ফেসবুকে মেসেজ করেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। কাতর নিবেদন, কিছু টাকার প্রয়োজন তাঁর। এমনটা আদৌ হতে পারে? স্ক্যামের দুনিয়ায় সব সম্ভব! সাবধান না হলে বড় বিপদ হতেই পারে, ব্যাপারটা ঠিক কী? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
দেশের রাষ্ট্রপতি। তাঁর সঙ্গে দেখা করা মোটেও সহজ ব্যাপার নয়। আগে থেকে জানিয়ে, অনুমতি নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু স্বয়ং রাষ্ট্রপতি যদি নিজেই কথা বলতে আসেন? তাও আবার সোশাল মিডিয়ায়! অবাক হবেন? সম্প্রতি এমনটাই ঘটছে, একবার নয় একাধিকবার, অনেকের সঙ্গে!
আরও শুনুন:
শীতকাতুরে: গিজার যেন শীতের চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক | রোদ্দুর মিত্র
ব্যাপারটা ঠিক কী?
ঘটনার কেন্দ্রে জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম, ফেসবুক। যে কেউ এই মাধ্যমে নিজের অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। তা সে রাষ্ট্রপতি হন বা প্রধানমন্ত্রী। এমনই এক অ্যাকাউন্ট থেকে বিগত কয়েকদিন ধরে ফ্রেন্ড রিক্যুয়েস্ট পাচ্ছেন কেউ কেউ। প্রোফাইলে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর ছবি, সঙ্গে লেখা ‘প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া’। তার পাশে আবার একটা টিক চিহ্ন, যেন ওটা দেখে মনে করে নিতে হবে, এই প্রোফাইল ভেরিভায়েড। এমনিতে আসল নকলের ফারাক বোঝাতে অনেকেই প্রোফাইল ভেরিফায়েড করে রাখেন। তাতে নামের পাশে যোগ হয় নীল টিক চিহ্ন। এখানেও তেমন কিছুই বোঝাতে চাওয়া হয়েছিল। ফ্রেন্ড রিক্যুয়েস্ট অবধি ঠিক আছে, সমস্যা শুরু হবে তারপর। এক্সেপ্ট করলেই রাষ্ট্রপতির ছবি দেওয়া ওই প্রোফাইল থেকে মেসেজ আসবে। প্রথমে কুশল বিনিময়। কথা এগোলে ব্যক্তিগত নাম্বার আদানপ্রদান। এরপরই অজানা নাম্বার থেকে কোড আসবে মোবাইলে। ভুল করে সেই কোড মেসজে বলে দিলেই, সব শেষ! নিমেষে ফাঁকা হবে অ্যাকাউন্ট। এর জন্য কাকে দুষবেন? রাষ্ট্রপতির ওই প্রোফাইল ততক্ষণে পগাড় পার! হয় ব্লক করে দেওয়া হয়েছে নাহলে প্রোফাইল ডিলিট।
আলাদা করে বলার প্রয়োজন নেই, এ এক ধরনের জালিয়াতি। তবে এক্ষেত্রে নাম জড়ানো হয়েছে রাষ্ট্রপতির। তাতে অনেকেই বিভ্রান্ত হচ্ছেন। একটু ভাবলেই বোঝা যাবে, দেশের রাষ্ট্রপতি আর যাই করুন, সোশাল মিডিয়ায় এইভাবে মেসেজ পাঠাবেন না। সুতরাং এমন কিছু হলে এড়িয়ে যাওয়াই নিরাপদ। প্রয়োজনে পুলিশকে জানানো যেতে পারে। সম্প্রতি এমন অভিযোগ অনেকেই দায়ের করেছেন। কিন্তু স্রেফ রাষ্ট্রপতি নন, ছদ্মবেশে মেসেজ পাঠাতে পারেন আরও অনেকেই। তালিকায় প্রধানমন্ত্রী কিংবা মহেন্দ্র সিং ধোনির মতো খেলোয়াড়ও থাকতে পারেন। সব ক্ষেত্রেই সতর্ক থাকা প্রয়োজন। অন্যথায় বড় বিপদের থেকে কেউ রক্ষা করতে পারবে না। আসলে, বিগত কয়েকদিন ধরে ডিজিটাল গ্রেফতারি নামে অভিনব এক অপরাধের বাড়বাড়ন্ত চোখে পড়ছে। কোটি কোটি টাকা খোয়াচ্ছেন অনেকেই। প্রশাসনের তরফে সতর্ক থাকতে অনুরোধ করা হচ্ছে বারবার। সেইভাবে সোশাল মিডিয়ায় এই নতুন স্ক্যামের ফিকির। এক্ষেত্রে সব সীমা পেরিয়ে অপরাধীরা রাষ্ট্রপতিকে জুড়েছেন, তাই আলাদা ভাবে সতর্ক হওয়া আশু প্রয়োজন।