি। যে সময়টায় আমাদের বাস, সেই সময়ের নানা অসাম্যের বিরুদ্ধে কথা বলে যাওয়া একান্ত প্রয়োজন। এই কাজটিই অক্লান্ত ভাবে করে চলেছেন পৌলমী নাগ। ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্মে সামাজিক ও রাজনৈতিক বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর মতামত শুনতে পছন্দ করেন বহু মানুষ। তাঁর কথা শুনতে অনেকে অপেক্ষাও করে থাকেন। এই সাফল্য অবশ্য একদিনে আসেনি। ‘যেসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাই সেগুলো নিয়ে সেভাবে কথা বলে উঠতে পারছি না’- এই ভাবনা থেকেই শুরু পৌলমীর নিজস্ব যাত্রা। ‘একবার অন্তত চেষ্টা করে দেখি যেটা করতে চাইছি সেটা হয় কিনা।’- এই একটা চিন্তাই পালটে দিল তাঁর জীবনের গতিপথ।
আরও শুনুন: Superwoman: মেয়েরাও ছেলেদের মতোই পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পারে, বার্তা ‘ভাতের হোটেল’-খ্যাত নন্দিনীর
চাকরির বাঁধাধরা বেতনের নিরাপত্তা ছেড়ে ফ্রিলান্স আর নিজের ইউটিউব চ্যানেল শুরু করা। প্রথম একেবারেই ক্যামেরার সামনে আসতে চাননি পৌলমী। তারপর… ধীরে ধীরে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলে যাওয়াটাই অভ্যাস হয়ে গেল, কেননা এ তো নেহাত কথা বলা নয়, এ আসলে দায়িত্ব ও কর্তব্য। যা অন্যায্য, অন্যায় তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস সকলের হয় না। আর সেই পথ ধরে রুটিরুজি উপার্জন তো আরও কঠিন ব্যাপার। পৌলমী দুটোকেই বাস্তব করে তুলেছেন। অনেক বাধা যেমন ছিল, তেমন পাশে থেকেওছেন অনেকে। বহু নারীর সামনেই স্বনির্ভরতার একটা অন্য পথ খুলে দিয়েছেন পৌলমী।
আরও শুনুন: Superwoman: নারী সফল হলে পরিবারের পুরুষরা খুশিই হয়, সাফল্যের সহজপাঠ শেখালেন অদিতি
আর তাই যে মেয়েরা নিজের পায়ে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন, তাঁদের উদ্দেশে পৌলমীর বার্তা, ‘ভয় পেলে চলবে না। আমাদের সমাজ অনেক রকম ভাবে ভয় পাওয়ানোর চেষ্টা করে। অনিশ্চয়তার কথা বলে। কিন্তু সেইসব পেরিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। যে যে কাজটাই করুন না কেন, তাঁকে সেই কাজটি করে যেতে হবে। অন্তত যতক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে। কেউ জোর করে থামিয়ে দিল হয়তো, কিন্তু ততক্ষণ পর্যন্ত যে আমি কাজটা করতে পেরেছি, এই কথাটা যেন আমি নিজেকেই বলে উঠতে পারি। এই দিকটা সবসময় মনে রাখতে হবে। বাধা আসবে, তবে সেই বাধা পেরিয়েই এগিয়ে যেতে হবে।’