প্রতিদিন নিয়ম করে পুজো করেন। নির্দিষ্ট সময় ঠাকুরঘরে ধুপ জ্বালান। তবু সংসারে অশান্তি লেগেই আছে। কিংবা কাজের জায়গায় বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছেন। কিছুতেই ভেবে পাচ্ছেন না এর নেপথ্যে কী কারণ থাকতে পারে? আসলে সমস্যা অন্য জায়গায়। হতে পারে আপনার ঠাকুরঘরে এমন কিছু দেবতার মূর্তি বা প্রতিকৃতি রয়েছে যা ঘরে রাখা একেবারেই উচিত নয়। কোন দেবতার মূর্তির কথা বলছি? আসুন শুনে নিই।
তাঁর প্রকাশ সর্বত্রই। জগতে প্রতিটা কোণেই তিনি বিরাজমান। তবু সর্বশক্তিমানকে কিছু নির্দষ্ট রূপেই কল্পনা করে হিন্দুশাস্ত্র। আর সেই নিমিত্তেই হিন্দু বাড়িতে অবশ্যই একটা ঠাকুরঘর থাকে। উপাস্য দেবতার মূর্তি কিংবা প্রতিকৃতি রেখে উপাসনা করেন ভক্তরা। কিন্তু সেক্ষত্রেও অবশ্যই মানতে হয় নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম। সব দেবতার ছবি কিংবা মূর্তি ঠাকুরঘরে রাখা উচিত নয়।
আরও শুনুন: বাড়ির শান্তি বজায় রাখতে কোনদিন কোন দেবতার পুজো করবেন?
প্রথমেই বলতে হয় দশমহাবিদ্যার কথা। দেবী মহামায়ার এই বিশেষ দশটি রূপ তন্ত্রের আধার। তাই গৃহস্ত বাড়িতে এই দেবী মূর্তি রাখা অনুচিত। বিশেষ করে দেবী বগলামুখি, ধুমাবতী ও মাতঙ্গী অত্যন্ত উগ্ররূপা। এঁদের পুজোয় এতটুকু ভুল হলে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। তাই এই দেবীর মূর্তি বা প্রতিকৃতি কোনওটাই ঘরে রাখা উচিত নয়। অন্যদিকে নবগ্রহের মূর্তিও ঘরে রাখা উচিত নয়। প্রতিকৃতি হিসেবে নবগ্রহ রাখা যেতে পারে। কিন্তু নবগ্রহের সব দেবতার মূর্তি ঘরে রাখ উচিত নয়। বিশেষত রাহু-কেতু, নবগ্রহের অন্যতম হলেও এঁদের উপাসনাইয় এতটুকু ত্রুটি হলে মারাত্মক বিপদ হতে পারে। এছাড়া শনিদেব, কালভৈরব ও নটরাজ মূর্তি ঘরে রাখতে নেই। অন্যদিকে যে কোনও মূর্তি রাখার ক্ষেত্রেই মানতে হয় বিশেষ কিছু নিয়ম। যেসব দেবতা যুগল রূপে পুজিত হন তাঁদের অবশ্যই সেইরূপের স্থাপন করা উচিত। রাম-সীতা, লক্ষ্মী-নারায়ণ কিংবা শিব-দুর্গা সবসময় একইসঙ্গে পুজিত হন। তাই এঁদের মূর্তি যুগল হিসেবেই প্রতিষ্ঠা করতে হয়। আবার মাথায় রাখতে হবে, কোনও দেবতার রুদ্ররূপী মূর্তিও গৃহস্থের পূজনীয় নয়। মূর্তি বা প্রতিকৃতি সর্বদা সৌম্য শান্ত ও সহাস্য বদনের হওয়া উচিত। আবার দেবী লক্ষ্মী, সরস্বতী কিংবা গণেশের দাঁড়ানো মূর্তি ঘরে না রাখাই ভালো। তাঁরা কোনও আসনে বসে আছেন এমন মূর্তি রাখলেই বিশেষ ফল মেলে।
আরও শুনুন: নিয়ম মানলে মেলে ফল, শাস্ত্রমতে কোন দিকে মুখ করে পুজো করা উচিত?
এছাড়া ঠাকুরের সিংহাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হয় নির্দিষ্ট দিকের কথা। সবসময় ঘরের ঈশানকোণে দেব-সিংহাসন প্রতিষ্ঠা করা উচিত। আর পুজো করতে হয় পূর্ব দিকে মুখ রেখে। এছাড়া সিংহাসনে কখনও ভাঙা মূর্তি রাখা উচিত নয়। এমনকি একই দেবতার দুটি মূর্তি রাখাও ঘোর অমঙ্গল। শাস্ত্রমতে এই সাধারণ কিছু নিয়ম মেনে ঠাকুরঘর সাজালেই ঘরে শান্তি বিরাজ করবে। সেইসঙ্গে রোজকার জীবন ভরে উঠবে সুখ-সমৃদ্ধিতে।