১
উষ্মাফুলে সুগন্ধ নেই
তাও কী অঝোর উদ্ধত
তার পরাগধানী
তোমার চোখের তাকানো ওই
যেমন কাচের জলের গেলাস অল্প জানি
ঠিক সেরকম
দুলছে বাতাস নিজেই, তাকে
কে থামাবে
এবার ছুটির কলহমন ফেরত নিতে
এস বরং
দূর প্রদেশে
আর কখনও গল্পছলে বন্ধুদেরও বোলো তোমার,
আমার সঙ্গে আর কিছু না
ঝগড়া ছিল।
২
যে স্টেশনে ট্রেন থামে না,
দুপুর থামে।
আড়াল কোনও বাজনা যেন দূরের ঝুমুর
দোষ কারও নয়
এই অপরাধ আলোয় মাখা মধ্যযামে দেখাতে হয়
সনির্বন্ধ গাছপালা আর স্মৃতির খেলা
হেই বাজিকর!
মরচে মানুষ
জং ধরা মন
উপমাহীন মহাদেশের রূপকথা সব
তোমায় দেখাই।
বোসো। যেথায় কেউ আসে না।
খবর বলতে তেমন কী আর
রোদ জমিয়ে লাভ কিছু নেই।
পলাতকের সঙ্গে ছায়া
পালিয়ে গেছে।
৩
এক বহুতল অন্ধতাকে
ওড়াই যেমন কাগজ
তাকে ঠিকানা দাও
কাচের চুড়ি অচল, যেমন ডাকটিকিটের
বাতিল মাসুল
হাত পেতে কে চাইবে নিতে
দ্বন্দ্বসমাস
এক ভিখারির বেসুরো গান
সারাই, যেন নীল চিরুনি
ঠিকানা দাও
অথবা এই দুপুরবেলা
একটি কেবল পুরনো দিন
ঘুরতে ফিরতে জানলা এসে মুখ বাড়ালে বলো,
তাকে কেন কাঁদাও
৪
পরিশ্রমের মতোই তো এই
ভালবাসায় মিথ্যে কথা
যেমন কোনও দূর সফরে
হঠাৎ মিলায় প্রতিশ্রুতির পান্থশালা
তোমার ঘোড়া ওই গাছে মন বাঁধতে থাকা
আমার লেঠেল পাইকরা সব
কাছে দূরে লণ্ঠনে আগুনের খোঁজে উদ্বিগ্ন
এমন দিনে মিথ্যে যেন
গাছের গায়ে হাসি ছেটায়
এস এবার বেরই
আছে অনেক বাড়ি তোমার আমার
দেখা না হোক
সময় পেলে
কষ্ট হবে।
৫
কঠিন ছিল মুখোশ, তুমি বন্ধু ব’লে
অমন আগুন
রাতের দিকে জ্বাললে যাকে
কালো দেখায়
রাত পেরলে
অবতরণ বাতাসে নেয়
কাদের বাড়ি মিলিয়ে যায় উপকথায়
তোমার হাত পুড়তে থাকে ঝিলমিলিয়ে শতাব্দীভর
অল্প ছ্যাঁকায়
এখানে কার বাগান, দ্যাখো, ঝামরে আছে
মোহগাছের ডালে শাখায়
মুখোশ আমি ঝুলিয়ে গেলাম
দূরের দেশে
বন্ধু, তুমি দূরে থাকায়
একজীবনে দেখা পেলাম
কাছে এসে।
লেখা: শ্রীজাত
পাঠ: শ্রীজাত
আবহ: শঙ্খ বিশ্বাস