যুগপুরুষ শ্রীরামকৃষ্ণের উদার অমৃতকথা আমাদের পৌঁছে দেয় জীবনের সার্থকতায়। ঈশ্বরে মন রেখেই সাংসারিক কর্তব্যপালনের যে অমোঘ পথ তিনি দেখিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন, তাই-ই আজও আমাদের পাথেয়। সেই কথাই উঠে এসেছে সাহিত্যিক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের ‘পরমপদকমলে’ গ্রন্থে। আসুন শুনে নিই সেই অমৃতপ্রসঙ্গ।
বিশেষ কৃতজ্ঞতা: উদ্বোধন কার্যালয়
নারীর সম্পর্কে কি সত্যিই সংকীর্ণ মনোভাব পোষণ করতেন শ্রীরামকৃষ্ণ? নারী সবসময়েই পুরুষের সাধনায় ব্যাঘাত ঘটায়, এমনটাই কি ছিল তাঁর মত? তা কিন্তু নয়। আপাতভাবে যা দেখা যায়, তার বাইরেও রয়ে যায় তাঁর দর্শন। যা সংসারীকে সংসার করতেই নির্দেশ দেয়, বৈরাগ্যের অজুহাতে দায়িত্ব ত্যাগ করার অনুমতি দেয় না।
ঠাকুরের সেই দর্শন খুব প্রাঞ্জল ভাবে সকলের সামনে তুলে ধরেছেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বিখ্যাত বই ‘পরমপদকমলে’-তে ‘পুরুষ সাবধান’ শীর্ষক অধ্যায়ে তিনি লিখেছেন,
আরও শুনুন: পরমপদকমলে: পূজার দেখনদারি নয়, মনের ঘরে প্রার্থনায় জোর দিয়েছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ
পুরুষদের বিশ্বাস করতেন না বলেই ঠাকুর নারীর সঙ্গে সম্পর্কে অতটা কঠোর হতে বলেছিলেন। পুরুষই ভোগবাসনায় নারীকে টেনে নামিয়ে আনে জগন্মাতার আসন থেকে ভোগের সংসারে। দ্বিতীয় দর্শনের দিনে শ্রীম-র সঙ্গে তাঁর কথোপকথন অনুধাবন করলেই বোঝা যাবে ঠাকুরের মনোভাব।
ঠাকুর : “দেখ, তোমার লক্ষণ ভাল ছিল। আমি কপাল, চোখ— এসব দেখলে বুঝতে পারি। আচ্ছা তোমার পরিবার কেমন? বিদ্যাশক্তি না অবিদ্যাশক্তি ?”
মাস্টার : “আজ্ঞে ভাল, কিন্তু অজ্ঞান।”
ঠাকুর অমনি বিরক্ত হয়ে বললেন : “আর তুমি জ্ঞানী ?”
মাথা হেঁট করে মাস্টারমশাই ভাবতে লাগলেন, জ্ঞান কাকে বলে আর অজ্ঞান কাকে বলে আমার জানা হয়নি। ভাবনা যখন চলছে তখন আবার পড়ল ঠাকুরের প্রশ্নের চাবুক – “তুমি কি জ্ঞানী ? মাস্টারমশাইয়ের অহঙ্কার কুঁকড়ে গেল। কে জ্ঞানী ?