সময় ত্রয়োদশ শতাব্দীর শেষ ভাগ। স্থান মহারাষ্ট্র। সে সময়ের অন্যতম ভক্তশ্রেষ্ঠ নামদেব। বিঠ্ঠল ভগবান তাঁর কাছে এক মূর্তিমান জীবন্ত বিগ্রহ। তাঁর আকুল আকুতি, ভক্তি, প্রবল নিষ্ঠা আর আহ্বানে বিগ্রহ তাঁর নিজ হস্তে নিবেদিত দুগ্ধ পান করেছেন। শোনাচ্ছেন সতীনাথ মুখোপাধ্যায়।
সময় ত্রয়োদশ শতাব্দীর শেষ ভাগ। স্থান মহারাষ্ট্র। সে সময়ের অন্যতম ভক্তশ্রেষ্ঠ নামদেব। বিঠ্ঠল ভগবান তাঁর কাছে এক মূর্তিমান জীবন্ত বিগ্রহ। তাঁর আকুল আকুতি, ভক্তি, প্রবল নিষ্ঠা আর আহ্বানে বিগ্রহ তাঁর নিজ হস্তে নিবেদিত দুগ্ধ পান করেছেন। এই কাহিনী ফেরে সকলের মুখে মুখে। নামদেব ঈশ্বর দর্শন পেয়েছেন। তিনি ভক্তশ্রেষ্ঠ। তিনি চাইলে ঈশ্বরের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করতে পারেন, এই আবেশ আনন্দে তিনি থাকেন ভরপুর। তাঁর সঙ্গে কথা বলেন, শিশুর মতো আবদার করেন, অভিমানে রাঙা হয়ে ওঠেন, স্বয়ং বিঠ্ঠল বিষ্ণুভগবান।
আরও শুনুন- Spiritual: দুঃখ থাকে, তবে এ জীবনে তা থেকে মুক্তি মিলবে কীভাবে?
একদিন সৎসঙ্গ হচ্ছে গোরাকুমারের বাড়িতে। গোরাকুমার প্রবীণ সাধক, নামসিদ্ধ। পেশায় ছিলেন কুম্ভকার। ঘরের মধ্যে ছিল একটি থুপি। থুপি দিয়ে ঠুকে পরীক্ষা করা হয় মাটির পাত্রের শুষ্কতা। সেখানে উপস্থিত বালিকা এক, নাম মুক্তাবাই। সে বালিকা সরল কৌতূহলী। সে গোরাকুমারকে জিজ্ঞেস করে, ‘এটা দিয়ে কি করে?’ তিনি উত্তর দেন, ‘কোন পাত্রের অবস্থা কেমন, মানে কোনটা কাঁচা আর কোনটা পাকা এ দিয়ে সেই পরীক্ষা করে’।
মুক্তাবাই, অধ্যাত্মচিন্তায় মগ্ন সরল বালিকা। সে গোরাকুমারকে অনুযোগ করে, ‘আমাদের এই ঘটে ওই জিনিস দিয়ে একটু টোকা মেরে আপনি বলে দিন না কে কাঁচা আর কেই-বা পাকা!’ সেখানে উপস্থিত সোপানদেব, মুক্তিনাথ প্রমুখ আরও নামজাদা সব ভক্ত। সকলেই সম্মতি দিলেন।
আরও শুনুন- Spiritual: হিন্দু ধর্মে কি সত্যিই আছে ৩৩ কোটি দেবতা?
কিন্তু নামদেব উঠলেন চূড়ান্ত চটে। একি রসিকতা! থুপি তো মাটির জিনিস পরীক্ষার, তাই বলে এই দিয়ে সাধকের মাথায় ঠুকে তাঁদের কাঁচা পাকা নির্ণয় করা! একি নিরর্থক রসিকতার! তিনি তীব্র আপত্তি এবং বিরক্তি জানালেন। এদিকে গোরাকুমার ততক্ষণে সবার মাথায় থুপি দিয়ে ঠুকতে শুরু করেছেন। ঠুকছেন আর বলছেন, ‘এইটি পাকা। এইটি পাকা। এইটি বেশ পাকা।’ নামদেবের মাথায় থুপি ঠুকে বললেন, এই ঘটটি বেশ কাঁচা, পাকতে সময় লাগবে আরও অনেক। ঘরের মধ্যে উঠল চূড়ান্ত হাসির রোল। নামদেব চূড়ান্ত লজ্জিত, অপমানিত হলেন। তৎক্ষণাৎ সেই স্থান ত্যাগ করে তুরন্ত এলেন বিঠ্ঠল বালাজির মন্দিরে। শঙ্খ-চক্র-গদা-পদ্মধারী ভগবান বালাজির কাছে তীব্র অনুযোগ জানালেন।
বাকিটা শুনে নিন প্লে-বাটন ক্লিক করে।