বিশ্বকাপ জেতেনি। তবে ফুটবলবিশ্বের মন জয় করেছে মরক্কো। তবে শুধু খেলা নয়, খেলার বাইরেও এক অনন্য নজির তৈরি করলেন মরক্কোর ফুটবাল হাকিম জিয়াস। কী করলেন তিনি? আসুন শুনে নিই।
ফুটবল আর জীবনের গল্প যেন অনেকটা একই রকম। লড়াই, হার-জিতের নিরিখে এই খেলার সঙ্গে জীবনের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তিগুলোও কোথাও যেন মিলেমিশে যায়। আর তাই এই বিশ্বের অসংখ্য মানুষ ফুটবল খেলাটিকে ভালবাসেন প্রাণ দিয়ে। সেই ফুটবলের হাত ধরেই, সারা বিশ্বের সামনে উদাহরণ হয়ে উঠলেন মরক্কোর ফুটবলার হাকিম জিয়াস। চলতি বিশ্বকাপ থেকে তাঁর যা উপার্জন, তা তিনি দান করলেন দেশের গরিব মানুষদের জন্য।
আরও শুনুন: টিমের কর্মীদের স্বার্থে করোনাকালে ৭০% কম বেতন, সবার চোখে মেসিই ছিলেন চে গেভারা
এবারের বিশ্বকাপ যখন শুরু হয়েছিল, তখন বিশেষজ্ঞদের হিসাব-খাতায় সেভাবে কোথাও ছিল না মরক্কো। ফুটবলবিশ্বের কুলীন দেশ, তারকা ফুটবলারদের নিয়েই ছিল যত আলোচনা। বিশ্বকাপ যত এগিয়েছে তত চমকে দিয়েছে মরক্কো। প্রাণপণ লড়াই আর হাল না-ছাড়ার জেদ। মরক্কোর ফুটবলারদের যত দেখেছে তত অবাক হয়েছে বিশ্ব। বিশ্বকাপ হয়তো জেতেননি তাঁরা, শেষ করেছেন চতুর্থ স্থানে, কিন্তু মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন মরক্কোর ফুটবলাররা। প্রথম আফ্রিকান দেশ হিসাবে বিশ্বকাপের সেমি ফাইনালে পৌঁছে ইতিহাস গড়েছেন হাকিমিরা। সেই সঙ্গে ইতিহাসকে মানবতার শিক্ষাও দিয়ে গেলেন সে-দেশের ফুটবলার হাকিম জিয়াস।
আরও শুনুন: মেসি কেন পেলেন গোল্ডেন বল? ‘ফিফা’র উপর রেগে আগুন ক্রোয়েশিয়ার সেই সুন্দরী
জাতীয় দলে ২০১৫ সাল থেকে খেলছেন জিয়াস। ক্লাব ফুটবলে চেলসির হয়ে খেলেন তিনি। কিন্তু জাতীয় দল থেকে তাঁর যা উপার্জন, তা গোড়া থেকেই তিনি দান করে দেন। সাপোর্ট স্টাফ এবং তাঁদের পরিবারের জন্য নিজের উপার্জন তিনি দিয়ে দেন। মরক্কোর ফুটবলের উন্নতির স্বার্থে, এমনকী হাসপাতালগুলিকেও তিনি সাধ্যমতো অর্থসাহায্য করেন। চলতি বিশ্বকাপও ব্যতিক্রম নয়। বিশ্বকাপ শেষে জিয়াস জানিয়েছেন, এবারের বিশ্বকাপের উপার্জনও তিনি দেশের গরিব মানুষদের স্বার্থে দান করতে চান। জিয়াসের বক্তব্য, জাতীয় দলে তো তিনি টাকার জন্য খেলেন না। খেলেন ভালবাসা থেকে। আর তাই দেশের মানুষ তাঁকে যেমন ভালবাসায় ভরিয়ে দিয়েছেন, তেমনই তাঁদের ভাল থাকার জন্য উপার্জন উৎসর্গ করতেও তিনি দ্বিধা করবেন না।
আরও শুনুন: ইতিহাসে প্রথম, চলতি বিশ্বকাপে সব ম্যাচ দেখে রেকর্ড তরুণ ফুটবলপ্রেমীর
বিশ্বকাপ না জিতলেও দেশে ফিরে বীরের সম্মান পেয়েছেন মরক্কোর ফুটবলাররা। এই বিশ্বকাপে যে ইতিহাসের সূচনা তাঁরা করেছেন, তার জন্য দেশের মানুষ তাঁদের কুর্নিশ জানিয়েছেন। তাই যেন দেশের মানুষদের ভালবাসা এভাবেই ফিরিয়ে দিলেন জিয়াস। সন্দেহ নেই যে, জিয়াসের এই সিদ্ধান্ত মানবিকতার অনন্য নজির হিসাবেই স্বীকৃত হবে বিশ্বে।