তিনি সিদ্ধিদাতা। বিঘ্ননাশ করেন তিনি। সুখ, সমৃদ্ধির কামনায় তাঁর পুজো করেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু কখনও শুনেছেন প্রেমের জন্য কেউ গণেশ পুজো করছে? দেশে রয়েছে এমনও এক মন্দির যেখানে পুজো দিলে সফল হয় প্রেম। কোথায় রয়েছে এই মন্দির? আসুন শুনে নিই।
অমুক মন্দিরে পুজো দিলে ভাগ্যের চাকা ঘুরবে। তমুক মন্দিরে পুজো দিলেই মিলবে চাকরি। এমনকি মন্দিরে পুজো দিলেই বিয়ে হবে, এমনটাও প্রচলিত রয়েছে। তবে সেসব সাধারণত কোনও শিব মন্দির বা বিষ্ণু মন্দির। গণেশ মন্দিরে পুজো দিলেও বিয়ে হবে, এমনটা কখনও শুনেছেন? আর যাই হোক তাঁকে প্রেমের দেবতা হিসেবে গণেশকে পরিচয় দেয় না কোনও পুরাণই।
আরও শুনুন: একটা ইঁদুর ধরলেই ৪১ হাজার টাকা! দেশের কোন স্টেশনে মিলছে এমন সুযোগ?
ব্যতিক্রম যোধপুরের এই মন্দির। এখানে আরাধ্য ‘ইশকিয়া গণেশ’। একেবারে যোগ্য নাম। কারণ এই মন্দিরে পুজো দিলেই জোড়া লাগে যে কারও প্রেম। এমনকি প্রেমের পরিণতিও মেলে এই মন্দিরে পুজো দিলেই। প্রতি বুধবার মন্দিরে ভিড় জমান অবিবাহিতরা। স্থানীয় বিশ্বাস এইদিনে ইশকিয়া গণেশের পুজো দিলে বিশেষ ফল মেলে। তাই প্রতি বুধবার বিগ্রহের শৃঙ্গারের আয়োজন করা হয়। রাজকীয় ভাবে সেজে ওঠেন প্রেমের দেবতা। যদিও মন্দিরটা একেবারেই সাদামাটা। বেনারস কিংবা ওই ধরনের মন্দির নগরীর অলিতে গলিতে যেমন মন্দির দেখা যায়, ইশকিয়া গএনশ মন্দির খানিকটা তেমনই। মূর্তিতেও বিশেষ কোনও চমক নেই। পাথরের অবয়ব মাত্র। উচ্চতাও তেমন বিরাট মাপের নয়। কিন্তু এই মন্দির ঘিরে প্রচলিত রয়েছে একাধিক কাহিনী। শোনা যায়, এখানে পুজো দিয়েই বিয়ে হয়েছে বহু ভক্তের। এমনটাও প্রচলিত রয়েছে, এই মন্দিরে একবার পুজো দিলে কোনওদিন ডিভোর্সও হয় না কারও। তাই বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মন্দিরে এসে ভিড় জমান ভক্তরা। বিশেষত যাদের দীর্ঘদিনের প্রেম কিছুতেই মেনে নিচ্ছে না পরিবার, তাঁদের ভরসার ঠিকানা ইশকিয়া গণেশ। তবে সেক্ষেত্রে মানতে হয় এক বিশেষ নিয়মও। স্থানীয় বিশ্বাস, একদিন নয়, টানা ১৬ সপ্তাহ এই মন্দিরে পুজো দিতে হবে। তবে সিদ্ধ হবে অভীষ্ট।
আরও শুনুন: লাগে না বেতন, প্লাস্টিক জমা দিয়েই স্কুলে পড়াশোনা পড়ুয়াদের
কিন্তু মজার বিষয় হল, স্রেফ হিন্দু নয় যে কোনও ধর্মের ভক্তকেই কাছে টেনে নেন এই গণেশ। আর এমনটা দাবি করেছেন এক মুসলিম ভক্তই। আজমীরের মইন শেখ দীর্ঘদিন ধরে ভালোবাসেন এক তরুণীকে। কিন্তু তরুণীর পরিবার তাঁদের বিয়ে দিতে রাজি হচ্ছিল না কিছুতেই। আসলে ওই তরুণী একজন হিন্দু, আর মইন মুসলিম। তবে সেই সমস্যারও সমাধানও করে দেন ইশকিয়া গণেশ। নিজের ধর্ম বিশ্বাস ভুলে ইশকিয়া গণেশের স্মরণ নিয়েছিলেন মইন। স্থানীয়দের দাবি মেনে, তিনিও টানা ১৬ সপ্তাহ এই মন্দিরে পুজো দেন। আর সত্যিই তাতে ম্যাজিকের মতো আজ হয়। কোনও এক অজানা কারণে তাঁর সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি হয় তরুণীর পরিবার। তারপর থেকে বেশ কয়েকবছর হয়ে গেল, ওই মহিলার সঙ্গেই সুখে শান্তিতে সংসার করছেন মইন। একা মইন নন, এই দাবি আরও অনেকেরই। শুধু তাই নয়, অবিবাহিতরাও এই মন্দিরে জীবনসঙ্গী খুঁজতে আসেন। কেউই নিরাশ হয়ে ফেরেন না, এমনটাই দাবি ওই এলাকার মানুষজনের। তাই কেউ ১০ বছর কেউ বা ২০ বছর সুখের দাম্পত্য কাটিয়ে পুজো দিতে আসেন এই মন্দিরে। কারণ তাঁদের সকলেরই বিয়ের পিছনে হাত রয়েছে ইশকিয়া গণেশের।