ধনীদের তালিকায় দেশের মধ্যে তৃতীয়। প্রতিদিন গড়ে ৩ কোটি টাকা স্রেফ দান করেন। অথচ একসময় ছোট্ট একটা গ্যারেজ ঘরে ব্যবসা শুরু করেছিলেন এই ব্যক্তি। বর্তমানে কয়েক লক্ষ কোটি টাকার মালিক। কার কথা বলছি? আসুন শুনে নিই।
রাজধানী দিল্লিতে তাঁর মতো ধনী আর নেই। মোট সম্পত্তির পরিমাণ ২লক্ষ সাত হাজার সাতশো কোটি টাকা। স্রেফ দেশে নয়, তাঁর সংস্থার নাম গোটা বিশ্বের কাছে পরিচিত। তবে শুধুমাত্র অগাধ সম্পত্তির জোরে নয়, আরও এক কারণে তিনি বিশেষভাবে পরিচিত। মনের দিক দিয়েও তিনি বিরাট মাপের একজন মানুষ। প্রতি বছর মোটা অঙ্কের টাকা স্রেফ দান করেন এই ব্যক্তি।
কথা বলছি, শিভ নাদের সম্পর্কে। দিল্লির এই ব্যবসায়ীর নাম বর্তমানে গোটা বিশ্বে চর্চিত। বিখ্যাত এইচসিএল কোম্পানির কর্ণধার তিনি। একসময় পাঁচ বন্ধু মিলে বাড়ির গ্যারাজ থেকে ব্যবসা শুরু করেছিলেন। সেইসময় মূলত ক্যালকুলেটরের আর কম্পিউটার যন্ত্রাংশ তৈরি করতেন তাঁরা। সেখান থেকেই এই জায়গায় নিজেকেই নিয়ে গিয়েছেন শিভ। নেপথ্যে ছিল তাঁর দূরদর্শিতা আর সাধারণ মানুষের ভালবাসা। যদিও সেই ভালবাসাও তিনি নিজেই অর্জন করেছেন। বরাবরই পরোপকারী হিসেবে তাঁর সুনাম ছিল। তবে ব্যবসা মোটামুটি দাঁড়িয়ে যেতেই তিনি বিভিন্ন সামাজিক কাজ করতে শুরু করেন। স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল প্রায় সবক্ষেত্রেই মোটা অঙ্কের টাকা দান করতেন তিনি। ২০২২ সালে মোট ১১৬১ কোটি টাকা বিভিন্ন কাজের জন্য দান করেন শিভ। যা গড় হিসেবে দেখলে প্রতিদিন ৩ কোটি টাকা দান করার সমান। সংস্থার কর্মীদের কাছেও তিনি কল্পতরু। বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিয়ে সকলের মন জয় করেন শিভ। বর্তমানে বিশ্বের ৬০টি দেশে তাঁর সংস্থার শাখা রয়েছে। মোট কর্মীর সংখ্যাও কয়েক লক্ষ।
তবে বর্তমানে আর কোম্পানির সম্পূর্ণ দায়ভার তিনি একা সামলান না। বাবার দায়িত্ব অনেকটাই বুঝে নিয়েছেন তাঁর সুযোগ্যা কন্যা রোশনি নাদের। বছর চল্লিশের এই মহিলাও প্রায় ৮৫ হাজার কোটি টাকার মালিক। বাবার মতো তাঁরও দান ধ্যানের স্বভাব রয়েছে। একইসঙ্গে বাবার সংস্থার চেয়ারম্যান হিসেবেও তিনিই নিযুক্ত রয়েছেন। শিভ নাদের ফাউন্ডেশন নামে তাঁদের একটি দাতব্য সংস্থাও রয়েছে। সেখানকার একজন ট্রাস্টি রোশনি নিজেও। তাই প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকা এই সংস্থার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সেবার কাজে খরচ করেন তিনি। প্রতিদানও পান। এত মানুষের উপকার করে তাঁদের প্রাণভরা আশীর্বাদ কুড়িয়ে নেয় নাদের পরিবার। আর সেই জোরেই বিশ্বমানের এই সংস্থার আরও উন্নতি করতে পারছেন তাঁরা।