এ যেন জলে কুমির ডাঙায় বাঘ। একদিকে স্ত্রীর হাতে আছে ‘তিন তালাক’ আইন। অন্যদিকে বান্ধবীর অস্ত্র লাভ জিহাদ। বেজায় ফাঁপরে পড়ে এখন হিন্দু হতে চান এক মুসলিম যুবক। অবাক হচ্ছেন! আসুন তাহলে যুবকের কীর্তিখানা শুনেই নেওয়া যাক।
কথায় বলে, দু-নৌকায় পা দিয়ে চললে বিপদ অবধারিত। ঠিক সেই বিপদেই পড়েছেন উত্তরপ্রদেশের উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদের আমির আলি। দাম্পত্য আর পরকীয়া দুই-ই চালিয়ে গিয়েছেন একই সঙ্গে। এখন দুই নারীর কাছেই ধরা পড়ে গিয়ে বেজায় বিপাকে পড়েছেন ওই যুবক। শেষমেশ ইসলাম ছেড়ে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করতে আগ্রহী তিনি।
আরও শুনুন: অভিন্ন বিধিতে আপত্তি মুসলিম সংগঠনের, পালটা জবাব দিচ্ছেন মুসলিম মহিলারাই
ঘটনার সূত্রপাত একটি আবেদনকে কেন্দ্র করে। জেলাশাসকের কাছে জমা দেওয়া আবেদনে ওই যুবক জানিয়েছিলেন যে, তিনি ধর্ম বদলে ফেলতে চান। তবে তিনি নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। কেননা তাঁর সম্প্রদায় এ জিনিস ভাল ভাবে মেনে নেবে না, ফলে তাঁর উপর আঘাত নেমে আসতে পারে। ঠিক এইখান থেকেই শুরু হল অন্য গল্প। এবার অতিরিক্ত জেলশাসকের কাছে জমা পড়ল আর-একখানা আবেদন। সেটি করেছেন ওই যুবকের স্ত্রী। তাঁর দাবি, আইনের চোখে ধুলো দিতেই হিন্দু হতে চাইছেন তাঁর স্বামী। নইলে তাঁর আর কোনও উদ্দেশ্য নেই।
আরও শুনুন: মানুষের কামড়ে ক্ষতবিক্ষত পুলিশের কুকুর, সারমেয়কেই ভরতি করতে হল হাসপাতালে
এখন হিন্দু হওয়ার মধ্যে আইনের চোখে ধুলো দেওয়ার ব্যাপারটা এল কোথা থেকে? এই প্রশ্নের জবাবেই উঠে আসে যুবকের পরকীয়া সম্পর্কের কথা। তাঁর স্ত্রীর দাবি, বিয়ের আগে থেকেই একজন হিন্দু মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক আছে ওই যুবকের। এর মধ্যেই তাঁদের বিয়ে হয়েছে। তাঁদের মাস চারেকের একটি সন্তানও আছে। যখন যুবকের আগের বান্ধবীর কথা জানতে পারেন তাঁর স্ত্রী, তখন থেকেই সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি হয় তাঁদের। এদিকে, এখন যদি যুবক তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ করতে চান, তবে তিন তালাক বিরোধী আইনে যারপরনাই নাস্তানাবুদ হবেন। ওদিকে যুবকের বান্ধবী নাকি তাঁকে ইতিমধ্যেই লাভ জিহাদের ভয় দেখিয়ে রেখেছেন। তাই বিপদ বুঝেই বর্তমান আইনের ফাঁক গলতে এখন হিন্দু হয়ে যেতে চাইছেন ওই যুবক। তাতে একযোগে তিন তালাক আর লাভ জিহাদ- দুই অভিযোগ থেকেই বাঁচবেন তিনি।
আরও শুনুন: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিদেশ সফরে নিয়মিত সঙ্গী, জানেন কে এই মহিলা?
ঘটনা অবশ্য এখানেই থেমে নেই। যুবকের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর তো আপাতত মুখ দেখাদেখি নেই। দুজনে আলাদাই থাকছেন তাঁরা। যোগাযোগ নেই ফোনেও। তবে, এই ঘটনার শেষ দেখেই ছাড়তে চান তাঁর স্ত্রী। আর তাই সে-রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী খোদ যোগী আদিত্যনাথকে চিঠি দিয়েছেন তিনি। সেখানে তিনি নিজেকে যোগীর কন্যা হিসাবেই তুলে ধরেছেন। আর তাঁর দাবি, এই পরিস্থিতি থেকে মেয়েকে বাঁচানোর দায়িত্ব স্বয়ং যোগীরই। ফলে হিন্দু হলেই যে যুবকের সাত খুন মাফ হয়ে যাবে, এমনটা কিন্তু মোটেও বলা যাচ্ছে না। তবে, দাম্পত্য আর পরকীয়া একযোগে চালিয়ে যাওয়ার পরিণতি যে কী হতে পারে, এ ঘটনা যেন তা চোখে আঙুল দিয়েই দেখিয়ে দিচ্ছে।