নতুন চাকরি। বেতন কয়েক লক্ষ টাকা। তবে কাজ বেশ অদ্ভুত। চাকরির বিজ্ঞাপনে দাবি করা হয়েছে, কোনও এক মহিলাকে গর্ভবতী করতে হবে। তাঁর সন্তানের দায়িত্বও নিতে হবে। বদলে গাড়ি, বাড়ি সব মিলবে। সত্যিই কী এমন চাকরি হতে পারে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
একদিকে মূল্যবৃদ্ধি। অন্যদিকে কাজের আকাল। কোথাও নতুন চাকরির সন্ধান পেলেই দৌড় শুরু। কাজের শর্ত যাই হোক, চাকরিটা পেতেই হবে। স্রেফ বেতন মনের মতো হওয়া চাই। এই আবহে শোরগোল ফেলেছে নতুন এক চাকরির বিজ্ঞাপন। যেখানে বেতন হিসেবে কয়েক লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কাজের শর্ত ভারি অদ্ভুত।
রথ দেখা আর কলা বেচা, একসঙ্গে হবে। এই চাকরির বিজ্ঞাপন যেন এমনটাই বলছে। সেখানে স্পষ্টভাবে লেখা রয়েছে, বেতনের কথা। যা সাধারণত চাকরির বিজ্ঞাপনে থাকে না। তাও আবার ২০-৩০ লক্ষ টাকা বেতন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে ওই বিজ্ঞাপন। তবে আসল মজা এখানে নয়। কাজ হিসেবে যা করতে বলা হয়েছে, তা রীতিমতো অবাক করেছে সকলকে। সুন্দরী এক মহিলার ছবি দিয়ে দাবি করা হয়েছে, এঁকে গর্ভবতী করতে হবে। মহিলার বয়ানেই বিজ্ঞাপন। এক নয়, একাধিক। কোথাও আবার মহিলা আবদারের সুরে বলছেন, তাঁকে বিয়ে করার কথা। তারপর সারাজীবনের জন্য তাঁর দায়িত্ব নিতে হবে। বদলে অবশ্য মোটা টাকা উপহার বা বেতন মিলবে। অঙ্কটা কয়েক লক্ষের কম নয় মোটেই। এখানেই শেষ নয়, কোনও কোনও বিজ্ঞাপনে দাবি করা হয়েছে টাকার সঙ্গে নতুন বাড়ি, গাড়ি কিংবা দামী আসবাব দেওয়া হবে। সবমিলিয়ে রাজকীয় ব্যাপার। তবে গোটাটাই স্রেফ প্রলোভন। মানে আদৌ এমন কোনও চাকরির অস্তিত্ব নেই। পুরো বিষয়টা জালিয়াতি। তবে ধরণটা একেবারে অন্যরকম। তাই টাকা আর মোহের লোভে অনেকেই ফাঁদে পা দিয়েছেন। কেউ কেউ সর্বশ্রান্ত হয়েছেন। বেশ কয়েকবার এমন ঘটনা ঘটায় নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসনও। তবে লাভের লাভ কিছু হয়নি।
আসলে, এই জালিয়াতির জাল সম্পূর্ণভাবে ছড়িয়ে আছে অনলাইনে। নেপথ্যে কে বা কারা রয়েছে, তার হদিশ পাওয়া ভার। যেসব মহিলাদের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলিও ভুয়ো। তদন্তে নেমে সে কথা জেনেছে পুলিশ। সন্দেহের বশে গ্রেফতারও করা হয়েছে কয়েকজনকে। তবে সম্পূর্ণভাবে এই নতুন জালিয়াতি বন্ধ করা যায়নি। তবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। কীভাবে এই অন্যায় রোখা যায় সেই ব্যবস্থা করছে প্রশাসন। আসলে, চাকরির আকালকে হাতিয়ার করেই নয়া দুর্নিতির ছক কষা হয়েছে। পুলিশের অনুমান, নেপথ্যে স্রেফ একটা দল নয়। বরং এই ধরণকে নকল করে অনেকেই জালিয়াতির চেষ্টা চালাচ্ছে। সহজেই ফাঁদে পা দিচ্ছেন বেকার যুবকর। এত টাকার প্রলোভন উপেক্ষা করা মোটেও সহজ নয়, উলটে এমন এক কাজের কথা বলা হয়েছে, যা অনেকের মনেই অন্য অনুভূতির জন্ম দেবে। তার ওপর বিষয়টা এমনভাবে প্রচার করা হচ্ছে , কারও মনেই হবে না এতে বেআইনি কিছু থাকতে পারে। তাই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নেটদুনিয়ার নতুন ত্রাস হয়ে উঠছে এই ‘প্রেগন্যান্সি জব’।